বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ৫১১ কিলোমিটার এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্পর্শকাতর ওই এলাকাজুড়ে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশের (বিজিবি) ‘কমান্ড’ স্তরের নজরদারি নিশ্চিত করতে ‘সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শক্তিশালী করা হয়েছেসীমান্ত রক্ষা বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থাও। একই সঙ্গে এই বাহিনীর স্বতন্ত্র এয়ার উইংয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে মাদকের আবাধ প্রবেশ ও চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের দেওয়া তথ্য ও জাতীয় সংসদে পাঠানো মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ ৫১১ কিলোমিটার সীমান্তকে আগামী তিন বছরের মধ্যে সার্ভেইল্যান্স সিস্টেমের আওতায় আনা সম্ভব হবে। ড্রোন, রাডার, থার্মাল ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরাসহ বিভিন্ন সেন্সর সমৃদ্ধ এই সিস্টেমের বদৌলতে বিজিবির বিভিন্ন ‘কমান্ড’ স্তর থেকে ওই সব এলাকায় ২৪ ঘণ্টা নজরদারি রাখা সম্ভব হবে।
যশোরের পুটখালীর সাত কিলোমিটার স্পর্শকাতর এলাকায় ইতিমধ্যে এই সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। টেকনাফ সীমান্তের ৯ কিলোমিটার এলাকা এর আওতায় আনার কাজ চলছে। এ ছাড়া টেকনাফের আরো ১৮ কিলোমিটার এবং নওগাঁর হাপানিয়ার ১৪ কিলোমিটারে সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম বসানোর কাজও শিগগিরই শুরু হবে। বর্তমানে সদর দপ্তরসহ বিজিবির পাঁচটি রিজিওনাল সদর দপ্তর, ১৪টি সেক্টর সদর দপ্তর, বর্ডার গার্ড ট্রেইনিং সেন্টার অ্যান্ড স্কুল, পাঁচটি বর্ডার গার্ড হাসপাতাল এবং আটটি ব্যাটালিয়ন সদরসহ মোট ৩৩টি ইউনিটে ভিডিও কনফারেন্স সুবিধা চালু রয়েছে। শিগগিরই অবশিষ্ট ইউনিটগুলোও এ সুবিধা পাবে। এ ছাড়া বিজিবির সব আইসিপি ও ল্যান্ডপোর্টকে সিসিটিভি নেটওয়ার্কের আওতায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বিজিবির গোয়েন্দা সংস্থাকে শক্তিশালী করে বর্ডার সিকিউরিটি ব্যুরো স্থাপন করা হয়েছে। চারটি সেক্টর ও চারটি রিজিওনাল ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো স্থাপন করা হয়েছে। নতুন অনুমোদিত ১৫টি ব্যাটালিয়ন স্থাপনের মাধ্যমে বিজিবি পুনর্গঠনের প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিষয়টি বিবেচনা করে বিজিবির বিদ্যমান জনবল কাঠামো দিয়ে কক্সবাজারে একটি অ্যাডহক রিজিয়ন সদর দপ্তর স্থাপন করা হয়েছে। সময়োপযোগী ও আধুনিক শক্তিশালী বাহিনীতে রূপান্তরে অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি স্বতন্ত্র এয়ার উইংয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকার, যা তৈরির কাজ পূর্ণগতিতে এগিয়ে চলছে। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ওই এয়ার উইংয়ের হেলি বেস নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।