দেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা আগামী দিনের চাহিদা পূরণ করবে না। তাই শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে বেসরকারি খাতে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দেশের খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ও পেশাজীবীদের সঙ্গে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনা সভা শেষে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বেসরকারি খাতকে নিয়ে আমরা ভাবছি। বিদেশে তো শিক্ষা খাত বেসরকারিভাবেই চালানো হয়। আমাদের এখানে এখনও শুরু করিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রীও এ বিষয়ে কথা বলবেন। সবাইকে নিয়েই আমি মনে করি, একটা বাস্তবধর্মী চিত্র আনতে পারব।’ এটা তার ব্যক্তিগত মতামত বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এখন যে শিক্ষা ব্যবস্থা, তা আগামী দিনের চাহিদা পূরণে সাহায্য করবে না। সে জন্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে ওই জায়গায় নিতে হলে আমরা কীভাবে এটা মেকআপ করব? এমনও হতে পারে, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা যেমন আছে, সেটাকে আমরা উন্মুক্ত করে দিতে পারি। শিক্ষা কিন্তু এখন অনেক পুঁজি বিনিয়োগের জায়গা।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা (বেসরকারি খাত) আরও যারা দেশে আছে, তাদেরকে সাথে নিয়ে নতুন নতুন মাত্রা নিয়ে সেগুলো করতে পারবে। সেগুলো করলেই আমরা সাবজেক্টওয়ারী ক্লাস নিতে পারব। শক্তিশালী অনেক অনেক কম্পোন্যান্ট আছে। রোবোটিক্স, ম্যাটেরিওসায়েন্স, কোয়ান্টাম পদ্ধতি, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সসহ নানান টেকনোলজি। এই টেকনোলজির ব্যবহার তো আমাদের শিখতে হবেই। আর কয়েকদিন পর কেউ ল্যাপটপ ব্যবহার করবে না। ল্যাপটপ চলে যাবে স্মার্টফোনে। সুতরাং আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। নাহলে আমরা পিছিয়ে যাব।’
সভায় আগত আলোচকরা আগামী অর্থবছরে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন বলেও জানান মুস্তফা কামাল। এই খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি। একই সঙ্গে সব খাতেই বরাদ্দ বাড়ানো হবে বলে অর্থমন্ত্রী জানান।
এখন থেকে যে কেউ চাইলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে পারবে না জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খাড়া করলেন। পাঁচজনের চাকরির ব্যবস্থা করলেন। এদের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিলেন, এগুলো আমরা শুনি। খারাপ লাগে। একজন শিক্ষক যদি এভাবে টাকা দিয়ে চাকরিতে প্রবেশ করেন, তাহলে তাদের কাছ থেকে ভালো কী পাব। বিষয়টা বুঝতে পেরেই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা আর প্রাইভেট সেক্টর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাই না। প্রয়োজন হলে যতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করা দরকার, সেটা সরকার করবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি বাস্তবায়নে বাস্তবধর্মী বিশ্লেষণ হচ্ছে। স্টাডি শেষ হলেই যে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আমরা লিস্ট করেছি, সেগুলো যদি ঠিক থাকে তাহলে আমরা এমপিওভুক্ত করব পর্যায়ক্রমে।’
আগামী অর্থবছরে মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়বে এ কারণে যে, এগুলো বাস্তবায়নের অনেকটা শেষ দিকে চলে এসেছে।’