ব্যাগপত্র গুছিয়ে বিজেপির এখন কেন্দ্রের ক্ষমতা থেকে যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। মঙ্গলবার দিল্লিতে বিজেপি বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে দেখা করার পরই এই মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারকে তীব্র নিশানা করে মমতা জানান, নোট বাতিল থেকে শুরু করে ব্যাংক জালিয়াতি-প্রতিটি বিষয় তৃণমূল স্তরের মানুষের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে এবং বিজেপির এখন ব্যাগপত্র গুছিয়ে যাওয়ার সময় হয়েছে।
এদিন, দিল্লির সংসদ ভবনে বসেই সংবাদ সম্মেলন করে কেন্দ্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা জানান, ‘মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে। আমি প্রায় সব রাজ্যেই ঘুরেছি। আমি মানুষের মনের কথা জানি। নোট বাতিল, ব্যাংক প্রতারণা, পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি)-এর মতো বিষয়গুলি তৃণমূল স্তরের মানুষদের জীবনে অনেক প্রভাব ফেলেছে। বিজেপির এখন ব্যাগপত্র গুছিয়ে যাবার সময় এসে গেছে’।
এদিন, সকালের দিকে সংসদের সেন্ট্রাল হলে গিয়ে প্রথমে দলীয় সাংসদদের সাথে দেখার করেন মমতা। পরে পৃথকভাবে বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীদের সাথে দেখা করেন। যাদের মধ্যে ছিলেন নাশ্যনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) প্রধান শারদ পাওয়ার ও দলের নেতা প্রফুল প্যাটেল, শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাওয়াত, রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেত্রী ও লালু প্রসাদের কন্যা মিশা ভারতী, দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাঝাগাম (ডিএমকে) নেত্রী কানিমোঝি, সমাজবাদী পার্টি (এসপি) রামগোপাল যাদব, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (টিআরএস) সাংসদ কবিতা।
এরপরই সংবাদ সম্মেলনে করে কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে উৎখাত করতে সব বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের কথা জানান মমতা। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই সব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি একসাথে কাজ করুক। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে আমাদের উচিত প্রতিটি রাজ্যে শক্তিশালী বিরোধী দলগুলিকে সহায়তা করা, যাতে প্রতিটি জায়গায় বিজেপির বিরুদ্ধে একজন করে প্রার্থী দেওয়া যায়।
রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সাথে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে মমতা জানান, ‘রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বৈঠক করলে স্বাভাবিকভাবেই রাজনীতি নিয়েই আলোচনা হবে। এতে গোপনীয়তার কিছু নেই। ২০১৯ সালে লোকসভার নির্বাচন অত্যন্ত আকর্ষণীয় হবে’। বুধবারও বিজেপি নেতা শত্রুঘ্ন সিনহা, যশবন্ত সিংসহ একাধিক শীর্ষ নেতার সাথে দেখা হবে বলে এদিন জানান মমতা।
তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, প্যাটেল আন্দোলনের নেতা হার্দিক প্যাটেলসহ আমি সকলের সাথেই যোগাযোগ রাখি। রাহুল আমাকে মাঝেমধ্যেই এসএমএস করেন। আমি কাউকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাই না। আসলে গান করতে যেমন হারমোনিয়াম ও তবলার প্রয়োজন, তেমনি ভারতের উন্নয়নেও বিভিন্ন ধারনা নিতে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের সহায়তা প্রয়োজন। বিজেপির চেয়ে বেশি সাম্প্রদায়িক দল এই দেশে আর কেউ নেই বলেও অভিমত মমতার। তার অভিযোগ বিজেপি হিন্দুত্ব’এর অর্থকেই অসম্মান করে তুলেছে।
তবে অসুস্থ থাকার কারণে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সাথে দেখা হয়নি মমতার। এবিষয়ে মমতা নিজেই জানান, ‘তিনি (সোনিয়া) এই মুহূর্তে হাসপাতালে রয়েছেন, তাকে সুস্থ হতে দিন। আমি তাকে বিরক্ত করতে চাই না’।