ভাঙ্গন (পর্ব – ৬)
আমার উস অইল । মাদবর সাব কইতে ছিল- : মজিদ মিয়া, তুমি এই হানে থাইক, আমি একটু আইতাছি । মাদবরের কতা হুনছি, তহনও চোউক খুইল্লা কিছু দেহি নাই, দেহার চেষ্টা করছি কিন্তু সব দেহি আন্দার ! পোলাডার কতা মোনে পড়ছে হেরেও দেহিনা, দুই পাশে আত দিয়া দ্যাকলাম, নাহ, আতেও কিছু বাজে নাই । কারোর কাছে জিগামু হেই বোল গলা দিয়া বাইরয় না । ইসারা করলাম মতন এ্যাক মহিলা আমার আত ধইরা জিগাইল – : কিছু কইবা ? তারে আমার কোলের দিগে দেহাইলাম, হেয় বুজলো কিনা বুজিনাই, তয় একটু পরেই আলাপ পাইলাম আমার গ্যাদাডা দূরে কান্তাছে । এইবার শরীলের ব্যক শক্তি দিয়া ওডোনের চেষ্টা করলাম আর দেহার লইগ্গাও চেষ্টা করলাম । এইবার একটু আবছার মতন কিছু দেহা যায় ।
আন্দাইরা রাইতে যেমন শক্ত কিছুরে ফিনফিন্না পাতলা মনে অয় হেইরম কিছু । গলাডা হুগাইয়া খড়খড়া অইয়া গেছে, একটু ভিজাইতে পারলে মনে অয় কতা কওন যাইতো । গলার মইদ্দে হুগাইয়া এমন ফাক অইয়া রইছে যেমন পাতার বাঁশির মইদ্দে বেশি ফাক থাকলে বাঁশি বাজেনা হেইরহম আমার গলাও ফাক অইয়া রইছে । কিছু কউতে গেলে হেই ফাক দিয়া ব্যাক বাইরইয়া যায় । শব্দ অয় না, খালি বাতাশডা বা্ইরইয়া যায় । হের পরেও আমি কিয়ের দফাইতে আছিলাম, হেই দফানির কষ্টে শইলো যেডুক বল আছিল হেইয়া শ্যাষ অইয়া গ্যাছে ! আবারও মাতাডা ঘুড়াইয়া কেমন যানি অইয়া গেলো । কিচ্ছু কইতে পারুম না । তই হেসে যেরে ধলপরের সুম আমার ঘুম ভাইঙ্গা গেছে, দেহি আমি এ্যাকখান সুন্দর খাডোত । অনেক সুন্দর বিছানাত ঘুমাইছি । কিনারে গ্যাদাডা হঘুমাই রইছে । ঐপিডো আরও কেউ ঘুমাইছিল, বালিশ দুইহান অহনও হাজাইন্না আছে ।
কিন্তু কোনও মানুষ তো দেহিনা ! এই সব চিন্তা মাতাত হানলেও আমার ভাবনের সময় নাই, কাইলকা বিয়ালের সুম এ্যকবার পেইচ্ছাব করছিলাম, অহন আবার প্যাড ফুইলা ওটছে । কোনদিক দিয়া কোনদিক যাইম হেই চিন্তায় অস্তির অইয়া গেছি । এই দিগে গেদাডাও মুইত্তা-টুইত্তা বিছানা নষ্ট করছে কিন্তু ওরে যাগাইনায় । বাইরের দিগে পক্কি বোলোনের আলাপ পাইয়া বুজ্জি বেহান অইছে তয় ঘরের মইদ্দে বোজোন যায়না । ডিম করা হ্যারিকেনের আলোতে যেডুক দেহা যায় হেডুক দেইক্কা আউজাইন্না দুয়ার খুইল্লা বাইরাছি । দুয়ার দিয়া বাইরইয়া দেহি ঘরের কিনারে মাইনষের অবাব নাই, খাতা-বালিশ ছাড়া মাইনষে যে এইরোম ঘুমাইতো পারে হেইয়া না দ্যাকলে বুজন যায়না ! কোনও মতে ব্যাক্কের মইদ্দে দিয়া বাইরাইছি ।
কিন্তু কোন হানে বদনি আছে হেইয়া তো জানি না তয় আন্তাজে ঘরের পিছে গেছি, হেইহানো কোনও বেড়া-টাট্টি দেহিনা, ওদিগে আর খোঁজনেরও সময় নাই, কোনও মতে এ্যাকটা গাছের গোরাত বইয়া কাম হারছি । হেসে আবার ঘরে গিয়া গেদাডারে বোহের লগে ধরছি । মনে অইল গেদাডা এ্যতক্ষণ এই আশায়ই আছি, মুহের লগে দুদটা ধরনের লগে লগে দুই আত দিয়া ধইরা খাওন বাজাইছে । অহন আবার আমার মনে অইতে লাগল গ্যদার বাহের কতা । মানুষটার কী অইল ? হেয় কি বাঁইচা নাই ? যতি থাহে হেইলে কোন হানে আছে ? কই ঘুমাইছে, কি খাইছে ? এই মতন ম্যালা কোচ্চেন মোনে অইল । হের পরেইদা মোনে অইল মজিদ মিয়ার কতা, হেয় কৈ ? হেরে কি কেউ খাইতে দিছে ? কোনহানে হুইছে মানুষটা ? আমার লগে রাইতকা কে হুইছিল ? মাদবর সাব গেলো কৈ ? আমি যেইহানো হুইছি হেইডা ক্যার ঘর ? (চলবে)