ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা। আর এই শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি অঞ্চল বেহালা। সেখানকার এক যুবক, নাম কৃশানু বিশ্বাস। বয়স প্রায় ৩০ বছর। সম্প্রতি তাকে ঘিরেই হঠাৎ সরগরম হয়ে উঠেছে ওই এলাকা। কৃশানুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি নারীদের অশালীন ছবি ধারণ করতেন। কারও বাথরুমের ছবি। কারও নিছক রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার ছবি। তার পেন ড্রাইভে এ রকম প্রায় ১২০০ ছবির হদিস মিলেছে। দীর্ঘ অনেক বছর ধরে এই কাজ করলেও কেউ কোনো দিন বুঝতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত পেন ড্রাইভ হারানোর পর তার কুকীর্তি ফাঁস হয়েছে। এরপর এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছে। অবশ্য অবস্থা বেগতিক দেখে গা-ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত কৃশানু।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবর, পর্ণশ্রীর অক্ষয় পাল রোডের বাসিন্দা কৃশানু একটি কেন্দ্রীয় সরকারি দফতরে কাজ করে। কয়েক দিন আগে তার অফিসেরই এক সহকর্মী একটি পেন ড্রাইভ খুঁজে পান। সেটা কার জানতে, সেই পেন ড্রাইভ কম্পিউটারে লাগাতেই একটি ফোল্ডারের হদিশ পাওয়া যায়। সেই ফোল্ডার খুলতেই বেরিয়ে একের পর এক নারীর ছবি। প্রথমে তার সহকর্মীরা বিষয়টি বুঝতে না পারলেও অন্য এক নারী সহকর্মী রহস্যর পর্দা ফাঁস করেন। তিনি ওই ছবির মধ্যে কয়েকজন পরিচিত নারীকে শনাক্ত করেন যারা কৃশানুর প্রতিবেশী। সেই নারী সহকর্মীর মাধ্যমেই খবর এবং সেই পেন ড্রাইভ পৌঁছায় কৃশানুর প্রতিবেশী প্রীতম শূরের কাছে। তিনি বলেন, “পেন ড্রাইভ খুলে আমরা রীতিমতো হতবাক। এই পাড়া, পাশের পাড়ার এমন কোনো নারী নেই যার ছবি নেই এই পেন ড্রাইভে। কেউ বাড়ির পোশাকে, কেউ বাথরুমে— সেই অবস্থায় এই ছবি তোলা হয়েছে। লুকিয়ে নিজের আত্মীয়দেরও প্রায় নগ্ন ছবি তুলেছে কৃশানু।”
গোটা বিষয়টি জানাজানি হতেই পর্ণশ্রী থানায় কৃশানুর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান পাড়ার লোকজন। অবস্থা বেগতিক দেখে গা-ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত যুবক। তাকে না পেয়ে তার বাড়িতে চড়াও হয় এলাকার মানুষ। যদিও অভিযুক্তের বাবা-মার দাবি তাদের ছেলে নির্দোষ।
তদন্তকারীরা কৃশানুর খোঁজ চালানোর সঙ্গে সঙ্গে বাজেয়াপ্ত করেছে ওই পেন ড্রাইভও। শুধু মোবাইল ক্যামেরা না অন্য কোনো ক্যামেরা ব্যবহার করে সে ওই ছবি তুলেছে সেটা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এক তদন্তকারী বলেন, “অভিযুক্ত এই সব ছবি নিজের পেন ড্রাইভে রাখত, না এই ছবি বিভিন্ন পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইটে ব্যবহার করত, সেটা জানা এখন বেশি প্রয়োজন।”