32 C
Dhaka
অক্টোবর ৩০, ২০২৪
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অর্থনীতি আন্তর্জাতিক জাতীয় প্রচ্ছদ রাজণীতি

সর্বজনীন স্বাস্থ্য নিরাপত্তা অর্জনে প্রধানমন্ত্রীর তাগিদ

বিশ্বের সব নাগরিকের জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডব্লিউএইচও) আরও বেশি সম্পৃক্ত হওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ডব্লিউএইচও-এর স্বাস্থ্যবিষয়ক এসডিজি অর্জনে বিশ্বের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠানটিকে আরও সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হওয়া প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনের ৫৫তম সংস্করণে‘হেলথ ইন ক্রাইসিস-ডব্লিউএইচও কেয়ার্স’ বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তৃতায় এ জোরারোপ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম সম্প্রসারণে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং এক বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬৫ বছরের অধিক বয়সের লোকদের জন্য বিনা খরচে স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য-৩ ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে একটি কার্যকর, ফলদায়ক আন্তর্জাতিক সমন্বয় ও সহযোগিতার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘ইবোলা, কলেরা ও যক্ষ্মার মতো সংক্রামক রোগ পুনরায় বিশ্বব্যাপী দেখা দিয়েছে, ফলে বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও পরিবর্তন প্রয়োজন’।

শেখ হাসিনা উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর স্বাস্থ্য নিরাপত্তা কার্যক্রমে ভবিষ্যৎ ও জরুরি অর্থায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, ‘ডব্লিউএইচও সংকটের বিশালতা, পূঁজি সংকট ও সক্ষমতার অভাবের কারণে প্রায়শই ভুল পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু আমাদের প্রধান মানবিক সংস্থা হিসেবে ডব্লিউএইচও সঠিকভাবেই সবার স্বাস্থ্য ও সুখের নিশ্চয়তার জন্য সরকারগুলোর কাছ থেকে উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক সহযোগিতা পাওয়ার যোগ্য।’

প্রধানমন্ত্রী গত মাসে চতুর্থ মেয়াদে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর গত বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো তার দুটি দেশ জার্মানি ও ইউএই সফরে তিনি গতকাল সেখানে পৌঁছান।

শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় বলেন, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা। এ কারণেই এটিতে আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে আমরা আমাদের জনগণের জন্য যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারছি না। অথচ এসডিজি-৩-তে স্বাস্থ্যের অধিকারকে মৌলিক অঙ্গীকার হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।’

স্বাস্থ্য খাতে তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা উন্নয়নে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে এবং আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সেক্টরেও উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধন করেছে।

স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের সাফল্যের বিবরণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি লাখে মাতৃমৃত্যু ১৭২-এ কমে এসেছে। শিশুমৃত্যু প্রতি হাজারে ২৪-এ নেমে এসেছে এবং প্রতি হাজারে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যু ৩১-এ কমে এসেছে।

তিনি বলেন,দেশে বর্তমানে ৮২ দশমিক ৩ শতাংশ টিকার আওতায় এসেছে এবং গড় আয়ু ৭২ দশমিক ৮ বছরেরও বেশি। তিনি আরও বলেন, যক্ষ্মা ও কুষ্ঠ দূরীকরণে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করেছে।

PM-2

শেখ হাসিনা বলেন, এমডিআর-টিবি’র স্বল্পমেয়াদি চিকিৎসা রেজিমেন গবেষণা বাংলাদেশে সম্পন্ন হয়েছে এবং তা ‘বাংলাদেশ রেজিমেন’ হিসাবে পরিচিত। তিনি বলেন, ‘রেজিমেন চিকিৎসার ফলে এমডিআর-টিবি চিকিৎসার মেয়াদ লক্ষ্যণীয়ভাবে ২০ মাস থেকে কমিয়ে ৯ মাসে এনেছে এবং এ ক্ষেত্রে চিকিৎসায় সফলতার হার যথেষ্ট ভালো। বর্তমানে সারা বিশ্ব স্বল্পমেয়াদি এমডিআর-টিবি রেজিমেন গ্রহণ করছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য সেবাখাতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পেয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, গত তিন দশক যাবৎ বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনায় জনস্বাস্থ্য সেবাকে সব নাগরিকের কাছে সহজলভ্য ও প্রবেশগম্য করে গড়ে তোলা বিষয়টি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এই পরিকল্পনার আওতায় সবার জন্য স্বাস্থ্য (এইচএফএ), প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা (পিএইচসি), এসেনসিয়াল সার্ভিস প্যাকেজ, প্রভৃতি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ এলাকাগুলোতে ১৮ হাজার পাঁচশ’টির বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলো তৃণমূল জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্যসেবা সহ ৩০ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করছে।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার সারাদেশে, অন্ততপক্ষে প্রতিটি জেলায় একটি করে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের মাধ্যমে ওষুধ ও স্বাস্থ্য পরিসেবা সম্প্রসারণ করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ‘এসডিজি’ লক্ষ্যমাত্রাগুলো উন্নয়ন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের ‘রূপকল্প-২০২১’ এবং ‘রূপকল্প-২০৪১’-এ বাংলাদেশে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য বহুমাত্রিক, সীমাহীনভাবে বিস্তৃত হচ্ছে এবং এ জন্য প্রয়োজন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিশ্রুতি ও ঘনিষ্ঠ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।

তিনি বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন আমাদেরকে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, বিশেষত আমাদের সমাজের ঝুঁকিপূর্ণ অংশের, বিষয়ে কাজ করার সুযোগ দেয়ায় আমাদের যৌথভাবে কাজ করা প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের কঠিন পথপরিক্রমায় সাথে থাকার জন্য, বিশেষত এমডিজি অর্জন, শিশু ও মার্তৃমৃত্যু হ্রাস তথা বিভিন্ন টিকাদান কর্মসূচিতে সহায়তা এবং বহুবছর যাবৎ এইচআইভি, ম্যালেরিয়া, যক্ষা ও অন্যান্য পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে ডব্লিউএইচও-কে ধন্যবাদ জানান।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশে মিয়ানমারে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের জন্য এবং গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র,নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, ইয়েমেন ও লিবিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে ডব্লিউএইচও’র জরুরি কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

রেলওয়ের নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশ

banglarmukh official

ডেঙ্গুতে একদিনে ৬ মৃত্যু, হাসপাতালে ১২৪৮ জন

banglarmukh official

দিনে ৯০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স আসছে দেশে

banglarmukh official

কর্মসংস্থান সৃষ্টি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য: নাহিদ

banglarmukh official

সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ গ্রেফতার

banglarmukh official

লেবাননে সংঘর্ষে ইসরাইলের ৪ সেনা নিহত, আহত ১৪

banglarmukh official