রাজধানীর ভাটারার সাঈদনগরের বাসিন্দা গাজী সিদ্দিকুর রহমান। নিজের আবাসিক ভবনের ১৩টি চুলায় ১০ বছর ধরে তিনি তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ব্যবহার করছেন। এসময়ে ওই ভবনে প্রায় ১২ লাখ টাকার গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছে।
রোববার (১৩ মার্চ) ঢাকা জেলা প্রশাসন ও তিতাস গ্যাসের যৌথ অভিযানে অবৈধভাবে গ্যাসসংযোগ ব্যবহারের বিষয়টি ধরা পড়ে। শুধু গাজী সিদ্দিকুর রহমান নয়, ভাটারার সাঈদনগর এলাকার অসংখ্য বাসায় একইভাবে অবৈধ গ্যাসসংযোগ ব্যবহার করা হচ্ছিল।
অভিযানে এসব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং ব্যবহারকারীদের জরিমানা করা হয়। গাজী সিদ্দিকুর রহমানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারী গাজী সিদ্দিকুর রহমান জানান, ২০১২ সালে তিনি বৈধ গ্যাসসংযোগের জন্য আবেদন করেছিলেন। তবে অনুমোদন পাননি। বাধ্য হয়ে অবৈধ গ্যাসসংযোগ ব্যবহার করছেন।
তার বাসায় গ্যাসসংযোগ দেওয়া এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করে জাগো নিউজকে বলেন, ‘তিতাসের লোকজন আমাকে লাইন দিয়েছেন। আমার কী দোষ? আমি তো বৈধতার জন্য আবেদন করেছি। তারা যদি বছরের পর বছর লাইন না দেন, তাহলে তো বাধ্য হয়ে আমাকে অবৈধটা নিতে হয়েছে। আর এটাও তো ফ্রি না। দুই বছর হলো তিতাসের লোকজন এসে মাসে মাসে টাকা নেন। আমার গ্যাস দরকার, বাধ্য হয়ে নিয়েছি।’
তিতাস গ্যাস ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযান
অভিযানে দেখা গেছে, কেউ মাটির নিচে দিয়ে রাইজার বসিয়েছেন, কেউ আগে থেকেই রাইজার খুলে রেখেছেন। সকালে রান্না করেছেন। কিন্তু অভিযানের খবর পেয়ে দুপুরের আগেই রাইজার কেটে গ্যাসসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন।
অভিযান চলাকালে অনেকে স্বেচ্ছায় অবৈধ গ্যাসসংযোগ ব্যবহারের কথা স্বীকারও করেছেন। তাদের দাবি, তিতাসের কর্মকর্তা পরিচয়ে তাদের অবৈধভাবে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এর জন্য মাসে মাসে তারা এসে টাকাও নিয়ে যান।
দিনভর এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার হামিদ। এসময় তিতাসের ঢাকা মেট্রো বিপণন বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক এনামুল হক উপস্থিত ছিলেন।
জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার হামিদ বলেন, ‘ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্দেশক্রমে আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এক দফা সংযোগ বিচ্ছিন্নের পর অবৈধভাবে যদি কেউ আবার লাইন ব্যবহার করে, তবে এ অপরাধে তাদের জেলও হতে পারে।’