প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী তাদের সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা দেখতে চাই, আমাদের দেশের জনগণ পুলিশের কাছ থেকে যথাযথ সেবা পাচ্ছে এবং এ লক্ষ্যে আমরা একটি চৌকস, পেশাদার ও জনবান্ধব পুলিশ সার্ভিস গড়ে তোলায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
শেখ হাসিনা আজ সকালে সারদায় ৩৫তম বিসিএস ব্যাচের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘মানুষ বিপদের সময় পুলিশের কাছে সাহায্যের জন্য আসে। তাই সেবা ও মানবিক আচরণের মাধ্যমে মানুষের আস্থা অর্জনে সচেষ্ট থাকবেন।’ বিশ্বব্যাপী অপরাধের ধরন দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নিত্যনতুন অপরাধ দমনে পুলিশ সদস্যদের আরও তৎপর বিশেষ করে সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে আরও দক্ষ হওয়ার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের অভিবাদন গ্রহণ করেন এবং কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী একাডেমির অতিথি ভবন অরুনিমায় পৌঁছালে তাঁকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়। পরে প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মহাপুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারী এবং একাডেমির প্রিন্সিপাল মো. নাজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের মধ্যে পদকও বিতরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী নতুন কর্মক্ষেত্রে নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে তাঁদের সমাজের নারী, শিশু ও প্রবীণদের প্রতি সংবেদনশীল আচরণ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূলে জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে জনবান্ধব পুলিশ গঠনে আপনাদের অগ্রপথিকের ভূমিকা পালন করতে হবে। আমার দৃঢ়বিশ্বাস, আপনারা দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণে নিয়োজিত থাকবেন।
দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে উন্নয়নকে টেকসই করতে পুলিশের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি, বাংলাদেশ পুলিশের নবীন কর্মকর্তারা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে প্রশিক্ষণের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ‘রূপকল্প-২০২১’ এবং ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার আইনশৃঙ্খলা খাতে বরাদ্দ করা অর্থকে বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করছে। শেখ হাসিনা জনগণের মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ‘দায়িত্ব পালনের সময় জনগণের মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।’
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, বিদেশি কূটনীতিক এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।