18 C
Dhaka
ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
Bangla Online News Banglarmukh24.com
জাতীয়

বাল্যবিবাহে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ, বিশ্বে অষ্টম

বাংলাদেশে বাল্যবিয়ের প্রচলন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি এবং বিশ্বের মধ্যে অষ্টম সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। বুধবার (৩ মে) দুপুরে প্রকাশ করা ইউনিসেফের নতুন এক বিশ্লেষণ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

২০১৯ সালের বাংলাদেশ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের তথ্য ব্যবহার করে তৈরি করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৫১ শতাংশ তরুণীর বিয়ে হয়েছিল তাদের শৈশবে।

দেশটিতে বাল্যবিয়ের প্রচলন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি এবং বিশ্বের মধ্যে অষ্টম সর্বোচ্চ। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৪৫ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগে এবং ১ কোটি ৩ লাখ নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের বয়স ১৫ বছর হওয়ার আগে।

ইউনিসেফের বিশ্লেষণে বলা হয়, গত এক দশকে শিশুবিয়ে ধারাবাহিকভাবে কমা সত্ত্বেও সংঘাত, জলবায়ুজনিত অভিঘাত ও কোভিড-১৯ এর বিরূপ প্রভাবসহ একাধিক সংকট এক্ষেত্রে কষ্টার্জিত অর্জনগুলো নস্যাৎ করে দেওয়ার হুমকি তৈরি করেছে।

বাল্যবিবাহ নির্মূলের ক্ষেত্রে ধীর গতি সবচেয়ে বেশি সাব-সাহারান আফ্রিকায়। ওই অঞ্চলে শিশুবিয়ের অবসানে ২০০ বছরেরও বেশি সময় লাগবে। অগ্রগতি সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ায় এখনও প্রতি চারজন তরুণীর মধ্যে একজনের বিয়ে হচ্ছে তার ১৮ বছরের আগেই।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এ বিষয়ে বলেন, বিশ্ব একের পর সংকটে জর্জরিত, যা ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের আশা ও স্বপ্নকে চুরমার করে দিচ্ছে। বিশেষ করে যেসব মেয়েদের শিক্ষার্থী হিসেবে থাকা উচিত, তাদের বিয়ের কনে হয়ে স্বপ্ন ভাঙছে।

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সংকট, ক্রমবর্ধমান সশস্ত্র সংঘাত এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব পরিবারগুলোকে শিশুবিয়ের মতো মিথ্যা ধারণার আশ্রয় নিতে বাধ্য করছে।

শিশুদের পড়াশোনার করার ও সক্ষম জীবনের অধিকারী হওয়ার অধিকার যাতে সুরক্ষিত হয় তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের সাধ্য অনুযায়ী সবকিছু করতে হবে। বিশ্লেষণে অন্তর্ভুক্ত সর্বশেষ বৈশ্বিক হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী জীবিত প্রায় ৬৪ কোটি মেয়ে ও নারীর বিয়ে হয়েছে তাদের ছোটবেলায়।

প্রতি বছর ১ কোটি ২০ লাখ মেয়ের বিয়ে হয় তাদের ছোটবেলায়। পাঁচ বছর আগে এ বিষয়ে সর্বশেষ হিসাব প্রকাশের পর, এ পর্যন্ত ছোটবেলায় বিয়ে হয়ে যাওয়া তরুণীর সংখ্যা ২১ শতাংশ থেকে ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে।

তবে এই অগ্রগতি সত্ত্বেও ২০৩০ সালের মধ্যে শিশুবিয়ের অবসান করার যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা পূরণের জন্য বিশ্বব্যাপী ওই কমার গতি ২০ গুণ দ্রুততর হতে হবে।

শিশু বধূর সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে সাব-সাহারান আফ্রিকার অবস্থান দ্বিতীয় (২০ শতাংশ) এবং এই অঞ্চলে বর্তমানে যে গতিতে শিশুবিয়ের হার কমছে সেই গতিতে চলতে থাকলে শিশুবিয়ে পুরোপুরি বন্ধ করতে ২০০ বছরের বেশি লাগবে।

চলমান সংকটের পাশাপাশি দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি বিশ্বের বাকি অংশে প্রত্যাশিত হ্রাসের বিপরীতে এই অঞ্চলে শিশুবধূর সংখ্যা বাড়িয়ে দেবে বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।

লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলও পিছিয়ে পড়ছে এবং সেখানে বর্তমানের ধারা অব্যাহত থাকলে অঞ্চলভেদে শিশুবিয়ের দিক থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম অঞ্চলে পরিণত হবে। ক্রমাগত অগ্রগতির পর মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা এবং পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়াতেও অগ্রগতি স্থবির হয়ে পড়েছে।

বাল্যবিয়ের বৈশ্বিক হার কমে আসায় বড় ভুমিকা রাখছে দক্ষিণ এশিয়া এবং এই অঞ্চলে বর্তমানে যে গতিতে শিশুবিয়ে কমছে তাতে সেখানে শিশু বিয়ের পুরোপুরি অবসানে প্রায় ৫৫ বছর লাগতে পারে। তবে এই অঞ্চলে এখনও বিশ্বে মোট শিশুবধূর প্রায় অর্ধেকের (৪৫ শতাংশ) বসবাস।

যদিও সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ভারত এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, তবে তা সত্ত্বেও দেশটি এখনও বিশ্বের মোট শিশুবধূর এক-তৃতীয়াংশের আবাসস্থল।

সম্পর্কিত পোস্ট

দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতারের দায়িত্ব পেল পুলিশ

banglarmukh official

মেজর ডালিমকে নিয়ে প্রশ্ন, যে প্রতিক্রিয়া জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

banglarmukh official

নিজের জানাজার দাওয়াত দিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন

banglarmukh official

সেই মতিউরের আরও ১২৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ, দুদকের মামলা

banglarmukh official

মেট্রোরেলের সেবায় ভ্যাট অব্যাহতি

banglarmukh official

স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে ইসি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: সিইসি

banglarmukh official