সংবাদমাধ্যমের জগতে প্রতিযোগিতা নতুন কিছু নয়। নিত্যনতুন খবর সবার আগে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে চায় সব সংবাদমাধ্যমই। আর এ জন্যই তৈরি হয় প্রতিযোগিতা। হাল আমলে হলিউডে এ নিয়ে চলচ্চিত্রও তৈরি হচ্ছে। দ্য পোস্ট ছবিতেই এর কিছুটা আঁচ পাওয়া যায়। কিন্তু সেই প্রতিযোগিতার আগুনে কি সাংবাদিকের সংসারেও টানাপোড়েন হতে পারে? যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঘটনা অন্তত তা-ই বোঝাচ্ছ!
দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, যেসব আমেরিকান শিল্প-সাহিত্য, কারুকাজ, বিনোদন, খেলাধুলা বা গণমাধ্যমে কাজ করেন, তাঁদের ১১ শতাংশ একই পেশার আরেকজনকে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে বেছে নেন। ২০১২ সালের আদমশুমারিতে এ চিত্র দেখা গেছে। একইভাবে সংবাদমাধ্যমে কাজ করা দুই সহকর্মীর বিয়েও অস্বাভাবিক কিছু নয়।
এমনই এক সাংবাদিক দম্পতি হলেন ড্যানিয়েল ব্রাউন ও সুসান স্লোসার। সানফ্রান্সিসকো বে এরিয়ার অধিবাসী তাঁরা। দুজনেরই পেশা ক্রীড়া সাংবাদিকতা। তবে একই সংবাদমাধ্যমে নয়, আলাদা অফিসে। চলতি সপ্তাহে ব্রাউন একটি কলাম লিখেছেন। তাতে তিনি বলেছেন, পেশাগত প্রতিযোগিতায় সংসারে টানাপোড়েন তৈরি হতে পারে।
ড্যানিয়েল ব্রাউনের লেখা কলাম এরই মধ্যে টুইটারে ভাইরাল হয়ে গেছে। স্লোসারকে অন্যতম পরিশ্রমী ও আস্থাভাজন সংবাদকর্মী হিসেবে উল্লেখ করে ব্রাউন লিখেছেন, ‘পেশাগত কারণে মাঝেমধ্যেই আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাব ঢুকে পড়ে। আমরা দুজনই একই খবরের পেছনে ছুটি। তখন আর দুজনের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর রোমান্টিক সম্পর্ক খুব একটা থাকে না। তখন আমরা হই একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী। সেগুলো ভয়ানক সময়।’
ব্রাউনের দাবি, ভালো বিশেষ খবর জোগাড় করে দেওয়ার জন্য মাঝেমধ্যে নাকি স্লোসান তাঁকে মারতেন! ভালো বক্তব্য পেতেও তিনি নাকি চাপ দিতেন স্বামীকে। এ নিয়ে মন-কষাকষির জেরে এখন তালাক নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন এ দম্পতি।
তবে কলামের বিষয় হওয়াটা পছন্দ হয়নি সুসান স্লোসারের। তাঁর বক্তব্য, ‘কলামে ব্রাউন যা লিখেছে, তার সবই ঠিক। তবে আমার মনে হয়, অনেক অতিরঞ্জিত করেই তুচ্ছ ঘটনাগুলো লেখা হয়েছে।’
প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত স্লোসার আরও বলেন, সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী নন তাঁরা। ব্রাউন হলেন ফিচার লেখক। আর অন্যান্য সাংবাদিক দম্পতিরা কিছু ক্ষেত্রে একসঙ্গে বসে অনেক ইস্যু নিয়ে কাজ করেন। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন বলে তাঁদের পক্ষে তা করা সম্ভব ছিল না। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের সামনে হাজির হতো নৈতিক অনেক প্রশ্ন।
তবে, একই পেশায় থাকা ব্যক্তিকে বিয়ে করাকে ক্ষতিকর বলে মনে করেন না স্লোসার। তিনি বলেন, ‘দিন শেষে আমাদের দুজনের সময় বেশ ভালোই কাটে। আমার মনে হয়, একই পেশায় থাকার বিষয়টি দুজনকেই কিছু সুবিধা দেয়। আমরা একে অন্যকে সহজে বুঝতে পারি। পরস্পরের সমস্যাগুলো ধরতে পারি।’