ময়মনসিংহের ভালুকায় বিস্ফোরণে দগ্ধ খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীর বাঁচলো না কেউই। মাস্টারবাড়ি এলাকায় ৬ তলা ভবনে বিস্ফোরণে গুরুতর আহত দীপ্ত সকালে মারা যান। গত রাতে মারা যান শাহীন মিয়া। বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যু হলো একই বিভাগের চার মেধাবী শিক্ষার্থীর। এদিকে, ভবন মালিকের অবহেলায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে অভিযোগ করে শোকাহত স্বজন ও সহপাঠীরা সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
একে একে তিন সহপাঠীকে হারিয়ে কোন বুঝই যেন মনকে বোঝাতে পারছে না খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাইতো প্রায় ৭ দিন ধরে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যু শয্যায় থাকা দীপ্তের আড়াল হতে চায়নি প্রিয় সহপাঠীরা।
কিন্তু মৃত্যু যে বড়ই নিষ্ঠুর, বন্ধুদের কোনো মায়ায় যে আটকে রাখতে পারলোনা খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বস্ত্র প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী দীপ্ত সাহাকে। একে একে চার সহপাঠীকে হারিয়ে যেন শোকে পাথর তাদের বন্ধু, শিক্ষক ও স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান। আর শুক্রবার সকালে মারা যান দীপ্ত সরকার। গত বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে মারা যান শাহীন মিয়া। ঘটনাস্থলেই ২৫ মার্চ নিহত হন তাওহিদুল ইসলাম।
চার শিক্ষার্থীই খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বস্ত্র প্রকৌশল বিভাগের মেধা তালিকায় এক থেকে সাতের মধ্যে ছিলেন। তারা পড়াশুনা শেষ করে ভালুকার একটি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করছিলেন।
চিকিৎসক বলেন, ‘সকল প্রকার চেষ্টা করেও রোগীগুলোকে আমরা বাঁচাতে পারলাম না। এটা আমাদের জন্যও অনেক দুঃখজনক।’
দীপ্ত সরকার ও হাফিজুরের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে তাদের গ্রামের বাড়িতে সমাহিত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। মেধাবী সহপাঠী আর শিক্ষার্থীদের হরিয়ে শোকাহত তাদে বন্ধু, শিক্ষক ও স্বজনরা। বিস্ফোরণের ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘মোট চার বন্ধুকে আমরা হারিয়েছি। দুই বন্ধুর দাফন হয়েছে। কিন্তু বাকি দুইজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিল, তাই ওদের দাফনে যাওয়া হল না।’
পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। ভালুকার একটি ছয়তলা ভবনের তৃতীয় তলায় বাসা ভাড়া থাকতেন তারা। ২৪মার্চ রাতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে গুরুতর দগ্ধ হন চারজনই।