এপ্রিল ২০, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
আন্তর্জাতিক প্রচ্ছদ

মেয়ে ইভানকাকে ট্রাম্পের ‘স্ত্রী’ মনে করেন ঘনিষ্টজনেরা!

একটি বই প্রকাশ নিয়ে তুলকালাম চলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চাচ্ছেন যে কোনো উপায়ে বইটির প্রকাশনা বন্ধ করতে। অন্যদিকে প্রকাশকও নাছোড়বান্দা। তিনি প্রকাশ করবেন আলোচিত বইটি।

হোয়াইট হাউজে দীর্ঘদিনের যাতায়াতের অভিজ্ঞতা থেকে প্রথিতযশা সাংবাদিক মিশেল ওলফ এর লেখা এ বই; যাতে স্থান পেয়েছে ট্রাম্প ও হোয়াইট হাউজে তার আশেপাশের দুই শতাধিক ব্যক্তির সাক্ষাৎকার ভিত্তিক নানা তথ্য। বইটির নাম ‘Fire and Fury: Inside the Trump White House।

কী আছে বইটিতে? প্রকাশের আগে এ চুম্বক কিছু তথ্য তুলে ধরেছে মার্কিন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। পাঠকদের জন্য সেখান থেকে কিছু ঘটনা ও উদ্ধৃতি এখানে তুলে দেয়া হল-

১. ইভানকা ও তার স্বামী জ্যারেড কুশনার নিজেদের মধ্যে আলাপ করে স্থির করেছেন, ভবিষ্যতে তাদের মধ্য থেকে কাউকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হলে কে করবেন। দুইজনেই একমত হয়েছে যে, ইভানকাই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হবেন।

২. মার্কিন সংবিধান নিয়ে তেমন কিছুই জানতেন না ট্রাম্প। তবুও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী থাকাবস্থায় সংবিধান নিয়ে পড়াশোনায় তার কোনো আগ্রহই ছিলো না। ট্রাম্পের সাবেক ক্যাম্পেইন ম্যানেজার স্যাম নানবার্গ বলেন, ‘বড়জোর তাকে চতুর্থ সংশোধনী পর্যন্ত পড়ানো গিয়েছিলো।’

৩. সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল স্যালি ইয়েটস সম্পর্কে বহু আজেবাজে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট। ‘ইয়েটসের প্রতি কেন জানি প্রথম থেকেই বেজায় ক্ষুব্ধ ছিলেন ট্রাম্প। তাকে নিয়ে কথা বলার সময় জঘন্য অশ্লীল শব্দও ব্যবহার করতেন প্রেসিডেন্ট’, ওলফ তার বইয়ে লিখেছেন।

৪. সহযোগী ও নিজের ঘনিষ্টজনদের কারো সাথে ফোনে কথা বলা শেষে ওই ব্যক্তির ভুলত্রুটি নিয়ে আজেবাজে কথা বলেন ট্রাম্প। যেমন উপদেষ্টা ব্যাননের ব্যাপারে একবার বলেছিলেন, ‘ব্যানন মোটেও অনুগত নয়। তার বিশ্রি চেহারার কথা নাই বা বললাম! আর প্রিবাস (সাবেক উপদেষ্টা) খুবই দুর্বল লোক। ও যে একটা বাইট্টা তা আর বললাম না!’ অন্যাদের ব্যাপারেও এমন অনেক মন্তব্য তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। এমনকি এমন বিদ্রুপ থেকে বাদ যাননি ট্রাম্পের নিজের জামাত জ্যারেড কুশনারও।

৫. ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা ও হোয়াইট হাউজের চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট স্টিভ ব্যানন নিজেই স্বাক্ষ্য দিয়েছেন যে, ২০১৬ সালে নির্বাচনী প্রচারণা চলার সময় ট্রাম্প টাওয়ারে রুশ সরকারের সাথে সংযোগ থাকা এক আইনজীবীর সাথে বৈঠক করেন হবু প্রেসিডেন্ট। ওলফের বইয়ে ব্যানন এই বৈঠককে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ ও ‘দেশপ্রেমবিরোধী’ বলে অভিহিত করেন।

৬. ট্রাম্প প্রায়ই ম্যাকডোনাল্ডে গিয়ে খাবার খান। তার ভয়, হোয়াইট হাউজে তার জন্য প্রস্তুত করা খাবারে বিষ মিশিয়ে দেয়া হতে পারে! ম্যাকডোনাল্ডে গিয়ে খেলে আগে থেকে সে খাবারে কারো বিষ মেশানোর সুযোগ থাকবে না।

৭. হোয়াইট হাউজের যোগাযোগ বিষয়ক পরিচালক হোপ হিকস এবং ট্রাম্পের সাবেক ক্যাম্পেইন ম্যানেজার কোরে লিওয়ান্ডোস্কির মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিলো। এক পর্যায়ে কোরে’কে বরখাস্ত করেন ট্রাম্প। এরপর একদিন হিকস’কে ট্রাম্প জিজ্ঞেস করলেন, ‘ওকে বরখাস্ত করার পর তোমার মন খারাপ হয়েছিলো কেন? তার জন্য অনেক করেছো। তোমার মতো কোমরওয়ালা মেয়ে তার জীবনের শ্রেষ্ঠ পাওয়া।’

