প্রধানমন্ত্রীর বরিশাল আগমনের প্রচারণার পোস্টার লাগাতে গিয়ে ইউএনওর নিদের্শে মারধরের শিকার হয়েছেন এক স্কুল ছাত্র বলে জানা গেছে। ৫ ফেব্রুয়ারী রাত সাড়ে আটটার দিকে ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
নলছিটি মার্শ্চেন্টস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির হোসেন ইমনের বর্ননা মতে, সে ও তার বন্ধু আসিব শুভ মিলে প্রধানমন্ত্রীর বরিশাল আগমনের পোস্টার লাগাতে উপজেলা পরিষদের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভবনের কাছে যান। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফুল ইসলাম অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে ব্যাটমিন্টন খেলছিলেন।
পোস্টার লাগাতে দেখে আশ্রাফুল ইসলাম তার অফিসের নাজিরকে ডেকে পোস্টার লাগাতে আসা ছেলেদের ধরতে বলেন। নির্দেশ পেয়ে নাজির নাজিম ইমন ও শুভকে ধরে লাথি ও থাপ্পর মেরে পোস্টারগুলো ছিনিয়ে নেয়।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা দাবী করেছে, এক পর্যায়ে ইমন ভয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে জানায় সে প্রধানমন্ত্রীর পোস্টার লাগাতে এসেছিল। তখনো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফুল ইসলাম দেয়ালে কোন পোস্টারই লাগানো যাবে না বলে ধমকান।
ওদিকে নাজির সেই পোস্টার নিয়ে ছিড়ে ফেলে সিঁড়ির নীচে ময়লার মধ্যে ফেলে রেখে দেয়।
ঘটনার পর কাঁদতে কাঁদতে ইমন উপজেলা শ্রমিকলীগের অফিসে গিয়ে বিষয়টি অবহিত করে। তাৎক্ষণিক উপজেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি পারভেজ হোসেন হান্নান, পৌর কাউন্সিলর তোফায়েল চন্দন ও শ্রমিক নেতা ফরিদ হোসেন এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে গিয়ে জানতে চান।
তখন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার কার্যালয়ের দেয়ালে ‘যে কারও’ পোস্টার লাগানো সম্পূর্ণ নিষেধ বলে সাফ জানিয়ে দেন বলে জানান শ্রমিকলীগের নেতারা। শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রচারণার পোস্টার ফেরত চাইলে নাজির নাজিম উদ্দিন সিঁড়ির নিচ থেকে ছিড়ে ফেলা পোস্টার এনে ফেরত দেন।
বিষয়টি নিয়ে নলছিটিতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হলে পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ীমী লীগের সভাপতি তছলিম উদ্দীন চৌধুরীর নেতৃত্বে রাত ১০টার দিকে পৌরসভায় জরুরী বৈঠকে সমঝোতা হয়। বৈঠকে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে নাজিরের আচরণ দুঃখজনক হওয়ায় তাকে নলছিটি থেকে বদলী করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি পারভেজ হোসেন হান্নান বলেন, পোস্টারটি কার ছিল তা না দেখায় এমন পরিস্তিতির সৃষ্টি হয়। পরে উপজেলা আ’লীগের সভাপতির মধ্যস্ততায় ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি আসলে ওভাবে না।
তিনি দাবী করেন, দেয়ালে অনেকেই ওরসের পোস্টার লাগায়। আমরা ভেবেছিলাম সেসব পোস্টার। সেজন্য ছেলেটাকে পিঠে হাত রেখে বলে দেওয়া হয়েছে তোমরা চলে যাও। এখানে পোস্টার লাগানো যাবে না। আসলে আমরা কেউ জানতাম না ওটা প্রধানমন্ত্রীর জনসভার পোস্টার।
আশ্রাফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি মেয়র মহোদয়ের উপস্থিতিতে সমাধান করা হয়েছে। এটা ভুলবোঝাবুঝি ছিল।
শেষ পর্যন্ত কি প্রধানমন্ত্রীর জনসভার পোস্টার লাগাতে দেওয়া হয়েছিল_এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনও কোন জবাব দেননি। তিনি উল্টো অনুরোধ করেন, এমন ঘটনা বস্তুত সংবাদের বিষয় না। সংবাদ না প্রকাশের জন্য অনুরোধ করেন এই সরকারি কর্মকর্তা।