অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই তাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) ওপর নির্ভরশীল। রাজস্ব অগ্রযাত্রায় যে পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তার মূল চালিকাশক্তি ভ্যাট। আগামী অর্থবছর থেকে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে।
জুলাইয়ে বাস্তবায়ন হতে যাওয়া ভ্যাট আইনে একাধিক স্তর থাকবে। এক্ষেত্রে সিঙ্গেল রেটের পরিবর্তে সহনীয় মাল্টিপল রেট থাকবে। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে কোনো ভ্যাট দিতে হবে না।
সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের নিজ কার্যালয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) টেকনিক্যাল মিশন সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এ আইনের আওতায় ভ্যাট আদায়ে ফাঁকি রোধে ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস (ইএফডি) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। এনবিআরে ইএফডি ক্রয় প্রক্রিয়া চলছে। অর্থাৎ কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য কিনলে মূল্য ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে পরিশোধ করবে ক্রেতা, যা থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ভ্যাটের দৈনিক ও মাসিক হিসাব পাওয়া যাবে। এমনকি এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীর সব বেচা-কেনার তথ্যও সংরক্ষিত থাকবে। তাই ভ্যাট ফাঁকির কোনো সুযোগ থাকবে না। এছাড়া এই ভ্যাট আদায়ে ফাঁকি রোধে ইএফডি ব্যবহারে এনবিআরে জনবল নিয়োগ দিলে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ গত ১০ বছরে ৭ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জনে সমর্থ হয়েছে। গত অর্থবছর অর্জিত হয়েছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি । চলতি অর্থবছর ৮.১১ থেকে ৮.২৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের আশা রয়েছে। স্বাস্থ্য, খাদ্য, শিক্ষাসহ প্রায় সব খাতে অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। ১০ বছর আগের বাংলাদেশ আর বর্তমান বাংলাদেশে অনেক তফাৎ রয়েছে। এখন সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ।
মন্ত্রী বলেন, আগামী বাজেটে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা জনগণের সহযোগিতায় অর্জনে চেষ্টা করা হবে। লক্ষ্য যদি বড় থাকে, তা অর্জনের চেষ্টাও হয় বৃহৎ। সরকার সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।