33 C
Dhaka
এপ্রিল ২৪, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
ইসলাম ধর্ম

ইসলামে স্বাধীনতার মর্যাদা

স্বাধীনতা’ ব্যাপক অর্থবোধক একটি শব্দ। মুখে মুখে স্বাধীন বললেই কোনো দেশ বা জাতি স্বাধীনতা লাভ করতে পারে না। সর্বক্ষেত্রে অন্যায় হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত হয়ে ন্যায্য অধিকার প্রাপ্তিই স্বাধীনতা।

ইসলামে স্বাধীনতার মর্যাদা অনেক বেশি। ইসলাম অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী এক কণ্ঠস্বর। সত্য ও ন্যায় প্রকাশ, অন্যায়-জুলুমের প্রতিবাদ ও বিনা বাধায় ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশই হলো আসল স্বাধীনতা। এ স্বাধীনতা মহান আল্লাহর এক মহা অনুগ্রহ।

দীর্ঘদিন পদে পদে চরম জুলুমের স্বীকার হয়েছিল তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের মজলুম জনগণ। ১৯৭১ সালে ৯ মাসের দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে যে স্বাধীনতা লাভ করেছিল বাংলাদেশ, তার সূচনা ছিল ২৫ মার্চ দিবাগত ‌কালরাত।

পশ্চিম পাকিস্তানের হয়রানি, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন ও দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতে এদিন পূর্ব পাকিস্তানের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ বুকের তাজা রক্ত বিসর্জনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বিনিময়ে পেয়েছে একটি স্বাধীন ভূখণ্ড বাংলাদেশ।

শাসক শ্রেণি নিজেদের যত ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজব্যবস্থার কথা ঘোষণা করুক না কেন, স্বাধীনতা না থাকলে সেখানে নিশ্চিত অন্যায় ও জুলুম সংঘটিত হবে। তাই ইসলাম মানুষের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার তাগিদই নয় বরং দিয়েছে জোরালো তাগিদ।

মদিনা রাষ্ট্রের স্থপতি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরিচালিত সমাজব্যবস্থায় স্বাধীনতার সচিত্র প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছিল। তিনি পরাধীন ব্যক্তিকে আজাদ করার প্রতি মানুষকে উৎসাহ দিয়েছেন। প্রেরণা জুগিয়েছেন অত্যাচারমুক্ত সমাজব্যবস্থার।

শুধু তাই নয়, পরাধীন ব্যক্তিকে স্বাধীন করে সন্তান ও ভাইয়ের মর্যাদাও প্রতিষ্ঠিত করেছেন। মানুষের এ স্বাধীনতা দেয়ার কারণে ইসলামের বিজয় ত্বরান্বিত হয়েছে। সাদা-কালো, ধনী-গরিব এক ছাতার নিচে আশ্রয় নিয়েছে।

সাধারণ ব্যক্তিও সর্বোচ্চ মর্যাদা মদিনা মুনাওয়ারায় ইবাদতের ঘোষক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। আবার যুদ্ধের ময়দানে সেনাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন ক্রীতদাস থেকে মুক্ত হওয়া স্বাধীন মানুষ।

১৯৭১ সালে অসংখ্য জীবনের কুরবানি ও ত্যাগের বিনিময়ে দীর্ঘদিনের শোষণ থেকে মুক্তি লাভ করেছে বাংলাদেশের মানুষ। ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত সে মাসও দিন দরজায় কড়া নড়ছে। স্বাধীনতার মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেয়ার চূড়ান্ত সুযোগ লাভ করেছে এ জাতি।

এ দিবসে মানুষের প্রত্যাশা- পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্ত হয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়বে এ দেশের মানুষ। মৌলিক মানবাধিকার দারিদ্র্যতা, নিরক্ষরতা এবং অজ্ঞতা থেকে মুক্ত হয়ে একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী, শিক্ষিত ও দুর্নীতিমুক্ত জনপদ গড়ে তুলবে। যেখানে সব ভাষা, ধর্ম, বর্ণের মানুষ সমান সুফল ভোগ করবে।

স্বাধীনতার সেসব সুফল লাভ করতে বাংলাদেশী জাতীয়তায় বিশ্বাসী সব মানুষকে দেশের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদা দেখাতে হবে। প্রত্যেককেই সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের বিকল্প নেই।

দেশের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় পূর্ণ স্বাধীনতা লাভের আগ পর্যন্ত প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওই হাদিসের ওপর আমল করতে হবে। তিনি বলেছেন, ‘একদিন ও একরাতের সীমান্ত পাহারা ধারাবাহিকভাবে এক মাসের রোজা পালন এবং সারারাত নফল ইবাদতে কাটানো অপেক্ষা উত্তম।’ (মুসলিম) অন্যত্র তিনি বলেছেন, ‘একদিন সীমান্ত রক্ষার কাজে নিযুক্ত থাকা হাজার দিনের মনজিল অতিক্রম অপেক্ষা উত্তম।’ (তিরমিজি)

নিজ দেশের সীমানা ও নিরাপত্তায় সার্বিক সহযোগিতা করা জনগণের জন্য যেমন ঈমানের একান্ত দাবি তেমনি শাসকশ্রেণির দায়িত্বও রয়েছে অধিক। তারা দেশের মানুষের সার্বিক ব্যবস্থাপনা সুন্দর অবাধ ও নিরপেক্ষ করবে। তবেই মানুষ লাভ করবে স্বাধীনতার সর্বোচ্চ সুখ ও শান্তি।

আল্লাহ তাআলা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষকে আজকের এ দিনে স্বাধীনতার মান ও মর্যাদা রক্ষায় সর্বোচ্চ দায়িত্ব যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন।

আমিন।

সম্পর্কিত পোস্ট

রোজা রেখে আতর-পারফিউম ব্যবহার করা যাবে?

banglarmukh official

গর্ভবতী নারীর রোজার মাসয়ালা

banglarmukh official

তারাবির নামাজ ছুটে গেলে করণীয়

banglarmukh official

রোজা অবস্থায় কি দাঁত ব্রাশ করা যাবে?

banglarmukh official

চাঁদ দেখা গেছে, সৌদি আরবে রোজা শুরু শনিবার

banglarmukh official

শাবান মাসে কত তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখা যাবে

banglarmukh official