৮. হিকসের সাথে ট্রাম্পের খুবই ঘনিষ্ট সম্পর্ক। ঘনিষ্টজনেরা তাকে ট্রাম্পের মেয়ের মতো মনে করেন। অন্যদিকে ট্রাম্প ও তার নিজের মেয়ে ইভানকার ব্যাপারে ইতিবাচক ধারণা নেই হোয়াইট হাউজ স্টাফদের মধ্যে। ওলফ তার বইয়ে লিখেছেন, ‘আসলে হিকস হচ্ছে ট্রাম্পের সত্যিকারের মেয়ে, আর ইভানকাকে মনে করা হয় তার সত্যিকারের স্ত্রী!’

৯. শুধু আনুষ্ঠানিক বৈঠক নয়, ব্যাননের দাবি হচ্ছে- ট্রাম্পের ছেলে ওই আইনজীবীকে ট্রাম্পের রুমে নিয়ে গিয়েছিলেন একান্তে কথা বলার জন্য। রুশ ওই ব্যক্তিটিকে ট্রাম্পের একান্ত রুমে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে স্টিভ ব্যানন শতভাগ নিশ্চিত। এমনটিই জানানো হয়েছে বইয়ে।

১০. ট্রাম্পে নিজেও বিশ্বাস করতেন না তিনি নির্বাচনে জিতে যাবেন। তার প্রচারণা ক্যাম্পের কেউও তা বিশ্বাস করতো না। ৪৫ হাজার ডলারের বিনিময়ে রাশিয়ায় গিয়ে একটি বক্তৃতা দেয়ার প্রস্তুাবে রাজি হওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্ট মাইকেল ফ্লিন তখন বলেছিলেন, ‘যদি আমরা নির্বাচনে জিততাম তাহলেই শুধু এটা (রাশিয়ায় গিয়ে বক্তব্য দেয়া) সমস্যার সৃষ্টি করতো।’ অর্থাৎ, নির্বাচনে জিতবেন না এটা ধরে নিয়েই ৪৫ হাজার ডলারের লোভনীয় প্রস্তাবটি হাতছাড়া করতে চাননি ফ্লিন!

১১. প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার শপথানুষ্ঠান নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না ট্রাম্প। বইয়ে বলা হয়েছে, ‘খ্যাতিমান তারকারা অনুষ্ঠানে হাজির না হওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। ব্লেয়ার হাউজের স্থান সংকুলান নিয়েও অসন্তুষ্ট ছিলেন। এসব নিয়ে স্ত্রী মেলানিয়ার সাথে সবার সামনেই ঝগড়া করছিলেন হবু প্রেসিডেন্ট। এক পর্যায়ে মেলানিয়া কাঁদো কাঁদো হয়ে গিয়েছিলেন।’

১২. ৬টি মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণে বাধা দেয়ার আদেশ ট্রাম্প জারি করেন শুক্রবার (সপ্তাহের শেষ দিনে)। আদেশ জারির জন্য কেন সপ্তাহের শেষ দিনকে বেছে নিলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা ব্যানন বলেন, ‘যাতে করে অতি উদারপন্থীরা এয়ারপোর্টে গিয়ে মারামারি করতে পারে।’

১৩. মোটেও বই পড়েন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘বই পড়ে তথ্য ও জ্ঞানে সমৃদ্ধ হওয়ার কোনো চেষ্টাই করেন না তিনি। এমনকি বইয়ের পাতাও উল্টে দেখেন না। অনেকে মনে করেন, বাস্তবিক কোনো কাজের জন্য ট্রাম্প একজন অর্ধশিক্ষিত লোক’, বলা হয়েছে বইয়ে।

১৪. স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীর সাথে বিছানায় যাওয়ার নানা ঘটনা বলতেন ট্রাম্প। ওলফ লিখেছেন, ‘ট্রাম্প এটা বলতে খুব পছন্দ করতেন- ‘যেসব জিনিস জীবনকে অর্থবহ করে তুলে তার মধ্যে অন্যতম হলো বন্ধুদের স্ত্রীদেরকে বিছানায় নিয়ে যেতে পারা।’

১৫. মার্কিন এই প্রেসিডেন্টের দৈনন্দিন জীবনে রুটিন বলতে কিছু নেই। বইয়ে বলা হয়েছে, কখনো দেখা যেত সন্ধ্যায় স্টিভ ব্যাননের (সাবেক উপদেষ্টা) ডিনার না করে অল্প কিছু খেয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছেন। আর শুয়ে শুয়ে টিভি দেখছেন আর ফোনে কথা বলছেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায়

banglarmukh official

দিল্লির ঘরে ঘরে জ্বর!

banglarmukh official

বরিশালে দুর্ঘটনায় নিহত ২

banglarmukh official

পাকিস্তানে ট্রেনে জিম্মি দেড় শতাধিক যাত্রী উদ্ধার, ২৭ সন্ত্রাসী নিহত

banglarmukh official