খুলনা প্রতিনিধি//জান্নাতুল ফেরদৌস: প্রতিদিন হাজারো মানুষের পদচারণায় পার্কগুলোর ছিল হতচ্ছাড়া দশা। নগরীর মানুষকে বিনোদন দিতে নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে বিপন্ন হতে বসেছিল পার্কের গাছ ও ঘাস। শত শত মানুষের অতিউৎসাহে পুকুরের পানিও হয়ে যেত নোংরা। কিন্তু দুই মাসের লম্বা বিরতিতে পার্কগুলো যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। মানুষের পদচারণা না থাকায় সবুজ ঘাসে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। প্রতিটি গাছেই এসেছে মৌসুমের ফুল। গাছগুলো যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে। খুলনা মহানগরীর ঐতিহাসিক হাদিস পার্ক, জাতিসংঘ শিশু পার্কসহ বেশ কয়েকটি পার্ক ঘুরে এই দৃশ্য দেখা গেছে। খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ মার্চ থেকে হাদিস পার্কসহ নগরীর ৬টি পার্কে জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে পার্কগুলো বন্ধ রয়েছে। গত দুই মাস ধরে জনসমাগম না থাকায় প্রকৃতিতে নিজেদের রূপ মেলে ধরেছে পার্কের গাছপালা। সংশ্লিষ্টরা জানান, খুলনা মহানগরীতে বিনোদনের জায়গা নেই। কেসিসির নিজস্ব ৬টি পার্ক থাকলেও সেখানে বিনোদনের সুযোগ খুব কম। এর মধ্যে শুধু হাদিস পার্কেই একটু শান্তিতে দম ফেলানোর সুযোগ পান নগরবাসী। তাও মাসজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচির মাইকে দর্শনার্থীদের অবস্থা হয় তথৈবচ। অতিরিক্ত মানুষের হাঁটাহাঁটিতে পার্কে সবুজ ঘাস দেখাই যেত না। একই চিত্র ছিল নগরীর জাতিসংঘ পার্কেরও। প্রতিদিন শত শত মানুষের পদচারণায় পার্কের মাঠ হয়ে গিয়েছিল ন্যাড়া মাথার মতো। একই দৃশ্য ছিল হাদিস পার্ক, গোলকমনি পার্ক, নিরালা ও সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকা পার্ক এবং খালিশপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশু পার্কের। গতকাল জাতিসংঘ পার্ক ঘুরে দেখা গেছে, পুরাতন সেই দৃশ্য এখন আর নেই। জাতিসংঘ পার্কের পুরো মাঠই ছেয়ে গেছে সবুজ কার্পেটে। হাদিস পার্কের চিত্রও একই রকম। দর্শনার্থীদের উৎপাত না থাকায় পার্কের পুকুরের মাছগুলোও যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। পুকুরে আগের মতো পলিথিন, খাবারের প্যাকেট দেখা যায়নি। তবে দীর্ঘদিন ধরে পরিচর্যা না করায় জংলা গাছের পরিমাণ কিছুটা বেড়ে গেছে। কেসিসির বৈষয়িক কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান তালুকদার বাংলার মুখ ২৪.কম কে বলেন, দুই মাস বন্ধের পর পার্কগুলোর নতুন রূপ সবাইকে মুগ্ধ করেছে। কিভাবে পার্কের এই সবুজ রূপ ধরে রাখা যায়-সেই চেষ্টা করা হবে। আর ঈদের আগেই আগাছা পরিষ্কার করে আরও সাজিয়ে গুছিয়ে তোলা হবে।