রমজানে দ্রব্যমূল্য বেড়ে ‘মুখে যেন কালি না পড়ে’ সে বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সহায়তা চেয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার সচিবালয়ে ‘আসন্ন রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্থানীয় উৎপাদন, আমদানি, মজুত অবস্থা ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা’ বিষয়ে বৈঠক শেষে মন্ত্রী একথা বলেন। এসময় ব্যবসায়ী নেতারাও উপস্থিতি ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের বলেন, ‘রমজানে মানুষের ওপর যেন চাপ (নিত্যপণ্যের অতিরিক্ত দাম) না পড়ে, আমিও তো ব্যবসায়ী থেকেই এসেছি। সবাই তো বলেন যে, বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ী। ব্যবসা করেই এখানে এসেছি। আমি যদি ভালো না করতে পারি তাহলে আপনাদেরই বদনাম হবে।’
তিনি বলেন, ব্যবসায়ী একজন লোককে মন্ত্রী বানানো হয়েছে, ব্যবসায়ীরাও মন্ত্রীর লোক তাই না? এই ফিলিংসটা থাকা দরকার। কমার্স মিনিস্টারকে ফেরত দেবেন না, ওনার মুখের ওপর যেন কালি না পড়ে- এটা আপনাদের মাথায় রাখতে হবে।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে টিপু মুনশি আরও বলেন, সারাজীবন টেবিলের ওই পাশেই বসেছি, মন্ত্রী হয়ে এপাশে আসছি। আমার আচরণ ওই পাশেই থাকবে। ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা দেব, যতটা লজিক্যাল। মানুষের কষ্টের জায়গায়টায় মানুষের কাছে থাকবেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আট আনা লাভ করতে পারলে যথেষ্ট বলেছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাদের স্টক রয়েছে, দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। সেদিকে আমার মনে হয় সবাই যদি সততার সাথে কাজ করি। আমরাও ট্র্যাক (তদারকি) রাখবো, এটা যেন না বাড়ে। মেইনটেইন করতে হবে।
তিনি বলেন, রমজান মাস পবিত্র মাস- এ মানসিকতায় এ সময়ে সুযোগ নেয়া ঠিক না, (এতে) আল্লাহ খুশি হবেন।
টিপু মুনশি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের কথায়- গ্যাসের সাপ্লাই বা চাঁদাবাজি বড় হেডেক। চাঁদাবাজি শক্ত হাতে হ্যান্ডেল করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন, কোনো অবস্থায়ই চাঁদাবাজি মানবো না। আমরা সব জায়গায় পয়েন্ট রাখব, ব্যবসায়ীদের যাতে চাঁদাবাজির জন্য ভোগান্তি না হয়।’
তিনি বলেন, রংপুরে যে সবজির দাম ১০ টাকা বা ১২ টাকা তা ঢাকায় ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয় চাঁদবাজির জন্য। পথে পথে চাঁদা দিতে হয়। শ্রমিকরা টাকা খায়, পুলিশরা টাকা খায়, অমুক টাকা খায়, তমুক টাকা খায়, বাজার সমিতি টাকা খায়- এসব কথা শুনতে হয়। এক গাড়ি পণ্য আনতে যে কত টাকা খরচ হয় তার একটা হিসাব ধরিয়ে দেয়, এত জায়গায় এত চাঁদা দিয়ে আসছি। সেটাও তো প্রোডাক্টের ওপর গিয়ে পড়ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পজেটিভ আছে। আমরা এটা কন্ট্রোল করার চেষ্টা করব। থানা থেকে এসপি লেবেল বা সেল করে দেব, যাতে কোনো জায়গা থেকে কল করলে ফেস করা যায়।’
সভায় বাণিজ্য সচিব মফিজুল ইসলাম, এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, মেঘনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফা কামাল, টিসিবি চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. হাসান জাহাঙ্গীরসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।