প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে তিনটায় গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দুই নেতা মোস্তাফা মোহসীন মন্টু ও সুব্রত চৌধুরী আজ শনিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর সেই আমন্ত্রণে তাঁরা যাচ্ছেন না বলেই জানিয়েছেন।
নেতাদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে অংশ নেওয়া দল ও জোটের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। ওই সময় ৭৫ দল ও জোটের নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করেন প্রধানমন্ত্রী। ওই সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলের নেতাদের আলাদা আলাদা চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা এবং গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে একটা দাওয়াত কার্ড এসেছে দেখেছি। কখন বা কোন সময় তা দেখিনি।
ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন এখন দেশে নেই। তিনি চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। কাল রোববার তাঁর দেশে ফেরার কথা আছে। ঐক্যফ্রন্ট সূত্র বলছে, ড. কামাল দেশে ফেরার পর এই আমন্ত্রণের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হবে।
ঐক্যফ্রন্টের সবচেয়ে বড় শরিক দল বিএনপি। এ ছাড়া অন্য দলগুলো হলো গণফোরাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জেএসডি, নাগরিক ঐক্য।
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী চিঠি পাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য চিঠি পাঠিয়েছেন বলে শুনেছি।
সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমরা একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ নিয়ে সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। ওই নির্বাচন প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত হয়েছে। আমরা তাই এটা নিয়ে সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য ডাকা হয়েছে। আমরা সেখানে যাচ্ছি না।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত বছরের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের একাধিকবার সংলাপ হয়। ওই সংলাপে নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তা হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল বিজয় পায়। তবে নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তারা এ নির্বাচন বাতিল করারও দাবি জানায়।
একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ১৩ জানুয়ারি বলেন, আবারও সংলাপে বসবেন প্রধানমন্ত্রী। কাদের বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছিল, তাদের আবার আমন্ত্রণ জানাবেন প্রধানমন্ত্রী।
অবশ্য এর একদিন পরেই কাদের বলেন,নির্বাচন নিয়ে সংলাপ নয়, রাজনৈতিক দলগুলোকে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য ডাকা হবে।
তবে কাদেরের বক্তব্যের পরদিন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ,আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও একটি সংলাপ করবেন।’
প্রধানমন্ত্রী সংলাপে ডাকবেন কি না —এই অবস্থার মধ্যে জাতীয় সংলাপ আয়োজনের কথা জানায় ঐক্যফ্রন্ট। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি এ সংলাপের দিন ধার্য আছে বলে জানা গেছে।
এ দিকে দুপুরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নভেম্বরের প্রধানমন্ত্রী সংলাপে নির্বাচন নিয়ে যে কথা দিয়েছিলেন তার একটিও রাখেননি।
আমন্ত্রণ পেয়েছেন বাম জোটের নেতারা:
বাম গণতান্ত্রিক জোটের আটটি দলের ১৬ জন নেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা। ২ ফেব্রুয়ারি সাড়ে তিনটায় চা চক্র ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল্লাহ আল ক্বাফী ওরফে ক্বাফী রতন এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সেখানে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এই ভুয়া নির্বাচনকে স্বাগত জানাতে যাব না। তবে আগামীকাল বাম জোটের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।