এপ্রিল ১১, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
লাইফস্টাইল

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসছে মরা জেলিফিশ

সমুদ্রের পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় জোয়ারের সঙ্গে ভেসে আসছে অসংখ্য মরা জেলিফিশ। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের একাধিক পয়েন্টে আটকে পড়ে আছে এ মাছগুলো। গত রোববার থেকে আজ বুধবার বিকেল পর্যন্ত সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে অসংখ্য মরা জেলিফিশ বালুতে আটকে থাকতে দেখা গেছে। এসব মাছের মধ্যে কোনোটা আকারে ছোট, কোনোটা বড়। দেখতে অনেকটা অক্টোপাসের মতো। তবে এগুলো কি কারণে মারা যাচ্ছে এর সঠিক কারণ কেউ বলতে পারছেন না।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াকাটা সৈকতের দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটারের একাধিক পয়েন্টে জোয়ারের পানির সঙ্গে অসংখ্য মরা জেলিফিশ ভেসে এসে আটকা পড়েছে। মরা এ জেলিফিশগুলো উৎসুক পর্যটকরা দুর্গন্ধের কারণে দেখতে পারছেন না । বাতাসের বিপরীত দিকে দাঁড়িয়ে কেউ কেউ দেখছেন। এভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলে গোটা সৈকতে দুর্গন্ধ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় জেলেদের কাছে জেলিফিশ সাগরের ‘লোনা’ হিসেবে পরিচিত। গভীর সমুদ্রে জেলেদের জালে এসব জেলিফিশ আটকা পড়ে মারা যেতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

রায়হান নামে এক পর্যটক বলেন, জেলিফিশের নাম শুনেছিলাম, এই প্রথম দেখছি। এ গুলো দ্রুত সরিয়ে না নিলে পঁচে সৈকতের পরিবেশ দূষিত হবে।

জেলে মো.কাওসার হোসেন জানান, গত ৪/৫ দিন আগে তাদের জালে বিপুল পরিমাণ জেলিফিশ ধরা পড়েছিল। তারা জাল থেকে সমুদ্রে ফেলে দিয়েছে।

এদিকে ফিশারিজ বিভাগের গভেষকদের মতে, জেলিফিশ গভীর সমুদ্রের মাছ। সমুদ্রের পানিতে কোনো বিপর্যয় বা পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলের কাছাকাছি চলে আসাটাই শঙ্কা। জেলিফিশ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণি। একটি প্রজাতি মিঠাপানিতে পাওয়া যায়। এরা সাধারণত পানির ওপর ভাগে ভাসমান অবস্থায় থাকে। গভীর সমুদ্রে জেলিফিশের হরেক রকম জাত রয়েছে। এদের বিশেষ ধরণের দংশন কোষ আছে। যাকে ইরেজিতে- jellyfish (জেলিফিশ) বলে। বহির্বিশ্বে এটার বাজারমূল্য অনেক বেশি। উন্নতমানের হোটেলে উৎকৃষ্টমানের খাবার হিসেবে বিক্রি হয় এই মাছ। এগুলো স্পর্শ করলে শরীর চুলকায়, এমনকি ঘা হয়ে যেতে পারে। বিশেষ কোষের কামড়ে মানুষ মারাও যেতে পারে। কুয়াকাটা সৈকতে আটকে মরে যাওয়া জেলিফিশগুলো পঁচে গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তাই কাঠ বা লোহা দিয়ে তুলে এ মাছগুলো বালুতে পুঁতে ফেলা উচিত।

কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো.কামরুজ্জামান বলেন, আমিও গত কয়েকদিন যাবৎ সৈকতের একাধিক পয়েন্টে অসংখ্য জেলিফিশ বালুতে আটকে পড়ে থাকতে দেখছি। এ মাছগুলো বালুর নিচে চাপা দিলে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়াবে না।

কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা জেলেদের বরাত দিয়ে বলেন, গত কয়েক দিন থেকে এসব জেলিফিশ উপকূলের কাছাকাছি এসে জেলেদের জালে আটকা পড়েছে। পরে জেলেরা মাছগুলো ফেলে দেয়ায় মরা মাছ কুয়াকাটা সৈকতের বেলাভূমিতে আসতে শুরু করেছে।

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা জানান, মৃত জেলিফিশের কারণে পর্যটকদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেজন্য এগুলো সরিয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলার ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে কথা হয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পাপড়ি হাজরার সঙ্গে। তিনি বলেন, এ জলজ প্রাণিগুলো পঁচে সৈকতে আটকে থাকাতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। মাছগুলো মারা যাচ্ছে কেন তা নিয়ে গবেষণা করা দরকার।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে এ রকমের অসংখ্য জেলিফিশ কুয়াকাটা সৈকতে এসেছিল। তখন স্থানীয় প্রশাসন ও জেলেদের যৌথ উদ্যোগে মাছগুলো বালুতে পুঁতে রাখা হয়েছিল।

সম্পর্কিত পোস্ট

ইফতারে ঘরেই তৈরি করুন সুস্বাদু জিলাপি

banglarmukh official

পেটে ব্যথা হলে কী করবেন?

banglarmukh official

কিডনি সুস্থ রাখতে যা খাবেন, যা খাবেন না

banglarmukh official

বিকেলের নাস্তায় সবজি পাকোড়া খেতে চাইলে

banglarmukh official

জেনে নিন বাসি রুটির উপকারিতা

banglarmukh official

খাবার খাওয়ার আগে বা পরে পানি খেলে কী হয়?

banglarmukh official