আগের দুই দিনের তুলনায় ভোগান্তি কমেছে ট্রেনের টিকিটে। স্টেশনে ভিড়ও কমেছে। আগের দিনের মতো রোববার অচল হয়নি অনলাইন সার্ভার। তবে সহজে ঢোকা গেলেও নিবন্ধনে ভোগান্তি এবং টাকা পরিশোধ করার পরও টিকিট না পাওয়ার কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় দুই লাখ গ্রাহক অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন। রোববার সকাল ৮টা থেকে চার ঘণ্টায় সাত হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে অনলাইনে।
টানা ১৫ বছর ট্রেনের টিকিট বিক্রির দায়িত্বে ছিল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস)। দরপত্র জটিলতা ও আইনি লড়াইয়ের পর টিকিটের ঠিকাদারি পেয়ে ২৫ মার্চ থেকে দায়িত্ব নেয় সহজ লিমিটেড। অপারেটর বদলের কারণে পাঁচ দিন হাতে লেখা টিকিট দেওয়ার পর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সহজ-এর ব্যবস্থাপনায় দেশের ৭৭টি স্টেশনে কম্পিউটারাইজড টিকিট বিক্রি শুরু হয়।
শুরু থেকেই সঙ্গী হয় দুর্ভোগ। নতুন ওয়েবসাইট ও সার্ভার বারবার অচল হওয়ায় স্টেশনে হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমে যায়। ১০-১২ ঘণ্টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে টিকিট প্রত্যাশীদের।
কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারোয়ার সমকালকে জানিয়েছেন, পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। রোবাবার সার্ভার ডাউনের ঘটনা ঘটেনি। টিকিট বিক্রিতে আগের ধীরগতি নেই। যাত্রীরা স্বাভাবিক সময়ের মতোই টিকিট পাচ্ছেন।
সিএনএস নিজস্ব ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করত। রেলকে অ্যাপ বুঝিয়ে দেয়নি সিএনএস। ফলে শুক্রবার থেকে শুধুমাত্র রেলওয়ের http://www.eticket.railway.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকিট দেওয়া হচ্ছে। নতুন ওয়েবসাইটে টিকিট পেতে সব তথ্য দিয়ে নতুন করে নিবন্ধন করতে হচ্ছে।
সহজ লিমিটেডের জনসংযোগ বিভাগের ম্যানেজার ফারহাত আহমদ সমকালকে বলেছেন, সিএনএস ১৫ বছরে ৪০ লাখ গ্রাহকের নিবন্ধন করেছে। সহজ দায়িত্ব নেওয়ার পর ৩৬ ঘণ্টায় দুই লাখ গ্রাহক নিবন্ধন করেছেন। শনিবার সকাল ৮টায় অনলাইন ‘লাইভ’ হওয়ার পর এক মিনিটে ২২ লাখ ‘হিট’ হয়েছিল। সে কারণে সার্ভার অচল হয়ে যায়। এ সমস্যা দূর হওয়ায় গ্রাহকরা সহজেই নিবন্ধন করে টিকিট করতে পারছেন।
টিকিটিংয়ে ইন্টিগ্রেটেড ব্যবস্থা চালু করতে প্রকল্প নিয়েছে রেলওয়। ফারহাত আহমদ বলেছেন, রেল যে সব ফিচার চেয়েছে, তার সব কিছু যোগ করে টিকিটিং করতে ১৮ মাস সময় লাগবে। রেল যখন বলবে তখন অ্যাপ চালু করা হবে। সহজ নিজস্ব নয়, রেলের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই টিকিট বিক্রি করবে।
রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী বলেছেন, আগের অপারেটর তার নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করায়, নিবন্ধিত সব গ্রাহকের ডাটা তাদের কাছেই রয়ে গেছে। অ্যাপও তাদের রয়ে গেছে। রেলের সাইটের মাধ্যমে বিক্রি হওয়ায়, ভবিষ্যতে অপারেটর বদল হলেও সব তথ্য রেলের কাছেই থাকবে।
আগের দিন ওয়েবসাইটে ঢুকতে না পারলেও রোববার এই প্রতিবেদক নিবন্ধন করতে পেরেছেন তিনবারের চেষ্টায়। প্রথম দুইবার ওটিপি এলেও, তা গ্রহণ করছিল না। ফারহাত আহমদের দাবি, নিবন্ধনকারী যে কোম্পানির ইন্টারনেট ডাটা ব্যবহার করেছেন সেটির সঙ্গে রেলের সার্ভারের সংযোগের সমস্যার কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে।
ট্রেন যাত্রীদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে রোববারও নানা অভিযোগ এসেছে। আকিবুল ইসলাম নামে এক যাত্রী জানিয়েছেন, দুইবার টাকা কাটলেও তার মেইলে টিকিট আসেনি।
খরচ কমাতে সহজ কানাডায় অ্যামাজনের সার্ভারে সাইট হোস্ট করেছে। ফলে ল্যাটেন্সি বেড়েছে- এ অভিযোগের বিষয়ে ফারহাত আহমদ বলেছেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি জেনে বলবেন।