করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই চলছে লকডাউন। বেশিরভাগ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, যান চলাচল, ঘর থেকে বের হওয়ায় রয়েছে কড়া নিষেধাজ্ঞা। তবে মহামারি রোধে এমন পদক্ষেপকে ‘বিশাল ভুল’ বলে মন্তব্য করেছেন স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ও রসায়নে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী মাইকেল লেভিট।
সম্প্রতি আনহার্ড ডটকমে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ৭৩ বছর বয়সী এ বিজ্ঞানী এ দাবি করেন।
বিজ্ঞানী মাইকেল লেভিট বর্তমানে স্টানফোর্ডের মেডিসিনস স্ট্রাকচারাল বায়োলজি ডিপার্টমেন্টের প্রধান পদে কর্মরত। দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী তিনিই।
প্রফেসর লেভিট বলেন, করোনায় এ পর্যন্ত বিপর্যস্ত দেশগুলোতে নেয়া ব্যবস্থাগুলো পর্যালোচনা করলে আমি দেখছি করোনার বিপক্ষে সবচেয়ে বড় বিজয়ী দেশ- জার্মানি ও সুইডেন। কিন্তু তারা খুব বেশি একটা লকডাউন দেয়নি। স্বয়ংক্রিয়ভাবে রোগ প্রতিরোধী হয়ে ওঠার জন্য সেখানে কিছুসংখ্যক লোক অসুস্থ হয়েছে মাত্র। দেশ দুটির অর্থনীতির গতিতেও তেমন বাধা পড়েনি।
এ ক্ষেত্রে অস্ট্রিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও ইসরাইল বড় ভুল করেছে বলে দাবি করেন এ বিজ্ঞানী।
তিনি বলেন, এই তিন দেশ থাকবে হতভাগাদের কাতারে। খুব বেশি মানুষ আক্রান্ত হওয়ার আগেই তারা কড়া লকডাউন জারি করেছে। এতে সমাজের বড় ক্ষতির পাশাপাশি কোনো ধরনের হার্ড ইমিউনিটি প্রতিষ্ঠিত হয়নি সেসব দেশে।
তিনি বলেন, আমার মতে– শরীরে ইমিউনিটি ক্ষমতা বৃদ্ধি করে করোনাভাইরাসের পরবর্তী ধাক্কায় জার্মানি ও সুইডেন সুরক্ষিত থাকবে। কিন্ত দ্বিতীয় ধাপে ঝুঁকিতে পড়বে ইসরাইলের মতো বেশি লকডাউন দেয়া দেশগুলো।
লকডাউন কম দিয়ে সব কিছুকে জীবাণুমুক্তকরণে গুরুত্ব বেশি দেয়া বলে মনে করেন এই বিজ্ঞানী।
তিনি বলেন, যদি আবারও করোনাকে রুখতে হয় সে ক্ষেত্রে আমার অনুরোধ হবে– মাস্ক ও হাত জীবাণুমুক্তকরণে বেশি গুরুত্ব দেয়া। নগদ অর্থের বদলে মোবাইল ফোনে লেনদেন এমন ধরনের পরিশোধ ব্যবস্থা বাড়ানো যেখানে স্পর্শের দরকার হয় না।
তিনি আরও বলেন, চীন কীভাবে করোনার মোকাবেলা করেছে তা যদি বিশ্ব ভালোভাবে খেয়াল করত, তবে সরকারগুলো ভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিত। বিশেষ করে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করত না।