শিল্পমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার সহযোগিতায় ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা ঝালকাঠিতে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের ডিপো সুপারের কাছে চাঁদা দাবি করেছেন। এ ঘটনায় এসআই বশিরকে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
ঝালকাঠি মেঘনা ডিপোর কর্মচারীরা জানান, শহরের ডাক্তারপট্টি এলাকার বাসিন্দা সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. ইয়াসিন ভুইয়া মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটিডের জেলা ডিপো ব্যবস্থাপক মো. মাহবুবুর রহমানের মোবাইল ফোনে শনিবার কল দেন। এ সময় নিজেকে শিল্পমন্ত্রীর লোক পরিচয় দিয়ে তার অবস্থান জানতে চান ইয়াসিন। ডিপো ব্যবস্থাপক বাইরে আছেন জানালে ইয়াসিন রোববার দুপুরে তার কার্যালয়ে আসার কথা বলেন।
রোববার দুপুরে ইয়াসিন শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মো. বশির উদ্দিন ও এক পুলিশ কনেস্টবলকে নিয়ে একটি প্রাইভেট কারে মেঘনা ডিপোতে যান। পরে ব্যবস্থাপককে একটি শপিংব্যাগে উপহার সামগ্রী তুলে দিয়ে সেগুলো শিল্পমন্ত্রী তার জন্য পাঠিয়েছেন বলে জানান।
এ সময় মুঠোফোনে ইয়াসিন অপর একজনের কাছে কল দিয়ে ডিপো ব্যবস্থাপককে শিল্পমন্ত্রীর কথা বলবেন বলে ধরিয়ে দেন। ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে ডিপো ব্যবস্থাপককে বলা হয়, ‘ওরা আমার লোক, যা বলে সে অনুযায়ী কাজ করুন।’ এরপর ফোন কেটে দিলে ইয়াসিন শিল্পমন্ত্রীর কথা বলে ডিপো সুপারের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
বিষয়টিতে সন্দেহ হলে ইয়াসিন ও পুলিশের উপপরিদর্শক মো. বশির উদ্দিনকে বসিয়ে রেখে তিনি বাইরে বের হন। অফিসের অন্য স্টাফদের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করে থানায় ফোন দেন। থানা থেকে উপপরিদর্শক মিঠুনকে মেঘনা ডিপোতে পাঠানো হয়। উপ-পরিদর্শক মিঠুন এসআই বশিরকে দেখে বিভ্রান্ত হন। আর এ সুযোগে ইয়াসিন ও তার সঙ্গীরা কৌশলে বের হয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। সম্পূর্ণ বিষয়টি ডিপোর সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়।
এ ব্যাপারে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মো. বশির উদ্দিন বলেন, আমাকে ভুল বুঝিয়ে ডিপোতে নিয়ে যায় ইয়াসিন। আমি শুধু ডিপো ব্যবস্থাপকের কক্ষে ঢুকে বসেছিলাম, কোনো কথা বলিনি। আমি প্রতারণার শিকার হয়েছি।
ঝালকাঠি থানার ওসি (তদন্ত) আবু তাহের বলেন, খবর পেয়ে আমরা পুলিশ পাঠিয়েছি। কিন্তু পুলিশ গিয়ে ইয়াসিনকে পায়নি। ঘটনার সঙ্গে এক পুলিশ কর্মকর্তার নাম জড়িয়ে পড়েছে, কিন্তু আমরা জেনেছি তিনিও প্রতারণার শিকার।
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মো. জোবায়েদুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে এখনও কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আপাতত পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্ব থেকে এসআই বশিরকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে।