কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ায় জবুথবু হয়ে পড়েছে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। গতকাল শনিবার বরিশালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। দিনে ও রাতে খড়খুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছে অনেকেই। শীতের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন ছিন্নমূল ও দিনমজুররা।
বরিশাল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, বরিশালের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার থেকে আজ (শনিবার) কিছুটা তাপমাত্রা বেড়েছে। আগামী দু’একদিন তাপমাত্রা এমন থাকতে পারে।
এদিকে শীতের তীব্রতায় বরিশালসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার মানুষের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
কাজের তাগিদে ঘর থেকে যারা বের হন, তাদের এমন শীতের কবলে পড়তে হচ্ছে। আর নগরীর ভাসমান মানুষের দুর্ভোগ তো আরও কয়েকগুণ বেশি। একই সঙ্গে বেড়েছে শীতজনিত রোগও।
আলাপকালে একাধিক ভ্যান চালক জানান, শীতের তীব্রতায় ভ্যান চালানো যেমন কষ্টকর হয়ে উঠেছে, তেমনি সাধারণ যাত্রীরাও শীতের কারণে ভ্যানে উঠতে চান না। গত শুক্রবার থেকেই সূর্য উঠে নাই। তীব্র শীতে দুর্ভোগ বেড়েছে। কমেছে আয়-রোজগারও।
নগরীর লঞ্চঘাট এলাকার ভ্যানচালক শফিক হাওলাদার জানান, দুইদিন ধরে প্রচÐ শীত পড়েছে। ঠিকমতো কাজকর্ম করা যাচ্ছে না। এরকম কয়েকদিন চলতে থাকলে আয়-রোজগারও কমে যাবে।
বিভিন্ন উপজেলার একাধিক বাসিন্দা জানান, ফসলের ক্ষেতে কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে। অনেকে শীতবস্ত্রের অভাবেও রয়েছে।
নগরীর ডিসি ঘাট পাইকারী কাঁচা বাজার এলাকার চায়ের দোকানী সোলায়মান জানান, দু’দিন ধরে শীত বেড়েছে। বিকেলে শীত আরও বাড়ে। তাই বাজারে লোকজন কম আসায় বেচাকেনাও কম!
রিকশাচালক নাসির আকন বলেন, এমনিতে শীতে কাবু হয়ে আছি। তার পর রাস্তায় যাত্রী তেমন নেই। কোন আয় নেই। মালিককে ভাড়া দিয়ে কিভাবে বাজার করবেন সেই চিন্তা রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
অপরদিকে ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষরা আগুন জ্বালিয়ে শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন অনেকে। রাজন হোসেন নামে একজন বলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে কাগজ কুড়িয়ে এনে আগুন জ্বালিয়েছি। খাইতেই কষ্ট হয়, শীতের কাপুড় কেনার টাকা পামু কই।
এদিকে শেবাচিম ও সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশুরা ঠাÐাজনিত রোগে আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। প্রতিদিনই শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে ভিড় করছেন স্বজনরা।