27 C
Dhaka
অক্টোবর ২৩, ২০২৪
Bangla Online News Banglarmukh24.com
বরিশাল বরিশাল

১০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে না তরমুজ,ফেলা হচ্ছে খালে

১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বড় আকারের একেকটি তরমুজ। তাও কেনার আগ্রহ নেই ক্রেতা ও আড়তদারদের। এরই মধ্যে অধিকাংশ তরমুজে পচন ধরেছে। সেগুলো ফেলা হচ্ছে বরিশাল নগরীর পোর্টরোড খাল থেকে শুরু করে আশপাশের এলাকার ডাস্টবিনে।

কৃষকরা বলছেন, হঠাৎ বৃষ্টিতে পানি ঢুকেছে তরমুজের ক্ষেতে। এতে পানসে লাগছে তরমুজ। ফলে বিক্রি হচ্ছে না। এ অবস্থায় বিনিয়োগকৃত টাকার অর্ধেক না উঠায় বড় অংকের লোকসান গুনতে হবে কৃষকদের।

বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিভাগের ছয় জেলায় ৬৪ হাজার ১৮৩ হেক্টর জমিতে (প্রতি হেক্টরে ৪০ টন) ২৫ লাখ ৬৭ হাজার ৩২০ টন তরমুজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আশানুরূপ উৎপাদন হয়েছে।

২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে দাম উঠতো ছয় কোটি ৪১ লাখ টাকা। কিন্তু বৃষ্টির কারণে পরিমাণ কমে ৫৪ হাজার ৫৫৬ হেক্টর জমি দাঁড়িয়েছে। সেখানে ২১ লাখ ৮২ হাজার ২৪০ টন উৎপাদন হয়েছে। ২৫ টাকা কেজি দরে যার মূল্য দাঁড়ায় পাঁচ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। এর চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ছয় জেলার তরমুজ চাষিরা। বৃষ্টিতে অনেক চাষির তরমুজ ক্ষেতে পচে গেছে। এ বছর সবচেয়ে বেশি তরমুজ চাষ হয়েছে পটুয়াখালী জেলায়; ২৮ হাজার ৭৪৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। এরপর ভোলায় ১৮ হাজার ৩৮৩ হেক্টর, বরগুনায় ১৫ হাজার ৮৩৮ হেক্টর, বরিশালে এক হাজার ৪৬ হেক্টর, পিরোজপুরে ১১৬ হেক্টর ও ঝালকাঠিতে ৫৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।

ট্রলার ভর্তি করে তরমুজ নিয়ে বরিশাল নগরীর পোর্টরোড বাজারে এসেছেন চরফ্যাশনের কৃষক মো. ইমরান মাঝি। তিনি বলেন, ‌‘অধিকাংশ তরমুজের ক্ষেতে পানি ঢুকেছে। আকার বড় হলেও পানসে লাগছে। এ জন্য বিক্রি করতে পারছি না। ট্রলার ভর্তি করে আড়তে এনে পাইকারদের হাত-পা ধরে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাও প্রতি পিস ১০ টাকা দরে।’

ইমরান মাঝি বলেন, ‘আড়তদাররা ট্রলার হিসেবে কিনে শ’ হিসেবে বিক্রি করছেন। ট্রলার থেকে আড়তে তোলার সময় পচন ধরা তরমুজ ফেলতে হচ্ছে খালে। এর আগে ক্ষেত থেকে শুরু করে আড়তে আসা পর্যন্ত বহু তরমুজ পচে যাওয়ায় নদী ও খালে ফেলে দিয়েছি।’

চরফ্যাশনের আরেক কৃষক মো. ইসমাইল বলেন, ‘চরফ্যাশনের ভুতুম চরে ছয় কানি জমি লিজ নিয়ে তরমুজ চাষ করেছি। জমি প্রস্তুত করতে প্রতি কানিতে খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। তরমুজের মৌসুম শেষ হওয়া পর্যন্ত কানিপ্রতি খরচ গুনতে হবে ২৫ হাজার টাকা।

এরপর চাষ ও অন্যান্য খরচ তো আছেই। কিন্তু বৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে গেছে আমার। আজ দুই ট্রলার তরমুজ বিক্রি করেছি তিন লাখ টাকা। বৃষ্টি না হলে এসব তরমুজ ছয়-সাত লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারতাম।’

প্রতি মৌসুমে জমি লিজ নিয়ে তরমুজ চাষ করেন একই এলাকার কৃষক মো. রিপন। তিনি বলেন, ‘এ বছর দুই কানি জমি লিজ নিয়ে তরমুজ চাষ করেছি। ফলন দেখে বুক ভরে গিয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টি সব তছনছ করে দিয়েছে। এখন কোনোভাবে বিনিয়োগকৃত টাকা তুলতে পারলে বাঁচতাম। তবে কোনোভাবেই বিনিয়োগকৃত টাকা উঠবে না, এটা নিশ্চিত।’

বাকেরগঞ্জের তরমুজ চাষি নূর হোসেন বলেন, ‘বাকেরগঞ্জের কালাইয়ায় ১০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। প্রথম দিকে যা বিক্রি করেছি, তাতে ভালো দাম পেয়েছি। কিন্তু বৃষ্টির পানি তরমুজ ক্ষেতে ঢুকে সব শেষ করে দিয়েছে। তরমুজ বড় হয়েছে, কিন্তু পানসে। এ কারণে কেউ কিনতে চান না।

একপ্রকার হাত-পা ধরে বিক্রি করতে হচ্ছে। তা আবার ট্রলার হিসাবে দাম বলছে। শ’ হিসাবে কেউ কিনতে চান না। যা দাম বলছেন, তাই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।’ গত মাসের শেষের দিকে বৃষ্টিতে তরমুজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানালেন নগরীর পোর্টরোডের আড়তদার মাহবুব হোসেন। তিনি বরিশালটাইমসকে বলেন, ‘তরমুজ ক্ষেতে পানি ঢুকে যাওয়ায় পানসে হয়ে গেছে। এ জন্য বিক্রি হচ্ছে না। আড়তদাররা কিনছেন না। আর কিনলেও কৃষক কম দাম পাচ্ছেন।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মুলাদীতে ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ জামায়াতের

banglarmukh official

বরিশাল বোর্ডে সেরা ঝালকাঠি, পিছিয়ে পটুয়াখালী

banglarmukh official

নগরে নতুন নতুন অটোরিকশা: কারখানা বন্ধে ওসিদের নির্দেশ

banglarmukh official

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে যুবককে মারধরের অভিযোগ

banglarmukh official

আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

banglarmukh official

বরিশালে বিএনপি অফিস ভাঙচুরে অভিযোগে সাদ্দাম শাহ‍্ গ্রেপ্তার

banglarmukh official