স্টাফ রিপোর্টার//তানজিম হোসাইন রাকিব:
শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশ তোয়াক্কা করছেন না বরিশালের সরকারি শিক্ষকরা। এইচএসসি পরীক্ষার মধ্যেই দেদারছে কোচিং করিয়ে চলেছেন। এক একজন শিক্ষকের কাছে ৮-১০টি ব্যাচে শতাধিক ছাত্র কোচিং করছেন। আয় করছেন মাসে লক্ষাধিক টাকা। এসব কোচিংয়ের অপেক্ষামান তালিকা দেখলেই চমকে ওঠার মতো। প্রত্যেক শিক্ষকের কাছে ওয়েটিংয়ে আছেন শতশত ছাত্র। এদেরকে সময় দিতে না পারলেও ওয়েটিং লিষ্ট করে রাখা হয়েছে। সরকারি এবং এমপিওভূক্ত সকল শিক্ষকদের কোচিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এর বাইরে যেসব কোচিং সেন্টার রয়েছে সেগুলোও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মধ্যে কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু বরিশালে থোড়াই কেয়ার করছেন শিক্ষকরা। দিনরাতে কোচিং করিয়েই চলেছেন। এই কোচিং করানোর মধ্যে শীর্ষে যে কয়জন সরকারী কলেজের শিক্ষক আছেন, তার মধ্যে অন্যতম সরকারি আলেকান্দা কলেজের শিক্ষক সোলাইমান। এসব দেখার পরও নিরব প্রশাসন। মাত্র ১২ দিনে হাতিয়ে নিচ্ছেন ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
অন্যান্য খাতে নিচ্ছেন আরও লক্ষ লক্ষ টাকা। সরকারি কলেজের শিক্ষক হয়েও তিনি জেনে বুঝে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। কোচিং বাণিজ্যের ব্যাপারে শিক্ষক সোলাইমান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি প্রতিদিন ৬টি ব্যাজে ৪০ জন করে শিক্ষার্থী পড়ান। আর ১২ দিনে আয় করছেন ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এ গেলো একজনের কথা।
নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে কোচিং চালিয়ে যাচ্ছেন সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের (সদর গার্লস) শিক্ষক নাজমা ম্যাডাম, সরকারী জিলা স্কুলের ফয়সাল, খলিল স্যার, সিরাজ স্যার, ফাহিদ স্যার। এদেরও রয়েছে দীর্ঘ শিক্ষার্থী তালিকা। মাসে কোচিং করে এদের আয় লাখ টাকার ওপরে। তবে বরিশালে প্রশাসন রয়েছে নিরব ভূমিকায়।
সোমবার দুপুরে সোলায়মান স্যারের কোচিং সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, সমাজসেবা অফিসের পাশে কাউয়ুম স্যারের ভবনের একটি ফ্লাট ভাড়া নিয়ে কোচিং চালাচ্ছেন তিনি। একটি ব্যাচে প্রায় ৩০-৪০ জন শিক্ষার্থী। সন্ধ্যায় বাসায় বসেও কয়েকটি ব্যাচ পড়ান। ছবি ধারণের পরপরই শুরু হয় তদবির। প্রলোভনও।
বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. অজিয়র রহমান জানান, কোচিং বাণিজ্য সম্পূর্ণ নিষেধ। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন মানবজমিনকে বলেছেন, বরিশালে কোচিং বাণিজ্য তদারকি করার দু’টি কমিটি রয়েছে। একটি বিভাগীয়, অপরটি মহানগর। মহানগরের আহবায়ক বিভাগীয় কমিশনার এবং সদস্য সচিব মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা পরিদপ্তরের পরিচালক। তিনি তাদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরবেন বলেও জানান।