রোজায় দীর্ঘ সময় পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। ফলে পানিশূন্যতাসহ শারীরিক নানান জটিলতা দেখা দিতে পার। তারওপর চলতি বছর চৈত্র মাসের দীর্ঘ ও উত্তপ্ত দিনের বেলা রোজা রাখতে গিয়ে পনিশূন্যতায় ভোগার আশঙ্কা বেশি থাকবে।
তাই রমজানে রোজা পালনের সাথে সাথে পানিশূন্যতা যেন কোনোভাবে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে বয়স্কদের। নিয়মমতো যথেষ্ট পানি পান করলে এ সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। একজন প্রাপ্তবয়স্কের অবশ্যই পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা পেতে এবং ফিট থাকতে দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে।
ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত সময়ে যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে হবে। একই সাথে শরীরচর্চাও গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে যারা তারাবি নামাজ পড়েন সেটি তারা নিয়মিত পড়লে উপকৃত হবেন। আর ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত এমন খাবার নির্বাচন করতে হবে যেসব খাবারে পানির পরিমাণ বেশি থাকে।
অনেকেই ইফতারের পর আর খেতে চান না। এটি ঠিক নয়। রাতের খাবার খেতে হবে পরিমিত মাত্রায় এবং সেহরিও খেতে হবে। তাহলে পানির ঘাটতি কম হবে।
পানিশূন্যতা কেন হয়
গরমে দিনের বেলা ঘাম, প্রস্রাব ও শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে প্রচুর পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এ কারণে শরীরে পানিশূন্যতার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
দীর্ঘ সময় ধরে পানি না পান করার কারণে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে।
খাবার তালিকায় পানিসমৃদ্ধ খাবার না রাখা।
জ্বর বা ডায়রিয়ার মতো অসুস্থতাজনিত কারণে।
অতিরিক্ত ভাজা পোড়া জাতীয় খাবারের কারণেও পানিশূন্যতা হতে পারে।
ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত সময়ে পর্যাপ্ত পানি পান না করা।
ইফতারের পর অতিমাত্রায় চা কফি খেলে।
অতিরিক্ত রোদ বা গরমে থাকার কারণে।
পানিশূন্যতার লক্ষণ
শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়লে জিহ্বা দেখে সহজে বোঝা যায়। কারণ জিহ্বা শুকিয়ে যায়। এ ছাড়া অনেকের চোখ গর্তে চলে যায় এবং দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে। তাছাড়া শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা তেরি হয়। পানিশূন্যতায় হার্ট রেট ও প্রেশার কমে যেতে পারে।
পানিশূন্যতা থেকে মুক্ত থাকবেন যেভাবে
ইফতার ও সেহরির মধ্যকার সময়ে পর্যাপ্ত পানি পান করা।
সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়া।
ইফতারে ফলের রস ও ফলের পরিমাণ বেশি রাখা।
সরাসরি রোদে না যাওয়া।
অতিরিক্ত খাবার না খাওয়া।
প্রয়োজনে ইফতারিতে ডাবের পানি বা খাবার স্যালাইন পান করা।
হালকা শরীর চর্চা করা।
অনেকেই পানি পান করতে গিয়ে ফ্রিজ থেকে বের করা ঠাণ্ডা পানি খেয়ে থাকেন; যা মোটেও ঠিক নয়। অতিরিক্ত ঠাণ্ডা পানি থেকে বিরত থাকতে হবে।
যাদের চা পানের অভ্যাস আছে তারা দুধ চায়ের বদলে রং চা পান করতে পারে পরিমিত মাত্রায়। আর পর্যাপ্ত পানির পাশাপাশি খাবারে লাউ, কুমড়ো বা পেঁপে জাতীয় খাবার বেশি রাখলে শরীর পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা পাবে।
তবে শরীর ফিট রাখতে নিয়মিত গোসল এবং চোখে মুখে বারবার পানি দিতে পারেন। এরপরেও শরীরে কোন সমস্যা বোধ করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
সূত্র : বিবিসি।