ভাঙ্গন (পর্ব – ৮)
ঘরের পিছোন দিয়া আর এ্যাকটা ঘর আছে হেইয়া খেয়াল করি নাই । হেইহানে আরও তিন চাইরজোনে রান্দা-বারি করে । মনে অইল হেউডা পাহোলঘর । কিনারেই আর এ্যাকটা ঘরে গিয়া আমরা খারইছি । হেই ঘরের ছামনের দুয়ার দিয়া দ্যাকলাম মজিদ মিয়া বড় হাজিতে কইর্রা ভাত লইয়া যাইতে আছে । মোনডায় আনন্দ লাগজে, তাইলে মজিদ মিয়া না খাইয়া রয় নাই । ভালুই অইছে । এই সুম পেডোত দুগ্গা ভাত পরন লইয়া অইছে কতা । মাতাডা এ্যাকটু নিচে নামাইয়া দেহি উডানের মইদ্দে খা্রাইয়া সবাইরে কি জানি কইতে আছে মাদবর সাব । সবাই মাতা নিছা কইরা খাওনের লগে মোন দিয়া হোনতে আছে । কানডা এ্যাকটু খাড়া কইরা হোননের চেষ্টা করলাম । উডানডা ঘরের তোন এ্যাকটু দূরে অওনে ভালো হোনোন যায় না । তয় সবাইরে মোনের বল আরাইতে না কইতে আছে হেইডা বোজোন যায় । মাদবরের কতাবর্তা চেয়ারমেনের মিডা মিডা কতার মতন হুনা যায় । এ্যাকবার চেয়ারমেনের ভাষোণ হোনছালাম । গ্রামের মইদ্দে জোনোসবা করছে । চাইরোদিগে মাইক লাগাইয়া দেছেলে জানি দূরের গ্রামেও ছাউন যায় আর মানষে হোনতে পারে । হেই সোমায় হেই মাইকে চেয়ারমেন অনেক কতাই কইছে তয় ভোডের পর কতার মতন কাম কোনো সোমায়ই করে নায় । এইযে এ্যাত্তো বড় এ্যাকটা বিপদ হেইয়ার মইদ্দে চেয়ারমেনের মুকটাও কেউ দ্যাকছে কিনা সোন্দেহো আছে । হে মোনে অয় দ্যাশেই নাই । আইজগো মাদবারের কতাগুলানও হেই মতন লাগে । তয় মাদবারে য্যা করছে হেতে মানষে হ্যারে কোনও দিনও ভোলবে না । দুক্কের সোমায় যে আঙ্গুলের ইশারায়ও উপুকার করে হেরে মানষে ভোলতে পারে ? পরে না, আমিও ভুলি নাই । উডানের ব্যাডাগো খাওয়া শ্যাষ কিনা দেহি নায়, তয় ঘরে গোনে যে মোরে বলাইয়া আনছে হে মোরে এ্যাকটা ফিরি দিয়া বওয়াইয়া ছামনে এ্যাকথাল ভাত দেছে । ডাইল আর আলুভর্তা । আত ধুইয়া নুন লইয়া মাইক্কা খাওনের সোমায় নাই । ভাতের মইদ্দে ডালই পুডি ঢাইল্লা লইয়া হাপ্পুত-হুপ্পুত কইর্রা ভাত খাইলাম । সস্তোরেই তো কয় – দুননইতে কোনও জ্বালাই থাকতে না যতি আল্লায় মানষেরে না দেতে প্যাট্টা আর চ্যাট্টা ! হেই প্যাডের যে কি জ্বালা হ্যা এইবার বুজ্জি । দুহারের সোমায় মানুষ জোন কোম । ব্যানের খাওন খাইয়া সবাই নদীর কুলে গ্যাছে । কেউ কেউ গ্যাছে চেয়ারমেন বাড়ির দিগে । হগুলডির লগেই বৌ মাইয়া পোলা আছে । যেম্মে য্যা যাইক নতুন কইর্রা বাঁচোনের লইগ্গা হগুলডিই চিন্তা ভাবনা করে । মোনে হয় হেই সোমায় খালি মুইই এ্যাকজোন মানুষ যে দুননইতে কোনও চিন্তা ভাবনা করি নাই । কোলের পোলাডা হারাদিন কোলেই রাকছি । কিন্তু সন্দার সোমায় মাতাডা জানি ক্যামোন কইর্রা উইট্টা বোহের মইদ্দে খালি থরথরাইয়া ওটছে । মোনে অইতে লাগজে দুননইডা এ্যাক্কালে ফাক অইয়া গ্যাছে । এ্যাতো মানুষ জোনের মইদ্দেও মোনে অয় মউ এ্যাকলা । এ্যাকটা কষ্ট ক্যামোন জানি করতে লাগজে বুকটার মইদ্দে । ভাতের ঠাণ্ডা পানি হরা মুরা দিয়া জাল দেতে দেতে আছুক্কা জ্যামোন ভাত উলাইয়া হরা ঠ্যালে ঠিক হেইরোহোমের বোহের খ্যাঁচা ঠালতে লাগজে ! এ্যাক্কালে হোয়াস বন্দো অইয়া যাইবে মতন লাগদে আছে । কেউর ধারে কিছু না কইয়া ঘরের পিড়ার উপরে বইয়া পড়ছি । দুই চউক দ্যা দরদর রাইয়া পানি পড়ে । তয় মুই কিন্তু কান্দি না । হেইয়ার পরও মোর হেচকি উট্টা গ্যাছে । হেই সোমায়ও পোলাডা মোর কোলে । এ্যাইযে মোর কষ্ট অইতে আছে এ্যা কিন্তু কেউ খেয়াল করে নাই । কিন্তু এ্যাকজোনে খেয়াল করছে । হে আইয়া ছামনে খাড়াইছে । কোলে গোনে পোলাডা লইয়া কইছে – ভাবী, কাইন্দেন না, কানলে কোনও কাম অইবে না । আল্লা আল্লা করেন । কানবেন না, মুই আছি না ? (চলবে…)