বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত নিজের নির্বাচন পরিচালনা জন্য যে কমিটি করেছেন সেখানে বড় ভাই সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকে ‘প্রধান উপদেষ্টা’ হিসেবে রেখেছিলেন।
এবার আওয়ামী লীগ কেন্দ্র থেকে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকে ‘টিম লিডার’ করে কমিটি গঠন করে দিয়েছে। যদিও এ ধরনের কমিটি অনুষ্ঠেয় অন্য চার সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের জন্য করা হয়নি।
দুই ভাইয়ের ‘রাজনৈতিক ও পরিবারিক বিরোধের’ বিষয় নিয়ে বরিশালের নির্বাচনী মাঠে আলোচনার মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় ঘোষিত নয় সদস্যের এ টিমের তালিকায় সমন্বয়ক হিসেবে রাখা হয়েছে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং যুগ্ম-সমন্বয়ক হিসেবে আছেন সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন।
আফজাল হোসেনের স্বাক্ষর করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- টিমে সদস্য হিসেবে রয়েছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আনিসুর রহমান এবং মো. গোলাম কবীর রাব্বানী চিনু।
এই টিমের কাজ কী হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমন্বয়ক বাহাউদ্দিন নাছিম রাতে বলেন, “আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি করেছে। আমরা সেখানে দায়িত্ব পালন করব।
“বরিশালের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনটা যেন সুন্দরভাবে করা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করব। নৌকা মার্কাকে জয়ী করতে আমরা কাজ করছি। নতুন কমিটির মাধ্যমে এই কার্যক্রমের গতিশীলতা আরও বাড়বে।
সবাই নিয়ে একযোগে কাজ করাই কমিটির মূল লক্ষ্য হবে বলেও জানালেন এ আওয়ামী লীগ নেতা।
তবে এ টিম কী কাজ করবে তা জানে না খোকন সেরনিয়াবাতের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।
কমিটির সদস্য ও মিডিয়া সেলের প্রধান লস্কর নুরুল হক বলেন, “ফেইসবুকের মাধ্যমে নতুন টিম গঠনের বিষয়টি আমরা দেখেছি। কেন্দ্রীয় কমিটির বিরুদ্ধে কিছু বলার ধৃষ্টতা দেখাব না। তবে এ টিম কী কাজ করবে, তা আমাদের বোধগম্য নয়।”
১২ জুন অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর বড় ছেলে বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহও দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু দল বেছে নেয় চাচা খোকন সেরনিয়াবাতকে।
এরপর ৯ মে নির্বাচন পরিচালনায় উপদেষ্টা কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন খোকন সেরনিয়াবাত। সেই কমিটিতে প্রধান করেন বড় ভাই আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকে। তবে তাদের অনুসারী কাউকে কমিটিতে রাখা হয়নি।
এর মধ্যে বরিশাল নগরীতে ভোটের প্রচার চালাতে গিয়ে দুই দফায় হামলার শিকার হয়েছে নৌকার সমর্থকরা। খোকন সেরনিয়াবাতের অনুসারীদের অভিযোগ, যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত তারা সবাই সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী।
এসব হামলার ঘটনায় থানায় মামলা ও সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। মামলায় মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়কসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যার প্রতিবাদ করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করে মহানগর আওয়ামী লীগ; যে কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ।
এরপরই বিলুপ্ত করা হয়েছে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটিও।
তফসিল অনুযায়ী, বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় ভোট কেন্দ্র ১২৩টি। মোট ভোটার ২ লাখ ৭৪ হাজার ৪০৭ জন।