তামিলনাড়ুর জন্য গিয়েছিলেন জয়ললিতা। সাংসদ সে কাজটা সংসদ কক্ষের ভিতরেই। বললেন খোদ পোপ ফ্রান্সিস। উদ্দেশ্যে বললেন, ‘শিশু কেঁদে ওঠে বা ওদের খিদে, সিস্টিন চ্যাপেলের ভিতরেই মাতৃদুগ্ধ পান করান। কারণ এই স্নেহ-মমতার সর্বোৎকৃষ্ট’ মাতৃদুগ্ধ পান করান কোথায়, কীভাবে হবে, তা আদৌ জনসমক্ষে কি না.. তা নিয়ে বিতর্ক হয়নি।
নারীরা অনেক বলেছেন, সদ্যোজাত শিশু ৬ মাস পর্যন্ত, এই বয়সের যে কোনও সময় খিদে পাবে। মায়েরা যদি বাড়ির থাকেন, তখন সন্তান সাথে থাকলেও মাতৃদুগ্ধ পান করানো যায় না। কারণ রাস্তাঘাটে তার ব্যবস্থা নেই ও একটা অস্বস্তিও কাজ করে-লোকে কী ভাববে।
তাছাড়া সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পান করাতে গিয়ে যৌন হেনস্থার মুখেও বহু সময় নারীদের পড়তে হয়েছে। সেটাও তাই একটা অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই জন্যই পুরো তামিলনাড়ু জুড়ে জয়ললিতা রাস্তার পাশে পাশে শেল্টার বানিয়েছিলেন, যাতে মায়েরা সন্তানদের বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন। সে ক্ষেত্রে নারীদের অস্বস্তিবোধ থাকবে না।
অস্ট্রেলিয়ার ওই সাংসদ সদ্যোজাতকে পার্লামেন্টের অধিবেশনেই নিয়ে যান ও তাকে সেখানেই মাতৃদুগ্ধ পান তিনি সব নতুন মায়েদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, তারা যেন সন্তানকে নিজের কর্মস্থলে বা রাস্তাঘাটেই দুগ্ধপান করান। এতে লজ্জা বা অস্বস্তির কোনও কারণ নেই। এভাবেই মাতৃদুগ্ধ পানের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নানা সময়ে উদ্যোগী হয়েছেন নানা স্তরের মানুষ। তবে রবিবার ‘ব্যাপটাইজ’ করার অনুষ্ঠানে পোপের এই কথা যে নিঃসন্দেহে সুদূরপ্রসারী, তা নিয়ে বিতর্ক নেই।
স্টিন চ্যাপেল রোমান ক্যাথলিকদের অন্যতম পবিত্র স্থান। তার ভিতরে মাতৃদুগ্ধ পানের অনুমতি এক রকম অভাবনীয়ই। এ দিন ১৮টি মেয়ে ও ১৬টি ছেলেকে ‘ব্যাপটাইজ’ করেন পোপ।
সেই অনুষ্ঠানেই সকলকে অবাক করে দিয়ে খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু বলেন, ওরা যদি কান্নার কনসার্ট শুরু করে, যদি ওদের অস্বস্তি হয়, খিদে পায় বা শীত করে ওদের মাতৃদুগ্ধ পান করান এর ভিতরেই ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। এটা ভালোবাসারই আর একটা রূপ মাত্র। এ ক্ষেত্রে দুটো বার্তা দেওয়া গেছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
প্রথমত, মাতৃদুগ্ধ পান করাতে চান না অনেক মা। বিশেষত, যে কোনও দেশের শহরাঞ্চলে এই প্রবণতা বেশি। এই বার্তায় সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পানের প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে। হয়তো কিছু ক্ষেত্রে ধর্মগুরু বলায় মতের পরিবর্তন হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, কর্মস্থল-সহ জনসমক্ষে মাতৃদুগ্ধ পানের কোনও ভয় বা লজ্জা নেই, এগিয়ে আসতে হবে মায়েদেরই। এই বার্তাও গেছে পোপের কথায়। মাতৃদুগ্ধ পান নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর নানা উদ্যোগ চলছে দেশে-বিদেশে। সেখানে পোপের বক্তব্য অনুঘটকের কাজ করতে পারে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।