ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিতে গিয়ে ক্রিস গেইল বলেছিলেন, ‘আই অ্যাম দ্য ইউনিভার্স বসস! এটা কখনো পরিবর্তন হবে না এবং কবর পর্যন্ত এই স্ট্যাটাস বহণ করে নিয়ে যাবো।
স্বঘোষিত ইউনিভার্স বস কিন্তু ওইসময় ঘোষণা দিয়েছিলেন, ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ খেলেই ৫০ ওভারের ক্রিকেটকে গুডবাই জানিয়ে দেবেন। যদিও টি-টোয়েন্টিটা চালিয়ে যাবেন তিনি।
তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে গিয়ে ক্রিস গেইল বুঝলেন, এখনও ফুরিয়ে যাননি। একের পর এক রেকর্ডই করে যাচ্ছেন। চার ম্যাচের একটি ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। বাকি তিনটির মধ্যে দুটিতে সেঞ্চুরি। ১৩৫ এবং ১৬২ রানের দুই ইনিংসের সঙ্গে একটিতে করেছেন ৫০ রান।
এমন দুর্দান্ত ব্যাটিং করার পর গেইল নিজে থেকে বুঝলেন, তার এখনও দেয়ার অনেক কিছু বাকি। এ কারণে, ওয়ানডে থেকে অবসরের দিনক্ষণ নিয়ে আবারও ভাবতে বসে গেলেন এই ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ তিন ইনিংসে ছক্কা মেরেছেন ৩০টি। পৌঁছে গেছেন দ্বিতীয় ক্যারিবিয়ান হিসেবে ১০ হাজার রানের মাইলফলকে। এমনকি বিশ্বের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে নামের পাশে বসিয়েছেন ৫০০ ছক্কা মারার রেকর্ড। এমন রানের স্বাদ পেয়ে সিদ্ধান্ত বদলাচ্ছেন দ্য ইউনিভার্স বস। অথ্যাৎ, বিশ্বকাপের পরও ওয়ানডে ক্রিকেটে তার তাণ্ডবলীলা দেখবে ক্রিকেট বিশ্ব।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চতুর্থ ওয়ানডেতে ৯৭ বলে ১৬২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পর গেইল বলেন, ‘বয়সের সঙ্গে শরীরও ভাঙে। এ কারণেই ক্যারিয়ারের শেষ লগ্নে টি-টোয়েন্টিতে মন বসিয়েছিলাম। পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে ফিরে রানের স্বাদ পেয়ে খিদেটা আরো বেড়ে গেল। পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটের জন্য শরীরকে আরও বেশি করে প্রস্তুত করছি। বিশ্বকাপের পরই অবসর নয়। আরও কিছু ইনিংসের মধ্যে দিয়ে সমর্থকদের এন্টারটেইন করার ইচ্ছে রয়েছে। শরীর সঙ্গ দিলে বিশ্বকাপের পরও সমর্থকরা গেইল শো দেখতে পাবেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে ওয়ানডে ক্রিকেটে ফিরে আসার পর ১২০.০৬ স্ট্রাইকরেটে গেইল করেছেন ৩৪৭ রান। তিনি বলেন, ‘আমি আমার শরীর নিয়ে কাজ করছি। সুতরাং, আপনারা ক্রিস গেইল শো আরও দেখতে পাবেন। যে কোনো কিছুই দ্রুত পরিবর্তন হয়। আমিও বিশ্বাস করি, আমার শরীর আগামী কয়েকমাসের মধ্যে আরও পরিবর্তন হয়ে যাবে। এরপর দেখবো কি ঘটে। এখনই রয়েছি ৪০-এর কাছাকাছি। এখনই তো অবসরে যাওয়া উচিৎ আমার। তবে সময়ই সব কিছু বলে দেবে। আমি হয়তো আরও কিছুদিন আছি।
উল্লেখ্য শেষ কয়েক বছরে দেশ বিদেশের টি-টোয়েন্টি লিগেই গেইলকে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে বেশি। দেশের জার্সি হ্যাঙ্গারে তুলে রেখেই বিদেশের নামি ক্রিকেট লিগগুলোতে চুটিয়ে খেলেন চলেছেন ৩৯ এর গেইল। এবার বিশ্বকাপের আগে (প্রায় সাত মাস পর) দেশের জার্সি গায়ে চাপানোর সুযোগ পেয়ে নিজের ব্যাটিংকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি। গেইল নিজেও বুঝছেন, এখনই বিদায় বলে দেয়ার সময় নয়।