বরিশালের উজিরপুরের হারতার নাথারকান্দিতে সমাজপতিদের মিথ্যা অপবাদ ও পরিবারকে হুমকী দেয়ায় ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোরীর আত্মহত্যা, ধামাচাপা দিতে পরিবারের প্রতি চাপ প্রয়োগ, ময়না তদন্ত ছাড়া লাশ দাফন, সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি। সূত্র জানায় উপজেলার হারতা ইউনিয়নের নাথারকান্দি গ্রামের মৃত নুরুল হক হাওলাদারের তিন কন্যা ও এক ছেলের মধ্যে সবার ছোট মেয়ে নাথারকান্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া কন্যা তানজিলা একই এলাকার শাহালমের পুত্র সাহাবুদ্দিনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ জানুয়ারী প্রেমিক শাহাবুদ্দিনের সাথে দেখা করতে গেলে এলাকার প্রভাবশালী শহিদ মৃধা,মাসুদ খান, মেহেদী, মিরাজ, সুমন, সাইদুল সহ বেশ কয়েকজন প্রেমিক যুগলকে আটকে শারিরীক নির্যাতন চালায় ও মুক্তিপন আদায় করে । তানজিলাকে কুচরিত্রা আখ্যা দিয়ে তার মায়ের কাছে পাঠিয়ে দেয়। বিষয়টি এলাকায় ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে প্রচারণা চালায় নির্যাতনকারীরা। এতে তানজিলা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে ও ঘটনার একদিন পড়ে ২৫ জানুয়ারী সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিজ বাড়ীর আঙিনায় আম গাছের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। কিশোরীর আত্মহত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধীক এলাকাবাসী জানিয়েছে নির্যাতনকারীরা এলাকার প্রভাবশালি হাওয়ায় তারা ধরাকে সরাজ্ঞান না করে বিভিন্ন রকমের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রেমিক যুগলকে নির্যাতনের সময় অনেকেই প্রত্যক্ষ করলেও প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি, ঘটনার সময় সহিদ মৃধা সহ একাধীক লোক উপস্থিত ছিল এবং তানজিলার মায়ের কাছে ফোন করে অশালীন মন্তব্য করে শাসায় তারা। তানজিলার মৃত্যুর পরে বিষয়টি নিয়ে বারাবারি না করতে পরিবারকে বিভিন্ন রকমের চাপ প্রয়োগ করতে থাকে নির্যাতন কারিরা।
এ বিষয়ে তানজিলার মা কান্না জড়িত কন্ঠে জানান পিতৃ হারা কন্যাকে বহু কষ্টে মানুষ করেছি, এভাবে মৃত্যু কামনা করিনি। লাশ ময়না তদন্ত ছাড়া দাফনের বিষয়ে জানতে চাইলে বিভিন্ন চাপের কথা স্বীকার করে বলেন যে যাবার সে চলে গেছে কিন্তু আমাদের এলাকায় থাকতে হলে তাদের কথামত চলতে হবে।
এ বিষয়ে লাশের সুরাতাহালকারী কর্মকর্তা এস,আই জাফর জানিয়েছেন আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ ময়না তদন্তের জন্য নিতে চাইলে পরিবার অপারগতা প্রকাশ করায় ও নিজ দায়িত্বে দাফন করবে বলে মুসলেকা দেয়। পরিবার যদি কোন অভিযোগ না করে তাহলে আমাদের কী বা করার আছে। এলাকার সাধারন মানুষ বিষয়টি সহজভাবে না দেখে অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান।