তানজীল শুভ :
দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল শেরে ই বাংলা মেডিকেল হাসপাতাল। যেখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসে হাজার ও অসহায় রোগী।কিন্তু প্রকৃত সেবা তারা পাচ্ছেনা বলে জানান এই হাসপাতাল এ ভর্তি হওয়া রোগীরা। কিন্তু কেন?
যেখানে জনগণের দোরগোড়ায় চিকিৎসাসেবা পৌছেঁ দেওয়ার জন্য সরকারের আন্তরিকতার অভাব নেই। এই লক্ষ্যে রয়েছে বিশাল অবকাঠামো এবং পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ। এখন দেশের প্রান্তীয় এলাকায়ও সরকারের উদ্যোগে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। তবুও মাঝেমধ্যে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র গুলোয় ব্যবস্থাপনাগত ক্রটির কথা শোনা যায়।
বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে রোগীদের রোগ নির্ণয়ের অধিকাংশ যন্ত্রপাতি অচল হয়ে আছে। ফলে হাসপাতালে ভর্তি থাকা এবং বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীকে রোগ নির্ণয়ে সব ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য যেতে হয় বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয়।যার কারণে তারা প্রতিনিয়ত প্রতারণার স্বীকার হচ্ছেন।
আরও বলা হয়, কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বরাবরই যন্ত্রাংশ সচল করার আশ্বাস দিলেও রোগী ও সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যন্ত্রপাতিগুলো সচল রাখার চেষ্টা ঢিমেতালে চলছে। জনস্বাস্থ্যের প্রেক্ষাপটে দেশের অন্যতম সেরা একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের পরিস্থিতি কিছুতেই প্রত্যাশিত হতে পারে না।
জানা যায়, শেবাচিম হাসপাতালে রেডিওলজি বিভাগের সিটিস্ক্যান মেশিন দুটি অচল রয়েছে গেল বছরের ২৪ নভেম্বর থেকে। ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে অচল রয়েছে এমআরআই মেশিন দুটি। হাসপাতালে এক্সরে মেশিন রয়েছে আটটি। তার মধ্যে শুধু অর্থোপেডিক্স বিভাগের মেশিনটি সচল রয়েছে। আলট্রাসনোগ্রাম করানোর পাঁচটি মেশিনের সবক’টি অচল গেল বছরের নভেম্বর থেকে। এক বছর ধরে অচল রয়েছে ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত কোবাল্ট-৬০ মেশিনটি। এ অবস্থা নিঃসন্দেহে বিস্ময়কর এবং রোগীদের জন্য বিড়ম্বনার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব যন্ত্রপাতি অচল থাকার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠান যন্ত্রপাতিগুলো সরবরাহ করেছে মেরামতের জন্য, তাদের অবহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি যেসব যন্ত্রপাতির গ্যারান্টি মেয়াদ শেষ হয়েছে, সেগুলো নতুন করে কেনার কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো এর জন্য এত সময়ক্ষেপণ কেন?
অথচ সময়মতো তদারকি করলে মেরামত কিংবা চাহিদা মতো ক্রয় করার বিষয়টি সহজেই সম্পন্ন করা যেত। তাহলে এ ধরনের বিড়ম্বনাকর পরিস্থিতির উদ্ভব হতো না। উল্লেখ্য, শেবাচিম হাসপাতাল দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের প্রধান চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। এই হাসপাতাল ঘিরে তৈরি হচ্ছে আগামী দিনের মেধাবী চিকিৎসক। সেখানে যখন যন্ত্রপাতির অচলজনিত কারণে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হয়, তা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এ অবস্থায় সরকারের অন্য চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোর সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত সত্বর শেবাচিম হাসপাতালের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং পাশাপাশি দেশের অন্য হাসপাতালগুলোর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের কর্তৃপক্ষেরও যথেষ্ট দায়িত্ব রয়েছে। উন্নত ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি তদারকি ও নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে।