উদ্ভিদ বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে টমেটো একটি ফল হলেও, সবজি হিসেবেই সারা বিশ্বে টমেটো পরিচিত। সবজি এবং সালাদ হিসেবে ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ টমেটোর বেশ চাহিদা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষীদের জন্য এটি একটি বিশেষ অর্থকরী সবজি। আকর্ষণীয়তা, ভাল স্বাদ, উচ্চ পুষ্টিমান এবং বহুবিধ উপায়ে ব্যবহারযোগ্যতার কারণে সর্বত্রই এটি জনপ্রিয়।
এ সবজিতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি রয়েছে। টমেটোতে লাইকোপেন নামে বিশেষ উপাদান রয়েছে, যা ফুসফুস, পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, কোলন, স্তন, কিডনি সমস্যা, মূত্রাশয়, প্রোস্টেট ইত্যাদি অঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, দিনে ৪টা থেকে ৫টা টমেটো খাদ্য তালিকায় রাখলে শরীরে কোলেসিসটোকিনিন নামে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয় যা পেটের এবং ইনটেস্টাইনের মধ্যে যে বাল্ব রয়েছে তা সংকুচিত করে দেয়। ফলে পেট ভরা থাকে, খিদে কম পায়। আর তাতে ওজন বাড়ার সম্ভাবনাও থাকে না। এছাড়াও টমেটোর মধ্যে রয়েছে আরও বিশেষ কিছু গুণাগুণ, আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই গুণগুলি কী কী-
১। ইনসুলিন নিঃসরণ কমে এবং ওজন বৃদ্ধির হরমোন নিয়ন্ত্রণে থাকে-
খাদ্য হিসেবে এটা অত্যন্ত কম ক্যালরিযুক্ত। একটা ছোট টমেটোতে ক্যালরির মাত্রা থাকে মাত্র ১৬। এছাড়া, টমেটোতে থাকে প্রাকৃতিক শর্করা। যা ‘গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স’ সমৃদ্ধ। এটি রক্তের শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখে। ফলে ইনসুলিন নিঃসরণ কমে যায় এবং যে হরমোন চর্বি সঞ্চয় ও ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে সেটিও নিয়ন্ত্রিত থাকে।
২। ডায়াবেটিস ও কিডনির সমস্যা রোধ করে-
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ছাড়াও শরীরের অন্যান্য বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে টমেটো বেশ উপকারি। যেমন ডায়াবেটিস বা কিডনির সমস্যা রুখতেও এটি সাহায্য করে। এছাড়াও রোগ প্রতিরোধে টমেটোর আরও বেশ কয়েকটি গুণ বর্তমান।
৩। হাড় ভালো রাখে-
টমেটোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন কে রয়েছে। এগুলো হাড়ের টিস্যু ঠিকঠাক রাখতে ও ছোটখাটো হাড় সংক্রান্ত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
৪। চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়-
চোখের দৃষ্টি উন্নত করতে টমেটোর ভূমিকা অপরিসীম। তাই রোজ খাদ্যতালিকায় টমেটো থাকলে তা আপনার চোখের জন্য উপকারি।
৫। ধূমপানের ক্ষতি কমায়-
আবার ধূমপানের ফলে শরীরে যে ক্ষতি হয় তার প্রভাব কমাতে পারে টমেটো। এতে বিদ্যমান রয়েছে কোমেরিক অ্যাসিড ও ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড। যা শরীরে ধূমপান থেকে ক্ষতি কমাতে বিরাট সাহায্য করে।