27 C
Dhaka
অক্টোবর ৩১, ২০২৪
Bangla Online News Banglarmukh24.com
অর্থনীতি জেলার সংবাদ বরিশাল

রেকর্ড দামে ইলিশ বিক্রি, হালি ২৫ হাজার টাকা

অনলাইন ডেস্ক:

আগামীকাল রোববার পহেলা বৈশাখ। পান্তা-ইলিশে শুরু হবে বাঙালির প্রাণের উৎসব। পহেলা বৈশাখের দিন সকালে পান্তা-ইলিশ খাওয়া বাঙালির ঐতিহ্য না হলেও এখন সেটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। ফলে বাঙালির এই চিরন্তন আবেগের সুযোগ নিয়ে পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে ইলিশের গলাকাটা দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

এরই অংশ হিসেবে এক হালি ইলিশ ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। বরিশাল নগরীর পোর্ট রোডের ইলিশ মোকামে শনিবার সকালে দুই কেজি সাইজের চারটি ইলিশ ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হয়েছে অন্যান্য সাইজের ইলিশ।

নগরীর পোর্ট রোডের ইলিশ মোকাম ঘুরে জানা যায়, গত ছয় মাসের মধ্যে শুক্র এবং শনিবার সবচেয়ে বেশি দামে ইলিশ বিক্রি হয়েছে। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে ইলিশের আকাশছোঁয়া দাম দেখে হতাশ স্থানীয় ক্রেতারা।

ইলিশ মোকামের ব্যবসায়ীরা জানান, সোয়া কেজি থেকে দেড় কেজি সাইজের ইলিশের মণ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। সে হিসাবে প্রতি কেজি ইলিশের পাইকারি দাম পড়েছে ৩ হাজার টাকা। দুই থেকে আড়াই কেজি সাইজের ইলিশ প্রতি হালি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। গত ছয় মাসের মধ্যে শুক্রবার সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছে ইলিশ।

তবে একদিনের ব্যবধানে অর্থাৎ শনিবার সেই ইলিশের দাম কমে বিক্রি হয়েছে ১ লাখ টাকা মণ। সে হিসাবে প্রতি কেজি ইলিশের পাইকারি দাম পড়ে ২ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি মণে ২০ হাজার ও প্রতি কেজিতে দাম কমেছে ৫০০ টাকা। তবে বড় সাইজের অর্থাৎ দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের ইলিশের দাম গতকালের দামেই বিক্রি হয়েছে।

barisal

দাম ওঠা-নামার কারণ হিসেবে বরিশাল নগরীর পোর্ট রোডের ইলিশ মোকামের একাধিক আড়তদার জানান, পহেলা বৈশাখের দিন সকালে পান্তা-ইলিশ খাওয়া বাঙালির ঐতিহ্য না হলেও রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। ফলে বৈশাখকে কেন্দ্র করে ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া। এছাড়া বরিশালের ইলিশের চাহিদা সারা বছরই থাকে। সারাদেশে বরিশাল থেকে ইলিশ যায়। বর্তমানে বাজারে ইলিশ কম। কিন্তু চাহিদা বেশি। তাই দাম বাড়তি।

আড়তদাররা জানিয়েছেন, শুক্রবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রচুর ইলিশ কিনেছেন পাইকাররা। বড় সাইজের ইলিশ কেনার দিক থেকে তারাই ছিলেন এগিয়ে। ইলিশ প্যাকেটজাত করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়েছেন তারা। শুক্রবার ইলিশের চাহিদা ছিল ব্যাপক। সেই তুলনায় আমদানি না থাকায় গত ছয় মাসের মধ্যে ইলিশ সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছে। তবে শনিবার বরিশালের মোকামে পাইকাররা কম ছিলেন। তাই দাম একটু কমেছে।

শনিবার সকালে নগরীর পোর্ট রোড মোকামে গিয়ে দেখা যায়, ইলিশের আমদানি কম। স্থানীয় সাধারণ ক্রেতারা বেশি ছিলেন। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারদের সংখ্যা ছিল কম। সোয়া থেকে দেড় কেজি সাইজের ইলিশ প্রতি হালি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। দেড় থেকে দুই কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।

স্থানীয় ইলিশ ব্যবসায়ীরা জানান, শুক্রবার যে পরিমাণ ইলিশ আমদানি হয়েছে তার দুই-তৃতীয়াংশ প্যাকেটজাত হয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ কারণে শুক্রবার ইলিশের দাম ছিল বেশি। অন্যদিকে শনিবার পাইকার না থাকায় এবং আগে থেকে মজুত করা কিছু ইলিশ মোকামে সরবরাহ করায় ইলিশের দাম কিছুটা কম।

বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অজিৎ কুমার দাস মনু বলেন, শনিবার ইলিশের আমদানি ছিল কম। শুক্রবারের চেয়ে দামও কিছুটা কম। গতকাল আমদানি ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ মণ। শনিবার আমদানি হয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ মণ।

শনিবার ইলিশের আমদানি কম হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ঢাকার পাইকার না থাকায় আমদানি কমেছে। এ সময় দেশের প্রধান কয়েকটি নদীর অভয়াশ্রমে ইলিশ ধরা পুরোপুরি বন্ধ। অভিযানও চালায় মৎস্য অধিদফতর, কোস্টগার্ড নৌ-পুলিশের সদস্যরা। ফলে ইলিশের সরবরাহ কম। এজন্য দাম বাড়তি।

অজিৎ কুমার দাস মনু বলেন, মোকামে শনিবার সোয়া কেজি থেকে দেড় কেজি সাইজের ইলিশের মণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। সে হিসাবে প্রতি কেজি ইলিশের পাইকারি দাম পড়েছে তিন হাজার টাকা। গত ছয় মাসে শুক্রবার সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছে ইলিশ। তবে শনিবার ইলিশের দাম কমে ১ লাখ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে প্রতি কেজি ইলিশের পাইকারি দাম পড়ে দুই হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি মণে ২০ হাজার ও প্রতি কেজিতে দাম কমেছে ৫০০ টাকা। তবে বড় সাইজের ইলিশের আমদানি খুবই কম। তাই দেড় থেকে দুই কেজি সাইজের ইলিশের হালি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল দাস বলেন, অভয়াশ্রমগুলোতে জেলেরা মাছ শিকার করতে না পারায় বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম। তবে মে মাসের শুরুতে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে বাজারে ইলিশ সরবরাহ বেড়ে যাবে। তখন ইলিশের দামও কমে যাবে। ইলিশের উৎপাদন বাড়ানো এবং সংরক্ষণে নানা পদক্ষেপ নিলেও দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে মৎস্য বিভাগের কোনো ভূমিকা নেই।

সম্পর্কিত পোস্ট

ঝালকাঠিতে আমুর ছায়ায় কোটিপতি ডজনখানেক

banglarmukh official

অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষে ট্রেন বিকল

banglarmukh official

ঘর থেকে তুলে নিয়ে মা-মেয়েকে গর্ণধর্ষণ, আটক ২

banglarmukh official

ডিএমপির ১৭৩১ মামলায় জরিমানা ৬৫ লাখ টাকা

banglarmukh official

বিএনপি-জামায়াতসহ সব দলকে একতাবদ্ধ থাকতে হবে: মামুনুল হক

banglarmukh official

গৌরনদী বিএনপির ৪ নেতাকর্মী গ্রেফতার

banglarmukh official