এপ্রিল ২০, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
ক্রিকেট খেলাধুলা প্রচ্ছদ

এত কাছে তবু এত দূরে!

বারবার একই চিত্রনাট্য। তীরে এসে তরি ডোবা। বারবার একইভাবে শেষ মুহূর্তে এসে হেরে যায় বাংলাদেশ। শিরোপা থেকে যায় অধরা। এ নিয়ে তিন কিংবা ততোধিক দেশ নিয়ে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের চারবার ফাইনাল খেললো বাংলাদেশ। কিন্তু শিরোপা জেতা হলো না একবারও। এবারও একেবারে জয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে শিরোপা হারা হলো বাংলাদেশ।

২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনালের পূনরাবৃত্তিই হলো যেন নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে এসে। শিরোপার একেবারে দ্বারে-কাছে গিয়েও আক্ষেপে পুড়তে হলো টাইগারদের। এশিয়া কাপের ফাইনালে মাত্র ২ রানে হারতে হয়েছিল পাকিস্তানের কাছে। এবার ভারতের কাছে হারলো একেবারে শেষ বলে এসে, ছক্কা খেয়ে।

শেষ ২ ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৩৪ রান। জয় যেন বাংলাদেশের হাতের নাগালে; কিন্তু রুবেল হোসেনের এক ওভারেই দিনেশ কার্তিক নিলেন ২২ রান। তার এই এক ওভারেই বাংলাদেশ বলতে গেলে হেরে বসেছে। অথচ, তার আগের ওভারে মাত্র ১ রান দিয়ে ম্যাচটাকে যেন পুরে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের পকেটে। কিন্তু, রুবেলের ওই এক ওভারই সব ধ্বংস করে দিলো।

শেষ ওভারে তবুও প্রয়োজন ছিল ১২ রান। বোলার সৌম্য সরকার। প্রথম বলই দিলেন ওয়াইড। পরের বলে কোনো রান নিতে পারলেন না বিজয় শঙ্কর। দ্বিতীয় বলে নিলেন ১ রান। দিনেশ কার্তিক স্ট্রাইকে এসে ১ রান নিলেন। চতুর্থ বলে শঙ্কর মারলেন বাউন্ডারি। পঞ্চম বলে ছক্কা মারতে গিয়ে হলেন আউট। শেষ বলে দিনেশ কার্তিক গেলে স্ট্রাইকে। ১ বলে প্রয়োজন ৫ রান। সৌম্য সরকারকে ছক্কা মেরে বিজয় উদযাপন করলেন তিনি। নেচে উঠলো ভারতের ড্রেসিং রূম। নাচলো শ্রীলঙ্কার গ্যালারিও। এদিন যে, শ্রীলঙ্কার গ্যালারি হয়ে উঠেছিল ভারতের সমর্থক!

২০০৯ সালের ত্রিদেশীয় ট্রফির ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ মুহুর্তে এসে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। নিশ্চিত জয়ের ম্যাচ ছিল সেটি। ১৫২ রানের মামুলি পুঁজি নিয়েও সেদিন প্রাণপন লড়াই চালিয়েছিল টাইগাররা। বাংলাদেশের বোলিং তোপের মুখে শুরুতে ৬ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে লঙ্কানরা। প্রথম ছয় স্বীকৃত ব্যাটসম্যানের মধ্যে একমাত্র কুমারা সাঙ্গাকারা (১৩৩ বলে ছয় বাউন্ডারিতে ৫৯) মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিলেন। এরপর লোয়ার অর্ডারের জিহান মোবারক ১৬ আর দুই বোলার পারভেজ মাহারুফ (৭৬ বলে ৩৮*) ও বিশ্ব সেরা অফস্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরনই (১৬ বলে চার বাউন্ডারি আর দুই ছক্কায় ৩৩) বদলে দেন খেলার চিত্র। হেরে যায় বাংলাদেশ।

২০১২ সালের ২২ মার্চ ফাইনালে পাকিস্তানীদের ২৩৬ রানে বেঁধে ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল মুশফিক বাহিনী; কিন্তু শেষ ওভারে গিয়ে হতাশায় ডুবতে হয় আবারও। ৩ উইকেট হাতে রেখে ৬ বলে ৯ রান করতে না পেরে হেরে যায় মুশফিকের দল।

২০১৬ সালের ৬ মার্চ শেরে বাংলায় আবার ফাইনালে স্বপ্ন ভঙ্গের ম্যাচ হয়ে থাকলো। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচটি প্রবল ঝড়ো বাতাস ও ভারী বর্ষণে ২০ ওভার থেকে কমে ১৫ ওভারে গড়ায়। তাতে ১২০ রানের মামুলি স্কোর নিয়ে ৮ উইকেটে হার মানে মাশরাফির দল।

সর্বশেষ মাত্র ৫১ দিন আগে (২৭ জানুয়ারি) আবারো ফাইনালে বিপর্যয়। দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭৯ রানে হেরে যাওয়া। সারা বছর যে মাঠে অনুশীলনে কাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, যেখানে ক্লাব ক্রিকেট, জাতীয় লিগ, বিসিএল আর বিপিএল খেলে খেলে এতদুর এসেছেন সবাই, সেই শেরে বাংলায় লঙ্কানদের ২২১ রানে বেঁধে ফেলেও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি মাশরাফি বাহিনী। মাত্র ১৪২ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা।

এবার নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে এসে একেবারে শেষ বলে ছক্কা খেয়ে হেরে যায় বাংলাদেশ। আবারও থাকলো ট্রফি অধরা। বাংলাদেশ এখনও কোনো টুর্নামেন্টের ট্রফি জয়েরই স্বাদ পেলো না।

একই সঙ্গে বার বার ভারতের বিপক্ষেই এসে নকআউটে হেরে বসার রেকর্ড অক্ষুন্ন রেখেছে বাংলাদেশ। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০১৬ এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির ফাইনাল, ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল এবং ২০১৮ নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে এসে হারলো বাংলাদেশ।

সম্পর্কিত পোস্ট

আইন-বিধি মেনে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ

banglarmukh official

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশু মারা গেছে

banglarmukh official

জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায়

banglarmukh official

বরিশালে দুর্ঘটনায় নিহত ২

banglarmukh official

পাকিস্তানে ট্রেনে জিম্মি দেড় শতাধিক যাত্রী উদ্ধার, ২৭ সন্ত্রাসী নিহত

banglarmukh official

পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ট্রেন হাইজ্যাক, জিম্মি শতাধিক

banglarmukh official