26 C
Dhaka
মার্চ ১২, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
আন্তর্জাতিক

যক্ষ্মায় মহামারি আকারে মৃত্যু বাড়ার শঙ্কা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

গত দুই দশকে যক্ষ্মা (TB) প্রতিরোধ, পরীক্ষা এবং চিকিৎসা সেবা ৭ কোটি ৯০ লাখের বেশি মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে এবং শুধু গত বছরই প্রায় ৩৬ লাখ ৫০ হাজার মৃত্যু প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে একটি বিশাল অগ্রগতি।

এই সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে আন্তর্জাতিক সহায়তা, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (USAID) থেকে দেওয়া তহবিল।

তবে হঠাৎ করেই এই তহবিল কাটছাঁট করায় অর্জিত সাফল্যগুলো হুমকির মুখে পড়েছে, যা লক্ষ লক্ষ মানুষের বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবনকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার (OECD) তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রতি বছর প্রায় ২০০-২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সরাসরি বিভিন্ন দেশের যক্ষ্মা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা কার্যক্রমে প্রদান করত। এটি আন্তর্জাতিক দাতাদের মোট অনুদানের এক চতুর্থাংশ ছিল।

২০২৫ সালের তহবিল সংকোচনের ভয়াবহ প্রভাব: ২০২৫ সালে এই তহবিল কাটছাঁটের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো। কারণ যুক্তরাষ্ট্র এতদিন সবচেয়ে বড় দ্বিপাক্ষিক দাতা ছিল। ১৮টি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ এই অনুদানের ৮৯ শতাংশ নির্ভরশীল ছিল, যা এখন হুমকির মুখে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে আফ্রিকা, এরপর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল টিবি প্রোগ্রামের পরিচালক ড. তেরেজা কাসায়েভা বলেন, ‘যক্ষ্মা প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় যে কোনো ধরনের ব্যাঘাত—তা আর্থিক, রাজনৈতিক বা কাঠামোগত যাই হোক—মহামারি আকারে মৃত্যু বাড়িয়ে দিতে পারে।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির সময় স্বাস্থ্য সেবায় ব্যাঘাত ঘটায় ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৭ লাখেরও বেশি অতিরিক্ত মৃত্যু হয়েছে। জরুরি ব্যবস্থা না নিলে যক্ষ্মা মোকাবিলায় অর্জিত অগ্রগতি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।’

সংকটাপন্ন যক্ষ্মা প্রতিরোধ ব্যবস্থা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, শীর্ষ ৩০টি যক্ষ্মা-প্রবণ দেশে অর্থ সংকটের কারণে গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়ছে।

স্বাস্থ্যকর্মীদের সংকট: বহু স্বাস্থ্যকর্মী ছাঁটাইয়ের মুখে, টেকনিক্যাল সহায়তা স্থগিত হওয়ায় জাতীয় যক্ষ্মা কর্মসূচি দুর্বল হয়ে পড়ছে।

ঔষধ সরবরাহ চেইনের ব্যাঘাত: কর্মী সংকট, তথ্য বিভ্রাট ও অর্থের অভাবে যক্ষ্মার ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে, ফলে চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে।

পরীক্ষা ও শনাক্তকরণ সঙ্কট: ল্যাব পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে, নমুনা পরিবহন, সরঞ্জাম কেনা ও পরীক্ষার উপকরণ সংকটে রোগ নির্ণয় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

তথ্য ও নজরদারি ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ছে: নিয়মিত রিপোর্টিং ও ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার ওপর নজরদারিতে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।

সম্প্রদায়ভিত্তিক সেবার বিপর্যয়: সক্রিয় রোগী সন্ধান, স্ক্রিনিং ও সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।

এছাড়া, USAID তার সমস্ত যক্ষ্মা গবেষণা কার্যক্রম স্থগিত করেছে, যার ফলে নতুন চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার উন্নয়ন থমকে গেছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ট্রেন হাইজ্যাক, জিম্মি শতাধিক

banglarmukh official

আইসিইউ থেকে পালালেন ‘কোমা’য় থাকা রোগী, হাসপাতালের ভয়ঙ্কর জালিয়াতি ফাঁস

banglarmukh official

গাজা দখলের যে কোনো প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে হবে: তুরস্ক

banglarmukh official

মালয়েশিয়ায় বিনোদন কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশিসহ আটক ৮০

banglarmukh official

সেনা মহড়ার ৮ বোমা গিয়ে পড়ল আবাসিকে, অতঃপর যা ঘটল

banglarmukh official

জুলাইয়ে কিছু ক্ষেত্রে বিক্ষোভকারীদের খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়: জাতিসংঘ

banglarmukh official