বরিশালে পাঁচ বছরের শিশুকে হত্যার দায় শিকার করেছে তার সৎ বাবা মিলন হাওলাদার। তিনি শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্টাফ কোয়ার্টারের একটি পরিত্যক্ত ভবনে নিয়ে শিশুকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে।
এরপর মুমূর্ষ অবস্থায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় পাঁচ বছর বয়সি শিশু আবির ইসলাম জিহাদের।
কোতয়ালী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) বিপ্লব মিস্ত্রি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় শিশুটির দাদি নাসিমা বেগম বাদী হয়ে সৎ বাবা মিলন হাওলাদারকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। হত্যার কারণ কি এখনো পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ২ মে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল নগরীর রূপাতলী মাওলানা ভাসানী সড়কে মামা আনোয়ার হোসেনের মামার বাড়ির সামনে শিশু আবির ইসলাম জিহাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। আবির নগরীর পলাশপুর এলাকার বাসিন্দা রিকশা চালক আল আমিনের ছেলে।
এসময় সেখান থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় আটক করা হয় অভিযুক্ত সৎ বাবা মিলন হাওলাদারকে। আটক মিলন বরিশাল নগরীর চৌমাথা বটতলা এলাকার শফিক হাওলাদারের ছেলে এবং পেশায় একজন মাহেন্দ্রা চালক।
আসামির স্বীকারক্তির বরাত দিয়ে কোতয়ালী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক বিপ্লব মিস্ত্রি জানান, ‘মা মরিয়ম বেগমের সাথে ঢাকায় থাকতো শিশু আবির ইসলাম জিহাদ। গত ১৮ এপ্রিল মায়ের সাথে বরিশালে আসে।
তিনি বলেন, ‘বিবাহ বিচ্ছেদের পরে মরিয়ম পরকীয়া করে বিয়ে করেন বটতলা এলাকার মিলনকে। গত ছয়মাস পূর্বে তারা কালেমা পড়ে বিয়ে করে বলে দাবি করেছে। বরিশালে এসে শিশু সন্তানসহ মিলনের সাথে নগরীর বিভিন্ন হোটেলে থাকতো।
সবশেষ গত ২৬ এপ্রিল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে আবাসিক হোটেল বায়জিদের ১১১ নম্বর রুম ভাড়া নেয়। গত ৩০ এপ্রিল সকালে শিশুটিকে নাস্তা করানোর কথা বলে মায়ের কাছ থেকে নিয়ে হোটেলের পেছনে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টারের ৫ নম্বর পরিত্যাক্ত বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় নিয়ে গলা টিপে ধরে এবং নির্মমভাবে মারধর করে মিলন।
এতে শিশুটিকে গুরুতর আহত এবং অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে হোটেলে ফিরে যায় মিলন। সেখানে তার মাকে জানায় হোটেলের সিঁড়ি থেকে নামার সময় পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে আবির। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে ভর্তি করে তার মা। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে শিশুটি।
পুলিশ পরিদর্শক বিপ্লব মিস্ত্রি বলেন, ‘এই ঘটনায় শিশুর দাবি একমাত্র মিলন হাওলাদারকেই আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। আটক মিলন হত্যার কারণ হিসেবে একেক সময় একেক কথা বলছে। তাকে এখনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ২ মে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।