পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যে লে’ গভর্ণর পদপ্রার্থী ড. নীনা আহমেদ বলেছেন, একাত্তরের যে চেতনায় ৩০ লাখ বাঙালি রক্ত দিয়েছে, মানবতার মুক্তির জন্যে সেই চেতনায় আবারও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় এসেছে। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে ব্যালট যুদ্ধে ব্যাপকভাবে অংশ নিয়ে। যারা আমেরিকায় সিটিজেনশিপ গ্রহণ করেছেন, তাদেরকে ভোটার হিসেবে তালিকাভূক্ত হওয়া জরুরি।
শনিবার নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে বেলজিনো পার্টি হলে প্রবাসীদের এক সমাবেশে ড. নীনা এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, নভেম্বরের নির্বাচনে আমেরিকার নীতি-নৈতিকতা সমুন্নত রাখতে বদ্ধ পরিকর লোকজনকে জয়ী করতে হবে।
ড. নীনা আহমেদের সঙ্গে ফরিদা ইয়াসমিন
সমাবেশে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, নিজেদের প্রয়োজনে এবং জাতীয় স্বার্থে বাঙালিরা এক হতে পারেন-এর প্রমাণ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। সেই চেতনায় বহুজাতিক এই সমাজেও বাঙালিরা যে অধিকার-মর্যাদার প্রশ্নে এক হতে পারেন-আজকের এ অনুষ্ঠান তারই বড় প্রমাণ। ঐক্যের উদাহরণকে সর্বক্ষেত্র জাগ্রত রাখতে হবে।
ফরিদা ইয়াসমিন আরও বলেন, ড. নীনা একজন বাঙালি, বাংলাদেশি, এবং আমেরিকান। সবকিছুর উর্দ্ধে তিনি মানবিক বিকেসম্পন্ন একজন মানুষ। সে জন্যে দলমতের উর্দ্ধে উঠে সকলেই তাকে সমর্থন দিচ্ছেন।
নিউ জার্সির কাউন্সিলম্যান, বিজ্ঞানী ও মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরন্নবী বলেন, এখন সময় হচ্ছে ঘুরে দাঁড়ানোর। ড. নীনার মত সৎ, পরিশ্রমী, উদ্যমী মানুষকে নির্বাচিত করার মধ্য দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রে বাঙালির উত্থানের পথ সুগম হতে পারবে। তৃণমূলে ২৫ বছরের অধিক সময় যাবত কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে ড. নীনার। অভিবাসী সমাজের পরীক্ষিত বন্ধু হচ্ছেন তিনি। তার মধ্য দিয়েই মার্কিন মুলুকে বাঙালির কর্মনিষ্ঠার দৃষ্টান্ত স্থাপিত হবে।
পিপলএনটেকের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিফ উচ্ছাসের সাথে বলেন, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে ড. নীনা নিজের সামগ্রিক যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় লে. গভর্নরের পথ ধরে স্টেট গভর্নর এবং পরবর্তীতে ইউএস সিনেটর হতে সক্ষম হবেন-যদি আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখতে পারি।
ফ্রেন্ডস অব ড. নীনা ব্যানারে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশ সঞ্চালনা করেন হোস্ট কমিটির কো-চেয়ার ও মার্কিন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা মাফ মিসবাহউদ্দিন, কো-চেয়ার ও জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকার সাধারণ সম্পাদক জেড চৌধুরী জুয়েল এবং সাংবাদিক-মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার।
সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন উত্তর আমেরিকায় বিশিষ্ট সমাজসংগঠক ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর আনোয়ার হোসেন, ফোবানার নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব জাকারিয়া চৌধুরী, ইমাম মুফতি আনসারুল করিম প্রমুখ। বিভিন্ন সিটি কাউন্সিলে নির্বাচিত বাংলাদেশি-আমেরিকানদের কয়েকজনও ছিলেন সরব। এরা হলেন পেনসিলভেনিয়ার আপারডারবি সিটির কাউন্সিলম্যান শেখ সিদ্দিক, মিলবোর্ন বরোর ভাইস প্রেসিডেন্ট নূরুল হাসান, কাউন্সিলম্যান মনসুর আলী মিঠু, নিউইয়র্কের হাডসন সিটির কাউন্সিলম্যান শেরশাহ মিজান, নিউ জার্সির প্লেইন্সবরো সিটির কাউন্সিলম্যান ড. নূরন্নবী এবং হেলিডন সিটির ম্যানচেস্টার ইউটিলিটিস অথরিটির কমিশনার দেওয়ান বজলু চৌধুরী। বিশিষ্টজনদের মধ্যে আরও ছিলেন ডা, ওয়াদুদ ভূঁইয়া, ফারহানা হানিফ, বেদারুল ইসলাম বাবলা, নার্গিস আহমেদ, এডভোকেট মজিবর রহমান, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ময়নুল ইসলাম, জেবিবিএর নেতা শাহনেওয়াজ ও মাহাবুবুর রহমান টুকু, যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ আহমেদ, গিয়াস আহমেদ, ড. দেলওয়ার হোসেন, রানা চৌধুরী, আব্দুন নূর বড়ভুইয়া প্রমুখ।
বক্তারা উল্লেখ করেন, মে মাসের মাঝামাঝিতে ডেমক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী বাছাইয়ের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনের বৈতরণী পাড়ি দিতে দরকার অর্থ। বিশেষ করে মার্কিন টিভিতে বিজ্ঞাপন দিতে বড় অংকের বিল লাগে। তাই সাধ্য অনুযায়ী সকল প্রবাসীকে অর্থ-সহায়তা দিতে হবে।
এ অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণকারি কম্যুনিটি লিডার ও ডেমক্র্যাট মোহাম্মদ এন মজুমদার ঘোষণা দেন যে, শীঘ্রই নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসে আরেকটি সমাবেশ করা হবে নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের জন্যে। সকলে বিপুল করতালিতে তাকে সহায়তার অঙ্গীকার করেন। আমেরিকানদের উদ্যোগে।