রমজান মুমিনদের জন্য বোনাসস্বরূপ অর্থাৎ সওয়াব বৃদ্ধির মাস। এ মাসে দানসদকা করলে বিশেষ সওয়াবের অধিকারী হওয়া যায়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রসুল (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা। তাঁর দানশীলতা অন্য সময়ের থেকে অধিকতর বৃদ্ধি পেত রমজান মাসে, যখন জিবরাইল (আ.) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন।
জিবরাইল (আ.) রমজানের প্রতি রাতে আগমন করতেন এবং তাঁরা পরস্পর কোরআন শোনাতেন। আল্লাহর রসুল (সা.) তখন কল্যাণবাহী বায়ুর চেয়েও অধিক দানশীল। (মুসলিম-২৩০৮)
এখন লক্ষ করা যায় ধনী ব্যক্তি মাইকিং করে সবাইকে একত্র করে কাপড়ের ওপর নিজের নাম লিখে কাপড় গরিবদের দান করে। সেই ধনী ব্যক্তির দানসদকা নেওয়ার জন্য অনেক গরিব অসহায় মানুষ দীর্ঘ লাইনের মধ্যে দাঁড়িয়ে অনেক কষ্ট-ক্লেশ করে মাত্র একটি কাপড় নিয়ে আসে।
অনেকে আবার না পেয়ে শূন্য হাতে ফিরেও আসে। এটা কি দানসদকার নিয়ম? এটা দানসদকার নিয়ম নয় আর দানসদকা এভাবে দেওয়া ঠিক নয়। নিজের দান নিজে গরিব অসহায় ব্যক্তির কাছে গিয়ে দেওয়া উত্তম। নিজের আত্মীয় যদি গরিব অসহায় হয়ে থাকে তাহলে তাদের দানসদকার টাকা দিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
আর দান প্রকাশ্য দেওয়ার চেয়ে গোপনে দেওয়া উত্তম, কেননা গোপনে দানে কখনো নিজের মধ্যে অহংকার তৈরি হয় না আর দানগ্রহীতা ব্যক্তির মনমানসিকতা নিচু হয় না। পবিত্র কোরআনে প্রকাশ্য ও গোপনে উভয়ই দান করার কথা বলা হয়েছে কিন্তু পবিত্র কোরআনে অধিকাংশ জায়গায় গোপনে দান করার কথা বলা হয়েছে। মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরা যদি প্রকাশ্য দান কর তাহলে তা ভালো আর যদি গোপনে কর এবং অভাবীকে দাও তাহলে তোমাদের জন্য আরও ভালো। এজন্য আল্লাহ তোমাদের কিছু পাপ মোচন করবেন। (সুরা বাকারা : ২৭০-২৭১)
লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে যারা দান করে তাদের মহান আল্লাহতায়ালা পছন্দ করেন না।
মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, আর যারা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে তাদের ধনসম্পদ ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও কিয়ামতে বিশ্বাস করে না আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন না। ’ (সুরা নিসা-৩৮)। প্রকাশ্য দান যেন প্রচারের জন্য না হয়। প্রকাশ্য দান যেন হয় অন্যদের উৎসাহ প্রদানের জন্য। মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! দানের কথা প্রচার করে ও কষ্ট দিয়ে তোমরা তোমাদের দানকে নষ্ট কোরো না। ওই ব্যক্তির মতো যে নিজের সম্পদ অন্যকে প্রদর্শনের জন্য ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে না। ’ (সুরা বাকারা-২৬১)