নিউইয়র্ক নগরীর কেন্দ্রীয় মর্গ। ছবি: প্রথম আলো
নিউইয়র্ক নগরীর কেন্দ্রীয় মর্গ। ছবি: প্রথম আলো
নিউইয়র্ক নগরীর ম্যানহাটনের পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ইস্ট রিভার নদী। আধুনিক নগর স্থাপনার গত ৪০০ বছরের আনন্দ–বেদনার সাক্ষী এই নদী। ইস্ট রিভারের পাশ ঘেঁষে ম্যানহাটনের ৩০ স্ট্রিট আর ফার্স্ট অ্যাভিনিউ। নগরীর বিখ্যাত এনওয়াই ইউ ল্যাং হাসপাতাল।
তবে নগরীর নিত্যকোলাহলে অনেকটাই আড়ালে পড়ে থাকে আরেকটি স্থাপনা। হাসপাতালসংলগ্ন দুটি পুরোনো দালানের মাঝে ফার্স্ট অ্যাভিনিউ থেকে নদীর পাশ পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ভিন্ন স্থাপনা নগরীর কেন্দ্রীয় মর্গ।
চলমান লকডাউনের নির্জন নগরীতে গত প্রায় এক মাস থেকে কেন্দ্রীয় মর্গে শুরু হয়েছে এক অন্য রকম কোলাহল। সবুজ রঙের বেষ্টনী দিয়ে কিছুটা আড়াল করা হয়েছে। এখানে হঠাৎ করেই বেড়ে যায় নগরীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি। তিন সপ্তাহ ধরে এখানে দায়িত্ব পালন করছেন এনওয়াইপিডির একজন সদস্য। ভারী কণ্ঠে তিনি উচ্চারণ করলেন, বেষ্টনীর রংটা নীল হলেই বেশি ভালো হতো।
নিউইয়র্ক নগরীর চিফ মেডিকেল এক্সামিনারের অফিসও এখানে। তিন সপ্তাহ ধরে এখানে লাশবাহী অসংখ্য ফ্রিজিং ট্রাকের আসা-যাওয়া। উদ্বিগ্ন স্বজনের কোলাহল। আছে বিশ্বের প্রধান প্রধান সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও।
এখানে দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নগরীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মারা যাওয়া সব মৃতদেহ এই কেন্দ্রীয় মর্গে নিয়ে আসা হয়েছে। তারপর এখান থেকেই সেসব মৃতদেহ গেছে অন্তিম ঠিকানায়। মৃত্যুর পর হাসপাতালের সাধারণ মর্গে না রেখে এ কেন্দ্রীয় মর্গে পাঠানো হয় মরদেহ। ফিউনারেলের আয়োজন করে স্বজনেরা। একটা নম্বর ধরে ফিউনারেলের বিশেষ গাড়ি ওখান থেকেই মরদেহ নিয়ে যাচ্ছে শেষ ঠিকানার উদ্দেশে। যাদের কোনো স্বজন পাওয়া যায়নি, নির্দিষ্ট সময়ের পর ওই সব মৃতদেহ বেওয়ারিশ ঘোষণা করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্ক সিটিতেই মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজারের বেশি মানুষের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় মর্গে কর্তব্যরত একজন কর্মী জানালেন, ভীতিকর ট্রাকগুলোর যাতায়াত কমেছে। বেষ্টনীর ভেতরে পার্ক করে রাখা ফ্রিজিং ট্রাকের সংখ্যাও কমেছে।
এদিকে নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো বলেছেন, ‘রাজ্যের সবচেয়ে খারাপ সময়ের অবসান ঘটছে।’