হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে সর্বশেষ কয়েক ম্যাচে ছিলেন অনুপস্থিত। কাল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের একাদশে ফিরে প্রথম ওভারেই এক রান নেওয়ার সময় আবার চোট লাগে কুচকিতে। কিন্তু এভিন লুইসের এসবে থোড়াই কেয়ার। কাল ৪৯ বলে ১০৯ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলার পথে ইনজুরিকে যেমন হারিয়েছেন; তেমনি খুলনা টাইটানসকেও।
৮০ রানের সে জয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের সেরা চারে থাকার সম্ভাবনা এখন উজ্জ্বল। ৯ খেলায় ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ওপরে চিটাগং ভাইকিংসের সঙ্গী তারা।
বিপিএল সেঞ্চুরির তালিকায় সবার ওপরে প্রত্যাশিতভাবেই ক্রিস গেইল। পাঁচটি সেঞ্চুরি এই ক্যারিবিয়ান দানোর। অন্য কারো নেই একাধিক সেঞ্চুরি। লুইসেরও শতরানের ইনিংস আছে তবে এবারের বিপিএলে ব্যাট হাসছিল না মোটেই। কুমিল্লার হয়ে খেলা চার ম্যাচে করেন মোটে ৭৯ রান। এরপর তো পড়ে যান ইনজুরিতেই। কাল ফেরার ম্যাচেই যে অমন বিধ্বংসী হয়ে উঠবেন লুইস, কে ভেবেছিলেন!
প্রথম ওভারে ইনজুরিতে পড়ায় শুরুটা একটু রয়েসয়ে করেন লুইস। তৃতীয় ওভারে পেসার শরিফুল ইসলামকে পর পর দুই বলে চার ও ছক্কা মেরে করেন গা গরম। অন্য প্রান্তে তামিম ইকবালও স্বচ্ছন্দ। সাত ওভারে বিনা উইকেটে ৫৭ রান তুলে ফেলে কুমিল্লা। কিন্তু মাহমুদ উল্লাহর করা পরের ওভারে তামিম (২৫) ও এনামুল হক (০) আউট হলে ম্যাচে ফেরার সুযোগ তৈরি হয় খুলনার। ১১ ওভারে দুই উইকেটে ৮৩ রান করা কুমিল্লার তখন ব্যাটিং উইকেটে দ্রুত রান তোলার তাড়া।
এর পরই উন্মত্ত হয়ে ওঠে লুইসের ব্যাট। ৩১ বলে ফিফটি পূর্ণ করার পর আরো বেশি করে। ফিফটি করার পর পর মিডিয়াম পেসার মোহাম্মদ সাদ্দামের ওভারে চার ছক্কায় তোলেন ২৮ রান। অন্য প্রান্তে ইমরুল কায়েসও সঙ্গ দেন দারুণ। ২১ বলে ৩৯ করে অধিনায়ক আউট হওয়ার পরের গল্পটি শুধুই লুইসের। প্রথম ৩১ বলে ফিফটি করা এই ক্যারিবিয়ানের পরের ফিফটির জন্য লাগে ১৬ বল।
ইনিংসের একেবারে শেষ ওভারে ওই সাদ্দামকে ছক্কা মেরেই পৌঁছান সেঞ্চুরিতে। চার ওভারে ৫৯ রান দেন এই পেসার, বিপিএলে যা সবচেয়ে খরুচে। আর ৪৯ বলে ১০৯ রান করে অপরাজিত থাকেন লুইস। ম্যাচশেষে যে ইনিংসের মুগ্ধতা কুমিল্লা অধিনায়ক ইমরুলের কণ্ঠে, ‘দারুণ ইনিংস খেলেছে লুইস। যা আমাদের দলের জন্য দরকার ছিল; ওর আত্মবিশ্বাসের জন্যও। অনেক দিন ধরেই ও নিজের মতো ব্যাটিং করতে পারছিল না। ও ফর্মে আসায় আমাদের সামনের ম্যাচগুলোর জন্য ভালো হয়েছে।’
৮০ রানের সে জয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের সেরা চারে থাকার সম্ভাবনা এখন উজ্জ্বল। ৯ খেলায় ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ওপরে চিটাগং ভাইকিংসের সঙ্গী তারা।
প্রথম ১১ ওভারে ৮৩ রান করা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস শেষ ৯ ওভারে তোলে ১৫৪ রান,তাদের পাঁচ উইকেটে ২৩৭ রান বিপিএল ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। কিন্তু কী আশ্চর্য, প্রত্যেক বোলারকে তুলাধোনা করলেও খুলনার অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহ একটি ওভারও করাননি স্পেশালিস্ট বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে দিয়ে। ম্যাচশেষে খুলনার প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে আসা কার্লোস ব্রাথওয়েট অবশ্য এ নিয়ে দলের ব্যাখ্যা দিতে নারাজ, ‘আমি এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব না। কারণ আমি দলের অধিনায়ক বা কোচ নই।’
১০ ম্যাচে মাত্র দুই জয়ে বিপিএল থেকে ছিটকে যাওয়া খুলনার জন্য ২৩৭ টপকে জেতাটা অসম্ভবই। ৫৫ রানের ওপেনিং জুটির পরও। এরপর রানের চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি। শেষ পাঁচ উইকেট ১৩ রানে হারিয়ে অল আউট হয় ১৫৭ রানে। আলিস আল ইসলামের পর এবারের বিপিএলের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করেন পাকিস্তানি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ।