26 C
Dhaka
অক্টোবর ৩০, ২০২৪
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জাতীয় প্রচ্ছদ প্রশাসন

ডিআইজি মিজানের বিয়ে নিয়ে তোলপাড়

বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে তুলে নিয়ে জোর করে বিয়ের কথা শোনা যায়। আর এমন কাজ করে বখাটে যুবক কিংবা সন্ত্রাসীরা। আর সেই নারীকে উদ্ধারে নায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন পুলিশ। এমন ঘটনা প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু সেই পুলিশই এবার মরিয়ম আক্তার ইকো নামের এক নারীকে তুলে নিয়ে বিয়ে করলেন। আর সেই নারী যখন পুলিশ স্বামীর স্ত্রী পরিচয় দিতে চাইলেন তখনই তাকে ফাঁসানো হলো মামলার জালে। যা রীতিমতো ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’তে পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। যদিও নিজের বিরুদ্ধে উঠা সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিআইজি) মিজানুর রহমান।

দেশের একটি শীর্ষ স্থানীয় দৈনিককে মরিয়ম আক্তার ইকো জানিয়েছেন, চাকরির জন্য বান্ধবীর পরিচয় সূত্রে এক নারীর মাধ্যমে মিজানুর রহমানের সঙ্গে প্রথমে মুঠোফোনে পরিচয় হয় তার। এরপর তিনি তাকে ফোনে কথা বলার সময় বিয়ে করার ইঙ্গিত দিতেন। এরই মধ্যে গত বছরের ১৪ জুলাই ইকোকে তাদের পান্থপথের বাসা থেকে এক রকম কৌশলে তার গাড়িতে তুলে জোরপূর্বক ৩০০ ফুট এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে তাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ করেন ইকো। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ডিআইজির বেইলি রোডের বাসায়। সেখানে তাকে সুস্থ করার কথা বলে অষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। ইকো জানান, পরদিন দুপুর ১২টার দিকে তিনি ঘুম থেকে জেগে দেখতে পান তার পরনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিজানের স্লিপিং ড্রেস এবং তিনি তার বেডরুমে। বুঝতে পারেন, তার সর্বনাশ হয়ে গেছে। এরপর কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ডিএমপি কার্যালয় থেকে ছুটে আসেন মিজানুর রহমান। ইকোকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। ১৪ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত ৩ দিন ওই বাড়িতেই ছিলেন ইকো।

পরবর্তীতে, খবর দেওয়া হয় ইকোর মা কুইন তালুকদারকে। বগুড়া থেকে তার মা কুইন তালুকদার ১৭ জুলাই সন্ধ্যায় ডিআইজির বেইলি রোডের বাসায় এসে পৌঁছান। এরপর অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক তার সঙ্গে ইকোর বিয়ে দিতে মা-মেয়েকে রাজি করান। ৫০ লাখ টাকা দেনমোহরে মরিয়ম ও মিজানুর রহমানের বিয়ে পড়ানোর জন্য মগবাজার কাজী অফিসের কাজীকে ডেকে আনা হয়। বিয়ের পর ওই রাতেই মা-মেয়েকে ছেড়ে দেয়া হয়।

 

পরে লালমাটিয়ায় ৫০ হাজার টাকার ভাড়া ফ্ল্যাটে নিয়ে গোপনে সংসার শুরু করেন ডিআইজি মিজান। ওই ফ্ল্যাটের নিচে সাদা পোশাকে সার্বক্ষণিক পুলিশের দু’জন সদস্যকে পাহারায় রাখা হয়। এর ফলে ইকো এক রকম গৃহবন্দি হয়ে পড়েন। মাঝে মাঝে তাকে নির্যাতন করা হতো বলেও অভিযোগ করেন ইকো। ৪ মাস এভাবে অতিবাহিত হওয়ার পর ডিআইজি মিজানকে স্বামী হিসেবে পরিচয় দিয়ে অফিসে মুডে থাকা একটি ছবি ফেসবুকে আফলোড করেন। এতেই চরমভাবে ক্ষিপ্ত হন মিজানুর রহমান। এ ছবির বিষয়টি পুলিশের উপর মহলে জানাজানি হয়ে যায়। ফেসবুক থেকে দ্রুত ছবিটি সরিয়ে ফেলতে তিনি লালমাটিয়ার বাসায় ছুটে আসেন। সেখানে বিষয়টি নিয়ে স্ত্রী ইকো, শাশুড়ি কুইন তালুকদারের সঙ্গে তার চরম মাত্রায় বাকবিতণ্ডা হয়। একই পর্যায়ে ডিআইজি মিজান তার বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দেন।

পরবর্তীতে মামলাও হয়। সেই মামলায় ৫৪ ধারায় সেগুনবাগিচার একটি রেস্তোরাঁ থেকে পুলিশ ইকোকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। তিন সপ্তাহ কারাভোগের পর সপ্তাহখানেক আগে মরিয়ম জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। নতুন করে তাঁকে মামলায় জড়ানোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে মরিয়মের পরিবার।

এদিকে, পুলিশ কর্মকর্তার এমন বিয়ের খবর প্রকাশ হতেই চারদিকে সমালোচনার ঝড় উঠে। পুলিশের এমন রূপ সবাইকে ভাবিয়ে তুলছে। গতকাল থেকে শুরু করে আজও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে।

যদিও নিজের বিরুদ্ধে উঠা সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিআইজি) মিজানুর রহমান। দেশের একটি শীর্ষ স্থানীয় দৈনিককে তিনি বলেন, মরিয়ম আক্তার ইকো একজন প্রতারক। তাঁর মা, নানিও একই রকম। তাঁর সঙ্গে ইকোর মাত্র দুবার দেখা হয়েছে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইকোর আপলোড করা ছবির জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

রেলওয়ের নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশ

banglarmukh official

ডেঙ্গুতে একদিনে ৬ মৃত্যু, হাসপাতালে ১২৪৮ জন

banglarmukh official

দিনে ৯০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স আসছে দেশে

banglarmukh official

কর্মসংস্থান সৃষ্টি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য: নাহিদ

banglarmukh official

সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ গ্রেফতার

banglarmukh official

৩২ এর ব্যাখ্যা দিলেন উপদেষ্টা, ৩ বার বিসিএস দেওয়াদের কী হবে?

banglarmukh official