অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও জব্দ করা ভারতীয় রুপি আত্মসাৎ করে ফেঁসে যাচ্ছেন পুলিশের দুই সাবেক কর্মকর্তা। এসব অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের প্রক্রিয়া চলছে। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয় এই আলাদা দুটি অভিযোগপত্রের অনুমোদন দিয়েছে। দুদকের রাজশাহী ও রংপুরের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের দুই তদন্ত কর্মকর্তা মামলা দুটি তদন্ত করেছেন। এরপর দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক আবদুল আজিজ ভুঁইয়া খসড়া অভিযোগপত্র অনুমোদনের আবেদন করলে প্রধান কার্যালয়ে তা অনুমোদন হয়। দুদক কর্মকর্তা আবদুল আজিজ ভুঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত দুজন হলেন অবসরপ্রাপ্ত সহকারী পুলিশ সুপার আবদুস শুকুর আকন্দ ও চাকরিচ্যুত উপ-পরিদর্শক (এসআই) এহসানুল ইসলাম। আবদুস শুকুর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার জিরাই গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদিন আকন্দের ছেলে। আর এহসানুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামিয়া কলেজ রোড এলাকার মৃত আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে। দুদক সূত্রে জানা গেছে, চাকরিতে থাকাকালীন আবদুস শুকুরের বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি তদন্ত করে দুদক। ওই সময় আবদুস শুকুর দুদকে তার সম্পদের যে বিবরণ জমা দেন তার চেয়েও বেশি সম্পদ খুঁজে পায় দুদক। এ নিয়ে ২০১৫ সালের ৩০ মার্চ রংপুরের কোতোয়ালি থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। দুদকের রংপুরের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমিরুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করেন। অন্যদিকে এহসানুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর কোর্ট মালখানার দায়িত্বে নিয়োজিত হওয়ার পর সেখান থেকে ভারতীয় ৯৯ হাজার রুপি আত্মসাৎ করেছেন। জেলার শিবগঞ্জ থানার ২০০৭ সালের একটি মামলার আলামত হিসেবে মালখানায় মোট এক লাখ ভারতীয় রুপি ছিল। কিন্তু ২০১০ সালে এহসানুল ইসলাম মালখানার দায়িত্ব পেলে সেখান থেকে ৯৯ হাজার রুপি সরিয়ে দেন। পরবর্তীতে বিষয়টি ধরা পড়লে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তৎকালীন কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মাহবুব আলম তার বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। এরপর মামলাটি তদন্তের জন্য দুদকের রাজশাহীর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমিনুর রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরই মধ্যে পুলিশের বিভাগীয় তদন্তে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৫ সালে এহসানুল ইসলামকে চাকরিচ্যুত করা হয়। দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক আবদুল আজিজ ভুঁইয়া বলেন, অনুমোদন পাওয়ার পর মামলা দুটির তদন্ত কর্মকর্তারা সাবেক দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র প্রস্তুত করছেন। কয়েক দিনের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট থানা দুটিতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে। যে কোনো সময় ওই দুই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হবে বলেও জানান তিনি।