বাংলা ফোক গানের সম্রাজ্ঞী মমতাজ। বর্তমানে তিনি সরকার দলীয় এমপি। রাজনীতির মঞ্চে তার অনেক ব্যস্ততা। তবুও গান গেয়ে চলেছেন নিয়মিতই।
বরেণ্য এই গায়িকার জন্মদিন আজ। ১৯৭৪ সালের ৫ মে মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মমতাজের পুরো নাম মমতাজ বেগম। বাবা মধু বয়াতিও গান করতেন। তার কাছ থেকেই গানে হাতেখড়ি। পরে মাতাল রাজ্জাক দেওয়ান এবং শেষে আবদুর রশীদ সরকারের কাছে গান শিখেছেন তিনি।
দেশে দেশে, পথে পথে লোক গান করে বেড়াতেন মমতাজ। ২০০০ সালে হানিফ সংকেতের আমন্ত্রণে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’-তে গান করতে আসেন তিনি। প্রথমে না করে দিলেও হানিফ সংকেত অনেক বুঝিয়ে তাকে রাজি করান।
মো. রফিকুজ্জামানের কথায় ও সোহেল আজিজের সুরে ইত্যাদিতে তিনি অবশেষে গাইলেন ‘রিটার্ন টিকিট হাতে লইয়া আইসাছি এই দুনিয়ায়/ টাইম হলে যাইতে হবে যাওয়া ছাড়া না উপায়’ গানটি।
সেই গান রাতারাতি পৌঁছে গেল কোটি কোটি শ্রোতার কাছে। আর মমতাজ জায়গা করে নিলেন সবার অন্তরে। দিনে দিনে তিনি হয়ে উঠলেন বাংলা লোক সঙ্গীতের সম্রাজ্ঞী।
দুই দশকেরও বেশি তার পেশাদারী সংগীত জীবন। এরমধ্যে রেকর্ড ৭০০টির বেশি একক অ্যালবাম প্রকাশ পেয়েছে তার। গেয়েছেন সিনেমাতেও। বৈচিত্রময় কণ্ঠের মমতাজ যেমন সহজ কথা ও সুরে ‘ফাইট্টা যায়’ গান গেয়ে দেশ মাতিয়েছেন তেমনি ‘মনপুরা’ ছবিতে ‘আগে যদি জানতাম রে বন্ধু’র মতো ব্যতিক্রমী ধাঁচের গান গেয়েও তুমুল প্রশংসিত হয়েছেন।
ফিতার ক্যাসেট থেকে সিডি এলো, সিডির দিন গিয়ে এলো ভিডিও দেখার যুগ। এই পরিবর্তনের স্রোতে অনেক বিখ্যাত-জনপ্রিয় শিল্পীই হারিয়ে গেছেন। কিন্তু মমতাজ রয়ে গেছেন স্বমহিমায় তার শ্রোতাদের মনের রানী হয়ে।
ক্যারিয়ারে বহু চড়াই উৎরাই তাকে পার হতে হয়েছে। মৌলবাদী হামলার মুখেও পড়তে হয়েছে তাকে। বহুবার বহু কনসার্ট থেকে গান না করেই ফিরে এসেছেন। নিরবে কেঁদেছেন অপমানে। তবে থেমে যাননি। সব যন্ত্রণাকে প্রেরণা করে চলতে চলতে মমতাজ আজ এদেশের কোটি মানুষের প্রিয় মানুষ। তিনি আজ মহান সংসদের একজন সম্মানিত সদস্যও।
গুণী এই কণ্ঠশিল্পীর জন্মদিনে বাংলার মুখ24.com এর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা রইলো।