অনলাইন ডেস্ক : লোকসানের আরেক নাম বিআইডব্লিউটিসি। স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত এ সংস্থাটি যাত্রীবাহী জাহাজ থেকে এক পয়সাও লাভ করতে পারেনি। উল্টো প্রতিবছর সরকার এ খাতে কোটি কোটি টাকা লোকসান গুণছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আয়ের টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেয়া ও নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যয় দেখিয়ে লাভের টাকা লোপাট করছে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলছেন, জবাবদিহিতা না থাকার কারণেই এ অবস্থা।
সদরঘাটে দেখা যায়, বেসরকারি লঞ্চের তুলনায় যাত্রী সংখ্যাও অনেক কম। যাও বা আছে তার বেশীর ভাগই আবার টিকিট না কেটেই উঠে পড়েছেন স্টিমারে। যদিও স্টিমারে টিকিট ছাড়া কাউকে উঠতেই দেয়ার কথা নয়।
যাত্রীরা বলছেন, জাহাজে থাকা বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা নিজেদের পকেট ভারি করতে তাদের টিকিট কাটতে নিরুৎসাহিত করেছেন। সেবার মান নিয়েও অভিযোগের শেষ নেই যাত্রীদের।
একজন যাত্রী জানান, আমরা টিকিট কাটতে পারি নাই, কিন্তু রাতেই এসে টাকা নিয়ে যাবে। তবে টিকিট দেয় না।
সরকারি হিসেবে, ২০১৭- ১৮ অর্থবছরে শুধু ঢাকা-বরিশাল-খুলনা নৌ রুট থেকেই বিআইডব্লিউটিসির লোকসান হয়েছে ৩০ কোটি টাকার বেশি। যেখানে চট্টগ্রাম- সন্দীপ রুটের যাত্রীবাহী স্টিমার থেকে লোকসান হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা। এরপরও নানাভাবে খোঁড়াযুক্তি দেয়ার চেষ্টা বিআইডব্লিউটিসির।
বিআইডব্লিউটিসির ঘাটের সরকারি মহাব্যবস্থাপক আবু আলম হাওলাদার বলেন, নানাভাবে ছলচাতুরি করে যাত্রীরা টিকিট না কেটে যাওয়ার জন্য।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, স্টিমারের তেল খরচ ও ভাড়ার পাশাপাশি মেরামতের নামে বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তাদের দুর্নীতিই লোকসানের মূল কারণ। এক্ষেত্রে প্রতিকারে দুর্নীতি দমন কমিশনকে পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়েছেন নৌ প্রতিমন্ত্রী।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি মহাসচিব মো. মোজ্জাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বেসরকারি লঞ্চগুলো একই রুটে যাতায়াতের ক্ষেত্রে যে পরিমাণ তেল প্রয়োজন হয়, সরকারিগুলোতে তার ডবল ব্যবহার করা হয়।
নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়ে গিয়েছে। দুদক এখন অনেক শক্তিশালী। যে কাউকে তারা তাদের আওতায় আনতে পারে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ঢাকা- বরিশাল- খুলনা নৌরুটে ৫টি ও চট্টগ্রাম- সন্দ্বীপ- হাতিয়া নৌ রুটে ৩টি জাহাজ চলছে বিআইডব্লিউটিসির।