রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের সময় নিহত কুরিয়ারকর্মী নাহিদ হাসানের বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দিনগত রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ডিএমপির রমনা বিভাগের নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) শরিফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, নিহত নাহিদের বাবা মো. নাদিম হোসেন বাদী হয়ে নিউ মার্কেট থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় তিনি অজ্ঞাত আসামি উল্লেখ করেন। সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত একটি মামলা হয়েছে। আরও দুটি মামলা হতে পারে।
এসি শরিফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান বলেন, নিহতের ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্তের কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। নাহিদকে যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে, নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ ম কাইয়ুম বলেন, দফায় দফায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনায় মোট তিনটি মামলা হবে। পুলিশ বাদী হয়ে দুইটি ও নিহতের পরিবার বাদী হয়ে একটি মামলা করবেন।
ওসি বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে দুইটি মামলা করবে। মামলার এজাহার লেখার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। রাতেই মধ্যেই মামলা এন্ট্রি হবে।
জানা যায়, তিন ছেলের মধ্যে বড় ছিলেন নিহত নাহিদ। অভাবের সংসারে ১০ বছর বয়সেই আয়ের পথ বেছে নিয়েছিলেন। তখন তিনি একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করতেন। সর্বশেষ কাজ শুরু করেন একটি কুরিয়ার সার্ভিসে ডেলিভারি ম্যান হিসেবে।
ঘটনার দিন মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) কামরাঙ্গীরচরে বাসা থেকে বের হয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত হন নাহিদ। ময়নাতদন্তে তার শরীরে বেশকিছু ক্ষত পাওয়া গেছে। এতে স্পষ্ট তার ওপর হামলা হয়েছিল।
এর আগে সোমবার রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও মঙ্গলবার সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ। যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অর্ধ শতাধিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। আর সংঘর্ষের মাঝে পড়ে মারা যান নাহিদ।