ছোটবেলায় বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ, বিয়ের আগে সন্তান জন্ম দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত। সবমিলিয়ে খুব একটা সহজ জীবন কাটাননি এক সময়ের বলিউড অভিনেতা সারিকার। বিবাহিত জীবনও যে সুখের ছিল এমনটা নয়। কমল হাসানের সঙ্গে হয়েছিল বিচ্ছেদ। মামলায় হেরে গিয়েছিলেন গৃহ পরিচারকের কাছেও। ভেঙেছিল কপিল দেবের সঙ্গে বিয়েও। কিন্তু কেন?
সারিকার মা ছিলেন রাজপুত, বাবা ছিলেন মারাঠি। ছোট থেকেই বাবা-মায়ের অশান্তি দেখেই বড় হয়েছিলেন তিনি। প্রথম ব্রেক হমরাজ। তখন তার বয়স পাঁচ। কিন্তু ছবি মুক্তির আগেই বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বাবা-মায়ের সঙ্গে বসে নিজেকে প্রথম বড় পর্দায় দেখার স্বাদ নিতে পারেননি তিনি।
এক সময় গোটা পরিবারের রোজগারের অন্যতম মাধ্যম হয়ে ওঠে ওই পাঁচ বছরের ছোট্ট মেয়ে সারিকা। ছেলে ও মেয়ে উভয়ের ভূমিকাতেই শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করতে শুরু করেন তিনি। তবে ছেলের ভূমিকায় অভিনয় করার সময় বদলে যেত তার নাম। তখন তার নাম ‘মাস্টার সুরাজ’।
একটা সময় স্কুলে যাওয়ার টাকা ছিল না সারিকার। মায়ের সঙ্গে বাসে করেই শুটিংয়ে যেতেন। একটু স্বাবলম্বী হওয়ার মেয়ের জন্য সেটেই শিক্ষক রেখে দেন তার মা। তিনি সারিকাকে শুটিংয়ের ফাঁকে পড়াতেন। ক্রমে শিশুশিল্পীর পরিচয় ছেড়ে নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন সারিকা।
সারিকা কোন ছবি করবেন, কোন ছবি ছাড়বে, কত টাকা নেবে সে সবই নির্ধারণ করতেন সারিকার মা। মেয়ের গায়ে প্রকাশ্যে হাত তুলতেও দ্বিধা বোধ করতেন না তিনি। একটা ঘটনা এসব কিছুকে ছাপিয়ে যায়। মুম্বাইয়ের সমুখনন্দা হলে আসার কথা ছিল সারিকার। তিনি দেরি করে আসেন। সারিকার মা সবার সামনেই মেয়েকে আচমকাই টেনে থাপ্পড় লাগিয়ে দেন।
আমূল পালকারের সঙ্গে সেমি ন্যুড শট দেওয়া নিয়েও বাধে মায়ের সঙ্গে ঝগড়া। নিজের পারিশ্রমিক থেকে দেড় হাজার টাকা নিয়ে শপিং করেছিলেন বলেও মার খেতে হয়েছিল মায়ের কাছে। সহনশীলতার বাঁধ ভাঙে তার। একদিন হুট করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। জানতে পারেন সারিকার পারিশ্রমিক দিয়ে তার মুম্বাইয়ের অভিজাত এলাকায় ছয়টি ফ্ল্যাট কিনলেও সবটাই নিজের নামে। হতাশায় ভেঙে পড়েন তিনি।
এ সময় তার আলাপ হয় কপিল দেবের সঙ্গে। তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়, এক সময় প্রেম। জানা গেছে, বিয়ের কথাও হয়েছিল তাদের। কিন্তু বিয়ে ভেঙে যায়। কপিল আবার ফেরত চলে যান তার প্রাক্তন প্রেমিকা রোমির কাছে। এরপর সারিকার জীবনে আসেন কমল হাসান। প্রেমের সম্পর্ক অনেক দূর এগোলে সারিকা হন সন্তান সম্ভবা। তখনও তাদের বিয়ে হয়নি।
কমল হাসান সারিকাকে তখন বিয়ে করতে চাইলেও পিছিয়ে আসেন তিনি। বলেন, দ্বিতীয় সন্তান হওয়ার পরই বিয়ে করবেন তারা। তার মনে হয়েছিল তা নাহলে প্রথম সন্তানকে সারা জীবন তার বাবার পরিচয় নিয়ে কটু সন্তান শুনতে হবে। যাতে দুই সন্তানের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ সৃষ্টি না হয় সে কারণেই এমন সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছিলেন বলে শোনা যায়।
পরবর্তীতে তারা বিয়ে করেন, যদিও সেই বিয়েও সুখের হয়নি। কিছু বছর পর বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাদের। শোনা যায়, অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন কমল।