“ভাঙ্গন” (পর্ব – ৪)
খালার কতা মতন হাতের আঙ্গুলে চুল পেচাইয়া আঙ্গুল মোহের মইদ্দে ভইরা দিছি । অমনি অক অক কইরা বইমি করার চেষ্ট করল বেগুমি । তহন হেয় আমার বুকের লগে বউন্না অবস্থায় আছিল । বইমির চেষ্টর সুম ম্যালা কষ্ট অইছে, মনে অইছিল আমারে লইয়া খারাইয়া যাইবো । হেই খিঁচনির চোডে পোলাডা বাইর অইয়া গেছে সত্য তয় শক্ত গোস্তের উপরে পাকনা ফোঁড়া জোরসে চাপ দিলে যেইরহম পট্টত কইরা শব্দ অইয়া ছিট্টা দূরে গিয়া পড়ে ঠিক সেই মতন মাতারির পেডততোন পোলাডা ছিট্টা যাইয়া সামনের দিগে পড়ল ! বেগুমি তহন মা গোরে কইরা একটা চিক্কইর দিয়া কাইত অইয়া পড়ল ।
যদিও পোলা বাইর হওনের আগেই পেডত মইরা আছিল । এহন দেহি মাতারিও যায় যায় অবস্তা ! রকতের যোয়ার দেইক্কা আমি চিক্কইর দিয়া কইলাম – ওখালা, অহন কি করবেন ? খালায় দেহি অস্তির অইয়া পড়ল । খালি কয় – হায় হায় ! হায় হায় এইডা কি অইল ? আর এই দিগে দেহি বেগুমি শরীলডারে কয়ডা মোচর দিয়া সোজা অইয়া রইল । আস্তে আস্তে রক্ত পরন কইমা গেছে । লড়ন-চরণ নাই দেইখ্যা নাকের কাছে হাত নিয়া দেহি দম লয় না, বুহের কাছে হাত নিয়া দেহি বুকও লড়ে না । খালারে কইলাম মতন খালায়ও দেখলো । হেয় মাতাত হাত দিয়া বইয়া পড়ল ।
আমি আস্তে কইরা পোলাডারে ত্যানাত প্যাচাইয়া থুইলাম । বেগুমির কাপড় ঠিক কইরা রাখলাম । মজিদ মিয়া বিলের তন ফিরছে যহন তহন সন্দা অয় অয় । গ্রামে মাইক আলা তেমন মসজিদ না থাহনে বুজা যায়না নামাজের ওক্ত অইছে কিনা । রোজার দিনে তো আন্দাজে কোন্দাজে সরগাই খাইছি আর সন্দায় রোজা খুলছি । ম্যাগ-বিষ্টির দিনে তো মহা ঝামেলা আছিল । মাইনসে সময় মতন কিছুই করতে পারে নাই । মজিদ মিয়ারে দেইখা কিছুই মনে অইল না । আসলে হেসুমকা কে কারে জিগায় ! আমিও জিগাই নাই । শ্যাষে হেই আমারে জিগাইল । হেইদিন হেরে আমি কি কইছিলাম আইজগা হ্যা মোনে নাই । তয় মজিদ মিয়া আমার পোলাডা কোলে লইয়া গলাপানি গ্রামের মইদ্দে দিয়া জলনাই গ্রামে চইলা আইছিল ।
জলনাই গ্রামের মইদ্দে যহন আইছি তহন গেদাডার গলা ওডন বাজাইছে । বেহাল তোন তো পেডোত কিছু পড়ে নাই হের পরেইদা অক আইল কইত্তন হেইডা আমি বুইজা উটতে পারি নাই । রাইত থেইকা যে এতো দৌড়-ঝাপ কইরা এই পোরযন্ত আছি এইয়ার মইদ্দে কিছুই তো নিজের পেডতও পড়ে নাই । এহন দুহর অইছে । আমরা আক্কাস মাদবরের বাড়িত আইয়া খারাই ছিলাম, মাদবর সাব গেদার বাহেরে চিনত, খালি চিনত না হেরে হেয় পেরাই বোলাই আন্ত কাজ কম্ম করানের লইগ্যা । (চলবে…)