মানিকগঞ্জে মাত্র ১৩০ টাকা খরচ করে পুলিশে চাকরি পেয়েছেন ৩৯ জন তরুণ-তরুণী। কোনোরকম ঘুস-তদবির ছাড়াই মেধা ও যোগ্যতার মূল্যায়নে চাকরি পাওয়ায় খুশি তারা। স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় আনন্দে কেঁদেও ফেলেন অনেকে।
শনিবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইন্সে পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান ফলাফল ঘোষণা করেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- নিয়োগ বোর্ডের অন্য দুই সদস্য রাজবাড়ী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাইন উদ্দিন চৌধুরী ও সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলামসহ মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ মার্চ জেলা পুলিশ লাইন্স মাঠে পুলিশ কনস্টেবল পদে ১২০০ চাকরিপ্রার্থীর শারীরিক মাপ ও কাগজপত্র যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়। মাঠ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৩২১ জন। ২৯ মার্চ লিখিত পরীক্ষায় ১০০ জন উত্তীর্ণ হন। এদের মধ্য থেকে ৩৯ জন চূড়ান্তভাবে মনোনীত হন। এদের মধ্যে ৩৩ জন পুরুষ ও ছয়জন নারী রয়েছেন।
চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের একজন মামুন মিয়া। তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘পুলিশে চাকরির প্রতি আমার ধারণাই ছিল ভিন্নরকম। কিন্তু ১৩০ টাকা ব্যাংক ড্রাফট করে আমি চাকরির জন্য উত্তীর্ণ হয়েছি। শুধুমাত্র যোগ্যতার ভিত্তিতেই আমাদের উত্তীর্ণ করা হয়েছে। এজন্য পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানাই।
প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন বর্ষা আক্তার। বলেন, ‘স্বপ্ন ছিল পুলিশ সদস্য হবো। যখন আবেদন করলাম, তখন অনেকেই বলেছে তদবির আর ঘুস ছাড়া চাকরি হবে না। কিন্তু তদবির আর ঘুস ছাড়াই আমার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে আজ। ব্যাংক ড্রাফট বাবদ মাত্র ১৩০ টাকা খরচ হয়েছে।
মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, আইজিপি ড. বেনজির আহমেদ কনস্টেবল নিয়োগের একটি যুগান্তকারী পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। পুলিশ হেডকোয়াটার্স থেকেই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। আমাদের এখানে শুধু ভাইবা নেওয়া হয়। যে কারণে কোনো ধরনের অনিয়মের সুযোগ নেই। যারা চাকরি পেয়েছেন তারা বেশিরভাগই হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, উত্তীর্ণরা তাদের নিজ নিজ যোগ্যতাতেই চাকরির জন্য মনোনীত হয়েছেন। আমরা শুরু থেকেই প্রার্থীদের জানিয়েছি তারা যেন কোনো ধরনের দালাল ও মধ্যস্বত্তভোগীদের খপ্পরে না পড়ে। কারণ বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগের ক্ষেত্রে এখন কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই।