বাংলাদেশের দুই টাকা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর কাগুজে নোট! এমন খবরে হয়তো আশ্চর্য হয়েছেন। কিন্তু জানেন কি? পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর নোট নিয়ে ২০১২ সালে রাশিয়ার একটি বিনোদন পত্রিকা বিশ্বজুড়ে জরিপ চালিয়েছিল। সেখানে প্রথম হয়েছিল বাংলাদেশের দুই টাকার নোট।
প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছিল সাও টোমের ৫০ হাজার মূল্যমানের ডোবরা নোট। তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান অধিকার করেছিল যথাক্রমে বাহামার ১ ডলারের নোট এবং বাহরাইনের ৫ দিনারের নোট। পঞ্চম স্থানে জর্জিয়ার ১০ লারি নোট। ষষ্ঠ স্থানে ১০ হংকং ডলার। সপ্তম স্থানে ১০ কুক আইল্যান্ড ডলার। অষ্টম স্থানে ৫০ ইসরাইলি শেকেল। নবম স্থানে ২০ হাজার আইল্যান্ড ক্রোনার্স নোট এবং দশম স্থানে আছে ৫০ ফেরো আইল্যান্ড ক্রোনার্স নোট।
এটি কোনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নয়, বিশ্বব্যাপী অনলাইন পাঠকদের কাছ থেকে মত নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করেছে রাশিয়ার বিনোদন আউটলেটটি।
দুই টাকার নোটটির একপিঠে শহীদ মিনার, অন্য পিঠে গাছের ডালে বসে আছে বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল। দুই পিঠেই দুটি শান্তির সাদা বৃত্ত। দোয়েল বসা ডালের নিচে কুলকুল বয়ে যাওয়া নদী। শহীদ মিনারের পাশেই ফুল ফোটা ছোট্ট গাছ। দুই টাকার এই নোট বাংলাদেশের কথা বলে, চিত্রিত করে দেশের প্রকৃতিকে।
১৯৯২-৯৩ সালের দিকে নোটটি যখন প্রথম বাজারে ছাড়া হয়, তখন অনেকে এর সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। অনেকে বিশ-পঞ্চাশ টাকা দিয়েও দুই টাকার একটি নোট কিনে সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। বাজারে সুলভ হওয়ার দুই টাকার নোট অনেকে শখ করে জমিয়ে রাখতো। মাটির ব্যাংক ভরে উঠেছিল দুই টাকার নোটে। ফলে বাজারে তার ঘাটতি দেখা দেয়। একটা নতুন নোট নিয়ে এরকম কাল বোধহয় বাংলাদেশে আর হয়নি।
সাধারণত নতুন নোট বাজারে আসলে সবারই একটু বাড়তি আগ্রহ থাকে। তবে মজার ব্যাপার পরবর্তীতে যখন প্রথমবারের মতো এক হাজার টাকার নোট বাজারে ছাড়া হলো তা নিয়েও কিন্তু এতো আগ্রহ সৃষ্টি হয়নি। তবে পরে এই দুই টাকার নোটটির কপালে অনেক দুর্ভোগ নেমে আসে। হিরোইন আসক্তরাও তাদের নেশার কাজে ব্যবহার করত নোটটি। এমনকি চীনেও পাচার হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে।
একসময় বাজার থেকেও নোটটি হারিয়ে যেতে বসে। ফলে সরকার দুই টাকার কয়েন বাজারে ছাড়ে। নতুন নোট ছাড়া হয় না বলে পুরনো নোটগুলোর ছেঁড়াফাড়া দশা। একসময় হয়তো এই সুন্দর নোটটি একেবারে হারিয়ে যাবে।